Dengue Bankura

বাঁকুড়ায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ৭৩৯ , মৃত দুই

রাজ্য জেলা

ডেঙ্গুর ভয়াবহ আক্রমণে আক্রান্ত বাঁকুড়া জেলার একাধিক গ্রাম। এর মধ্যে সব বেশি ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে ওন্দা থানার পুনিশোল গ্রামে। জেলায় এই মুহুর্তে ৭৩৯জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রয়েছেন। তার মধ্যে পুনিশোল গ্রামেই ৩০০’র অধিক। সরকারি হিসাব মতো এই গ্রামে দুজন মারা গেলেও বেসরকারি মতে মৃতের সংখ্যা আরও বেশি। বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার ডাঃ অনর্ব গোস্বামী জানান, বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৯জন ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা চলছে। এঁদের মধ্যে দুজন মারা গেছেন। তাঁদের একজনের নাম চিত্তরঞ্জন পাজারু। বাড়ি ইন্দপুরে। অন্যজনের ওন্দার পুনিশোলে। কিন্তু সেই মৃত্যুটি নিয়ে কিছু পরীক্ষা নিরিক্ষার পর বলা যাবে ডেঙ্গুতে মৃত্যু কিনা। বাকি যাঁরা চিকিৎসার জন্য আছেন তাঁদের জরুরী ভিত্তিতে চিকিৎসা চলছে। 
ঘটনা হল ওন্দা থানার পুনিশোল গ্রামে এবছর আকস্মিকভাবেই গত মাসের ৩০তারিখ থেকে ডেঙ্গুতে মানুষ আক্রান্ত হতে থাকেন। ইতিমধ্যে হাজেরা খাতুন নামে এক যুবতিও মারা যায়। মারা যান আরও কয়েকজন। এলাকার মানুষজন জানান, প্রবল জ্বরে ভুগতে থাকেন বহু মানুষ। ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে খবর দেওয়ার পর চারদিন স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকরা গ্রামে এসে রোগীদের রক্ত পরীক্ষা করেন। ৭৮জনের শরীরে ডেঙ্গু ধরা পড়েছে। এই মুহূর্তে কোন স্বাস্থ্য শিবির গ্রামে নেই। মানুষজন আতঙ্কিত। পুনিশোল গ্রামের পশ্চিম দক্ষিন পাড়া, মোল্লা পাড়া, মন্ডলপাড়া, কেশবপুর, জিড়রি পাড়ায় এই ডেঙ্গু ছড়িয়ে গেছে। গ্রামের বেশিরভাগ মানুষই একেবারে খেটে খাওয়া। সকাল থেকেই তাঁরা সাইকেল নিয়ে টিন, লোহাভাঙ্গা, পুরোনো খবরের কাগজ সংগ্রহ করতে ২০-২৫ কিলোমিটার চলে যান। সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরেন। গাছ কাটা, বিদ্যুতের তার পড়ে যাওয়া অংশকে পরিস্কার করা সহ দুরহ কায়িক পরিশ্রমের কাজ করে তাঁদের জীবন চলে। এই রোগে আক্রান্ত হয়ে বেশিরভাগ মানুষই ঘর থেকে বের হতে পারছেননা। একদিকে বাড়ির মানুষজনের প্রবল জ্বর, অন্যদিকে রোজগার বন্ধ। একটা গভীর সংকটের মধ্যে দিন কাটছে পুনিশোলের মানুষজনের। দেখা যাচ্ছে যে জমা জল থেকেই এই রোগের উৎপত্তি। পুনিশোল গ্রামে কোন নালার ব্যবস্থা নেই। বাম আমলে কেশবপুর এলাকায় যে ড্রেনটি হয়েছিল তার সংস্কার না করায় সেটি বুজে গেছে। বেশিরভাগ বাড়িতেই জল জমে আছে। আর পানীয় জলেরও কল নেই বেশিরভাগ পাড়াতেই। পাইপ দিয়ে জল ধরতে হয় মানুষজনকে। সেই জল জমে থাকছে সেখানেই। এর মাঝেই বাস করতে হয় মানুষকে। বৃহস্পতিবারও গ্রামে গিয়ে দেখা গেল একটা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে মানুষের মধ্যে। প্রায় প্রতি বাড়িতেই জ্বর। জল সরানোর জন্য পঞ্চায়েতকে বারে বারে জানানো হলেও কোন কাজ হয়নি। তার খেসারত দিতে হচ্ছে গরীব খেটে খাওয়া গ্রামের মানুষজনকে।

Comments :0

Login to leave a comment