অনিল কুন্ডু
কুলতলি ও জম্মু কাশ্মীর। এই দুই জায়গায় বসবাসকারী দুই পরিবারের মেলবন্ধন ঘটালো হ্যাম রেডিও। খুশির আনন্দ এখন দুই পরিবারে। প্রায় ১৫ বছর পর বুধবার মায়ের সঙ্গে কথা বললেন রুবিনা বেগম (২৮)। এই দুই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিতে পেরে খুশি হ্যাম রেডিও’র ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের সভাপতি সুবীর দত্ত ও সম্পাদক অম্বরীশ নাগ বিশ্বাস।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, চাচা’র সঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরে বেড়াতে গিয়ে ছিলেন কুলতলির দেউলবাড়ি দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা রুবিনা। বছর ১৫ আগের ঘটনা। সেখানে স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মী রিয়াদ আহমেদ’র সঙ্গে তাঁর বিবাহ হয়। ওই পরিবারের পছন্দ হওয়ায় চাচাও প্রথমে নিমরাজি থাকলেও পরে বিবাহে সম্মতি দেন। তারপর চাচা ফিরে আসেন। তারপর থেকে আর বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি রুবিনা বেগম ও তাঁর শ্বশুড় বাড়ির পরিবার।মাঝখানে ১৫ বছর কেটে গিয়েছে। তাঁর ৩ সন্তান। মায়ের সঙ্গে কথা না বলতে পারায় সম্প্রতি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন রুবিনা। সেখানে তাঁর চিকিৎসাও করা হয়। তাঁর শ্বশুড় বাড়ির তরফে পরিবারের সন্ধান করতে জাতীয় মহিলা কমিশনের কাছে ২ মে আবেদন জানানো হয়। বারুইপুর পুলিশ জেলার তরফে হ্যাম রেডিও’র সাহায্য নেওয়া হয়।
অম্বরীশ নাগ বিশ্বাস বুধবার জানান, পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকা জম্মু ও কাশ্মীরের বারামুল্লা গ্রাম। ওখানে ওই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। রুবিনার উর্দুতে কথা বলছিল। ভাষা বোঝার জন্য উর্দু ভাষিকে কনফারেন্স কলে নেওয়া হয়। মনে করে বাড়ির ঠিকানাও বলতে পারছিল না। প্রাথমক বিদ্যালয়ের নাম বলতে পেরে ছিল। দেউলবাড়ি অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছে। সেই মতো ওই স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করে কুলতলি থানার পুলিশের সহায়তায় বাড়ি খুঁজে বের করা হয়। এরপর রুবিনা বেগমের সঙ্গে তাঁর বাপের বাড়ির পরিবারের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলানো হয়। প্রায় ১৫ বছর পর মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে পেরে খুশি হারানি শেখ। বৃহস্পতিবার জম্মু ও কাশ্মীরে মেয়ের কাছে রওনা দেবেন তিনি। এই দুই পরিবারে এখন খুশির পরিবেশ। খুশি হ্যাম রেডিও। ক্লাবের সম্পাদকের কথায়, পুলিশের সহযোগিতা নিয়েই রুবিনার পরিবারকে খুঁজে বের করা সম্ভব হয়েছে।
Comments :0