SFI PRESS CONFERENCE

বিকল্প শিক্ষানীতির পক্ষে দেশজুড়ে গণভোটে এসএফআই

জাতীয়

SFI NEW EDUCATION POLICY DRAFT EDUCATION POLICY BENGALI NEWS

অতিমারির সুযোগে চালু হয়েছে এনইপি। শুরু হয়েছে শিক্ষাক্ষেত্রের ঢালাও বেসরকারীকরণ। তারফলে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সমাজের পিছিয়ে থাকা অংশের পড়ুয়ারা। তাঁরা বাধ্য হচ্ছেন আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে। এরই বিকল্প হিসেবে খসড়া শিক্ষানীতি আনার কাজ শুরু করল এসএফআই। একইসঙ্গে কর্পোরেট সংস্থা এবং আদানিদের মতো বিপুল ধনীদের করের আওতায় এনে বিনামূল্যে শিক্ষা ব্যবস্থার পক্ষে জনমত তৈরির কাজও করবে এসএফআই। দাবিগুলিকে সামনে রেখে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে নেওয়া হবে গণভোট। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন করে এমনটাই জানাল এসএফআই। 

এদিন এসএফআই’র কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির তরফে সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এসএফআই’র সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস এবং সর্বভারতীয় সভাপতি ভিপি শানু। সাংবাদিক বৈঠকে এসএফআই নেতৃবৃন্দ বলেন, কোভিড অতিমারির সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে ঢালাও বেসরকারীকরণের দিকে হেঁটেছে কেন্দ্রীয় সরকার। অতিমারির সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি বা এনইপি চালু করেছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। এনইপিকে সামনে রেখে শিক্ষাক্ষেত্রের বাজেট বরাদ্দ কমানো হয়েছে। জোর দেওয়া হয়েছে বেসরকারীকরণ, কেন্দ্রীকরণ এবং সাম্প্রদায়িক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ার উপর। স্বাভাবিক ভাবেই কোপ পড়ছে স্কলারশিপের উপর। এই স্কলারশিপের উপর নির্ভরশীল পড়ুয়াদের সিংহভাগ আদিবাসী, তপশিলি জাতি উপজাতি এবং ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত। 

এসএফআই বলে, স্কলারশিপ হ্রাস পাওয়া এবং স্কলারশিপ বন্ধ হওয়ায় এই পড়ুয়ারা নানবিধ অর্থনৈতিক এবং মানসিক চাপের মুখে পড়ছেন। একইসঙ্গে শিক্ষাক্ষেত্রে বাড়ছে জাতি বিদ্বেষের ঘটনাও। চলতি বছরের বাজেট অধিবেশনে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রকে স্বীকার করতে হয়েছে, ২০১৪ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে আইআইটি, আইআইএম, এনআইটি’র মতো কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১১২জন পড়ুয়া আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। এই পড়ুয়াদের মধ্যে ২৪ জন তপশিলী জাতি-উপজাতি এবং ৪১জন ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত। এক সপ্তাহের মধ্যে আইআইটি বম্বে’র ছাত্র দর্শন সোলাঙ্কি, আইআইটি মাদ্রাজের ছাত্র স্টিফেন সানি এবং এনআইটি কালিকটের ছাত্র নিধিন শর্মা আত্মহত্যা করেছেন। এই তিনজনই এসসি, এসটি এবং ওবিসি তালিকাভুক্ত। 

এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে বিকল্প খসড়া শিক্ষানীতি আনার উদ্যোগ নিয়েছে এসএফআই। এসএফআই নেতৃবৃন্দ এদিন বলেছেন, এনইপি চালুর আগে কেন্দ্রের তরফে কোনও পক্ষের মত গ্রহণ করা হয়নি। কিন্তু এসএফআই সমাজের সমস্ত স্তরের মানুষের কাছে এই খসড়া শিক্ষানীতি পৌঁছে দিতে চায়, তাঁদের মতামত গ্রহণ করতে চায়। মতামত পাঠানোর শেষ তারিখ ৩১ মার্চ। 

এর পাশাপাশি অক্সফ্যাম ইন্ডিয়ার বার্ষিক রিপোর্ট তুলে ধরে এসএফআই’র তরফে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের তরফে সারা বছর স্কুল শিক্ষা ও সাক্ষরতা প্রসারে যেই পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হয়, দেশের ৯৮ জন ধনকুবেরদের মোট সম্পদের উপর ১ শতাংশ হারে কর বসালে সেই টাকা উঠে আসবে। আর করের হার ৪ শতাংশে নিয়ে যেতে পারলে সরকার ১৭ বছর দেশজুড়ে মিড ডে মিল প্রকল্প চালানোর মতো টাকা সংগ্রহ করতে পারবে। একই পরিমাণ অর্থে ৬ বছর সমগ্র শিক্ষা প্রকল্প ৬ বছর চালানো সম্ভব। তাই এসএফআই’র তরফে ‘ ট্যাক্স কর্পোরেট- ফ্রি এডুকেশন’ বা ‘কর্পোরেটকে করের আওতায় এনে বিনামূল্যে শিক্ষা প্রদান কর’- স্লোগানকে সামনে রেখে দেশজুড়ে প্রচার চালানো হবে। 

এছাড়া এসএফআই’র তরফে এনইপি এবং খসড়া শিক্ষানীতি নিয়ে দেশের ক্যাম্পাসগুলিতে গণভোটের আয়োজন করা হবে। প্রেসিডেন্সি, যাদবপুরের মতো এরাজ্যের ক্যাম্পাসগুলিতেও এই দাবিতে গণভোট নেওয়া হবে। 

এছাড়া ক্যাম্পাসে গণতন্ত্র ফেরানো, ২৩ মার্চ অর্থাৎ ভগৎ সিং, রাজগুরু এবং সুখদেবের শহীদ দিবসে আরএসএস’র বিভাজনের রাজনীতি বিরোধী প্রচার, গণপরিবহনে ছাত্রদের জন্য ছাড়ের মতো দাবিও এদিন এসএফআই’র তরফে তুলে ধরা হয়। এর পাশাপাশি এসএফআই’র তরফে উত্তরাখন্ডের যোশীমঠের আক্রান্ত মানুষের প্রতিও সহমর্মিতা জানানো হয়। ময়ূখ বিশ্বাস জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই উত্তরাখন্ডের এসএফআই ইউনিটগুলি যোশীমঠে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন। আগামী সপ্তাহে এসএফআই’র এক প্রতিনিধি দল ত্রাণ নিয়ে যোশীমঠে যাবে। 

Comments :0

Login to leave a comment