আগরতলা টাউন হলে ত্রিপুরা সিআইটিইউ রাজ্য সম্মেলন শুরু হয়েছে সোমবার। চলবে মঙ্গলবার পর্যন্ত। সমাবেশে ব্যাঘাত করার জন্য রেল স্টেশন থেকে আগরতলা আসার সবগাড়ি আটকে দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও হাজার হাজর জেদি মানুষ ৮ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে পৌঁছালেন সমাবেশ স্থলে।
সমাবেশে বক্তব্য রেখেছেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও প্রবীণ সিপিআই(এম) নেতা মানিক সরকার, সিপিআই(এম) ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী, সিআইটিইউ সাধারণ সম্পাদক তপন সেন, সিআইটিইউ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি অনাদি সাহু সহ ত্রিপুরায় সিআইটিইউ নেতৃবৃন্দ।
জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেন, বড় মাঠ চাওয়া হয়েছিল। আস্তাবল ময়দান বা বিবেকানন্দ ময়দানে হতে পারত। কিন্তু যখনই টের পেল সমাবেশ হবে মেলা লাগিয়ে দিল কয়েকশো কোটি টাকা মেলা চালু করল বিজেপি সরকার। আসল কথা হচ্ছে এই সরকার ভীত, সন্ত্রস্ত। সে কারণে বিরোধী দলকে, সিআইটিইউ’র মতো শ্রমিক সংগঠনকে আটকাতে উঠে পড়ে নেমেছেন। এখানে এসেছেন বাগিচা শ্রমিক, রাবার শ্রমিক, অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক। তাঁরা অন্যায্য দাবি করছেন না। শ্রমের বিনিময়ে মজুরি চাইছেন।
চৌধুরী বলেন, যুবকদের একাংশকে প্রলোভন দেখিয়ে সিপিআই(এম), ট্রেড ইউনিয়নের শত শত দপ্তরের ওপর হামলা হয়েছে। সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল ওই বেকার, গরিব যুবকদের ব্যবহার করে। শত শত মানুষের ঘরবাড়ি পুড়িয়েছে, সম্পদ লুট করেছে, অটো শ্রমিক, আশা কর্মী, প্রকল্প কর্মীদের জীবিকা খতম করেছে। কিন্তু সেই যুবকরাও আজ বুঝছেন যে ভুল হয়েছে। বিজেপি’র প্রলোভনে নেমেছিলেন, কাজ পাননি। এখানে কিছু হয়নি। কাজ পাননি যুবকরা। কিছু যা থাকবে নাম ভাঁড়িয়ে অন্য রাজ্যের কয়েকজনকে কাজ দেওয়া হবে। তার বিরুদ্ধে মানুষ ফুঁসছেন। আমাদের মিছিল লম্বা হচ্ছে। সিআইটিইউ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি অনাদি সাহু বলেছেন, ডবল ইঞ্জিন সরকারের কথা শুনেছিলাম। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি এই প্রচার করে। কেন্দ্র ও রাজ্যে বিজেপি সরকার থাকলে মানুষ দুধেভাতে থাকবে। সোনার বাংলা করবে। আর ত্রিপুরায় এই প্রচার করেছে। আজকে সাত বছর ত্রিপুরায় ডবল ইঞ্জিন সরকার। গোটা রাজ্যে বেকার সমস্যা তীব্রতর হয়েছে। কৃষকের ফসলের দাম, একশো দিনের কাজ, কর্মসংস্থান সবই তীব্র সমস্যায় রয়েছে। দেশে মোদী সরকার বলেছিল ২ কোটি চাকরি। বলেছিল কালো টাকা উদ্ধার করে ১৫ লক্ষ টাকা সব পরিবারে দেওয়া হবে। আর আজকে বিজেপি-আরএসএস সরকার ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে সারা দেশে।
সিআইটিইউ সাধারণ সম্পাদক তপন সেন বলেছেন, ত্রিপুরায় বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে বেঁচে থাকার বুনিয়াদি অধিকার, রোজগারের জন্য লড়াইয়ের অধিকারের ভিত তৈরি হয়েছিল। সেসব শেষ করে দিচ্ছে। তা না করলে লুটপাটের রাজত্ব চলতে পারে। একদিকে দেশটাকে বেচে দিচ্ছে সাম্রাজ্যবাদের কাছে। আরেকদিকে লুটপাট করে পকেট ভরাচ্ছে। লক্ষ্য একটাই, কর্পোরেটদের লুটপাটের ব্যবস্থা পাকা করে দাও। ভারতে এই বিপদের কথা সামনে নিয়ে আসছেন বামপন্থীরা। নিয়ে আসছে সিআইটিইউ’র মতো শ্রমিক সংগঠন। খনি, বাগিচা চাষে আইন করা হয়েছে। পুঁজিপতিদের নামমাত্র ফাইন দিয়ে আইন ভাঙার সুযোগ করে দেওয়া হলো। জেলে পাঠানোর রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হলো। মানে পরিষ্কার, আইন ভেঙে আরও বেশি লুটপাট চালানোর অধিকার দেওয়া। বিজেপি সরকারের প্রধান কাজ কর্পোরেট লুটের আইনি অনুমোদন করে দেওয়া।
CITU TRIPURA
গাড়ি বন্ধ, ত্রিপুরায় সিআইটিইউ রাজ্য সম্মেলনে জেদের সমাবেশ
×
Comments :0