BRIGADE

ব্রিগেডের সমর্থনে অর্থ ও চাল সংগ্রহ

জেলা ব্রিগেড

"দেশ বাঁচাতে- রাজ্যে বদল আনতে, বৃহত্তর সংগ্রাম গড়ে তুলতে শ্রমজীবী মানুষের ডাকে ব্রিগেড চলুন"- টোটোয় বাধা মাইকে চলছে এই প্রচার। ব্রিগেডের বার্তা নিয়ে সিআইটিইউ কর্মীরা পৌঁছে যাচ্ছেন চা বাগানের শ্রমিক বস্তি, কোল্ড স্টোরেজের শ্রমিক-কর্মচারী, সিকিউরিটি গার্ড, টোটো চালক, হকার থেকে শুরু করে বাড়িতে, বাড়িতে, দোকানে দোকানে, দোকানে। পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ব্রিগেড সমাবেশের বার্তা। সেই সঙ্গে চলছে অর্থ সংগ্রহ। প্রতিদিনই জলপাইগুড়ি শহর এবং সংলগ্ন এলাকায় চলছে এই প্রচার। মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জলপাইগুড়ি শহরের ২২ ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব অরবিন্দ নগর, মাসকলাইবাড়ি, পবিত্র পাড়া, বয়েলখানা সংলগ্ন এলাকায় ব্রিগেড সংগ্রহের প্রচার এবং অর্থ সংগ্রহ কর্মসূচি চলে। 
২০ এপ্রিল শ্রমিক, কৃষক, খেতমজুর এবং বস্তি উন্নয়ন সমিতির ডাকা ব্রিগেড সমাবেশের মূল দাবি, শ্রমকোড বাতিল, শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি, চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি দ্রুত চালু, কৃষকের ফসলের ন্যায্য দাম, জল , জঙ্গল জমির অধিকার সুরক্ষিত করা, বস্তিবাসীর জমির পাট্টা, বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান। সেই সঙ্গে জলপাইগুড়ি পৌরসভায় ভেঙে পড়া নাগরিক পরিষেবার বিরুদ্ধে ১১ এপ্রিল পৌরসভা অভিযানে নাগরিকদের সামিল হওয়ার আবেদন জানানো হয়। প্রতিশ্রুতি নয়, আম্রুত প্রকল্পের পানীয় জল বিনা পয়সায় দ্রুত বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া, বেহাল রাস্তা দ্রুত সংস্কার, বন্ধ হয়ে থাকা বয়স্ক নাগরিকদের বৃদ্ধভাতা, বিধবাভাতা দ্রুত চালু, আবাস যোজনার ঘরের বকেয়া কিস্তির টাকা মিটিয়ে দেওয়ার দাবিতে এই পৌরসভা অভিযান হতে চলেছে আগামী ৯ এপ্রিল।  
ব্রিগেড সমাবেশের জন্য ইতিমধ্যেই সারা রাজ্যের সঙ্গে জলপাইগুড়িতে প্রতিদিনই নতুন নতুন নাম যুক্ত করতে হচ্ছে শ্রমিক নেতৃত্বদের। সাধারণ, শ্রমজীবী, খেটে খাওয়া মানুষের বৃহত্তর সমাবেশ হতে চলেছে এই ব্রিগেড সমাবেশ। এদিন স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানুষ অর্থ সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন। ছিলেন শুভাশিস সরকার, কৃষ্ণ সেন, কান্তি রাহা, নীলাঞ্জন নিয়োগী, বাপ্পা সরকার, সীতেষ চক্রবর্তী, দুলাল রায়, মৃণাল রায়, অমিত দাস প্রমূখ।

ব্রিগেডের সমর্থনে এদিন কালনা দু নম্বর ব্লকের কল্যাণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কুশোডাঙ্গা গ্রামের বারিকপাড়ায় প্রচার অভিযান চালানো হয়। পাশাপাশি খেতমজুর সমৃদ্ধ এই ছোট্ট পাড়ায়  চলে বাড়ি বাড়ি অর্থ ও চাল সংগ্রহ। প্রচার, অর্থ ও চাল সংগ্রহে ব্যাপক সাড়া মেলে। এই ক্ষেতমজুর সমৃদ্ধ পাড়ায় চাল ও অর্থ সংগ্রহ হয় যথাক্রমে ৪০ কেজি এবং ৩৬৫ টাকা। এই এলাকা সম্পূর্ণ কৃষি প্রধান এলাকা হওয়াই এখানকার মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম না পেয়ে কৃষিতে কৃষকরা আর ভরসা পাচ্ছেন না। স্বাভাবিক কারণেই কৃষকরা চাষ কমিয়ে দেওয়ার ফলে কাজের ক্ষেত্র সংকুচিত হয়েছে ক্ষেতমজুরদের। এলাকায় তেমনভাবে কাজ জুটছে না। ফলে পেটের টানে অনেককেই পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে ভিন রাজ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে চলে যাচ্ছেন। বহু পরিযায়ী শ্রমিককে ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। তাই কৃষকদের ফসলের ন্যায্য দাম, বাজার অনুযায়ী শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, সকলের জন্য সামাজিক সুরক্ষা, ১০০ দিনের কাজকে ২০০দিন করা ও ৬০০ টাকা মজুরি প্রদানের কথা উঠে আসে এই ক্ষেতমজুর পাড়ায়।

Comments :0

Login to leave a comment