পশ্চিমবঙ্গে ‘মন্থা‘-র প্রভাব তেমন ভাবে না পড়লেও, ঘূর্ণিঝড়ের লেজের ধাক্কায় বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের বহু এলাকা। প্রভাব পড়েছে সিকিমেও। সিকিমের লাচুংয়ে তুষারপাত হয়েছে। 
ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টির জেরে  কার্যত স্তব্ধ হয়ে পড়েছে জলপাইগুড়ি। পাশাপাশি পাশের রাজ্য সিকিমেও বৃষ্টির জেরে নেমেছে পারদ। স্থানীয় মানুষ ও পর্যটকদের কথা ভেবে বন্ধ থাকছে পাহাড়ের বিভিন্ন পার্ক ও অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস। অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকছে সন্দাকফু যাওয়ার পারমিট।
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আগে থেকেই স্তব্ধ ছিল উত্তরবঙ্গ। এবার তার ওপর কোপ বসাতে চলেছে মন্থা‘। 
আবহাওয়া বিভাগ ৩১ অক্টোবর থেকে লাল সতর্কতা জারি করেছিল। তবে ৩০ তারিখ রাত থেকেই শুরু হয়ে যায় তীব্র বৃষ্টি। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হওয়া অবিরাম বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় জেলা শহর থেকে ডুয়ার্সের গ্রামীণ এলাকার পর্যন্ত জনজীবন কার্যত থমকে গেছে।
জলপাইগুড়ি আঞ্চলিক আবহাওয়া বিভাগ সূত্রে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় বানারহাটে ১০৩.৫ মিলিলিটার, ময়নাগুড়িতে ৯৯.২ মিলিলিটার, আলিপুরদুয়ারের বক্সাদুয়ারে ৮২.৪ মিলিলিটার, সেবকে ৭৫.০মিলিলিটার, এবং দার্জিলিঙে ৬৪.৮ মিলিলিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। 
শুধুমাত্র জলপাইগুড়িতে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৪১.৯০ মিলিমিটার। তিস্তা নদীর পাড়ের খালপাড়া, পানকৌরা, বেলাকোবা, বাজেলা, পানডাঙা এলাকায় ঘরবাড়ি ও চাষের জমি জলে তলিয়ে গেছে। সদর ব্লকের কালীপাড়া, রাখালদাসপাড়া, কেলাবাড়ি ও দেউনাপাড়া অঞ্চলে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। 
ডুয়ার্সের মাল, নাগরাকাটা, বানারহাট, সামসিং, মাদারিহাট ও বক্সা এলাকায় চা-বাগান ও কৃষিজমি প্লাবিত। শহরের পান্ডাপাড়া, মহামায়াপাড়া, মোহন্তপাড়া, কদমতলা ও কলেজপাড়া সহ একাধিক নিচু এলাকায় জল জমে রাস্তাঘাট জলমগ্ন হয়েছে। নিকাশি ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ায় বহু বাড়ির ভেতরে জল ঢুকে পড়েছে। 
অপরদিকে, সিকিম ও ভুটান সীমান্ত অঞ্চল জুড়ে পাহাড়ে ভারী বৃষ্টির কারণে তিস্তা, তোর্সা, জলঢাকা, রায়ডাক ও ধুপঝোরা নদীগুলিতে জলস্তর দ্রুত বাড়ছে। তার ফলে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলার সমতল অংশে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে সাধারণ মানুষকে ঘরে থাকতে ও বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে আবেদন জানানো হয়েছে। 
জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এডিআরএফ) ও সিভিল ডিফেন্স দলকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তিস্তা ও তোর্সা নদীর পাড়ে নজরদারি চলছে। জলপাইগুড়ি শহরের প্রশাসনিক ভবনে ও ময়নাগুড়ি ব্লকে কন্ট্রোল রুম চালু হয়েছে। প্রয়োজনে নদী পাড়ের মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হবে।
পাশাপাশি, উত্তরকন্যায় বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরকে ২৪ ঘন্টা সজাগ থাকার কোথা ও বলা হয়েছে।
Rain Jalpaiguri
মন্থা-য় বিপর্যস্ত জলপাইগুড়ি, প্লাবিত চাষের জমি, চা-বাগান
 
                                    
                                
                                    ×
                                    ![]() 
                                
                                                         
                                         
                                     
                                     
                                     
                                     
                                    
Comments :0