মিশন হেক্সা। অর্থাৎ ষষ্ঠবার বিশ্বকাপ জেতার লক্ষ্য নিয়ে ভারতের মাটিতে পা রেখেছিল অস্ট্রেলিয়া। তাঁদের যাত্রাটা কিন্তু মসৃণভাবে এগয়নি। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে স্টিভ ওয়ার অস্ট্রেলিয়ার মতোই। শেষঅবধি ওয়ার দল সেবার বিশ্বকাপ জিতেছিল। এবার প্রথম দু’ম্যাচে হারে অস্ট্রেলিয়া। আফগানিস্তান, নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে কষ্টার্জিত জয়। সবকিছুর পর টানা আট ম্যাচ জিতে অবশেষে ফাইনালে তাঁরা। জিততে পারলে রেকর্ড সংখ্যক ছ’বারের চ্যাম্পিয়ন হবে অজিরা। ভারত, ওয়েস্ট ইন্ডিজের থেকে চারধাপ এগিয়ে যাবে।
রক্তের স্বাদ পেয়ে গিয়েছে তাঁরা। কথিত রয়েছে নকআউট ম্যাচে অতি ভয়ঙ্কর অস্ট্রেলিয়া। হারার আগে তাঁরা হারে না। যে কোনও পরিস্থিতি থেকে ম্যাচ বের করতে সিদ্ধহস্ত। এই তো ক’দিন আগে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি বলেছিলেন, অপ্রতিরোধ্য ভারতকে টক্কর দিতে পারে অস্ট্রেলিয়া। চেন্নাইতেও প্রথম ম্যাচে ভারতকে যথেষ্ট বেগ দিয়েছিল প্যাট কামিন্সের দল। ফাইনালেও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সহজ হবে না ভারতের পক্ষে হলফ করেই বলে দেওয়া যায়। ২০১৫ চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া দলের অনেকেই এই দলে রয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা তাঁদের মূল চাবিকাঠি। ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের হৃদয় ভাঙার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে অজিরা। সাংবাদিক সম্মেলনে এসে হুঙ্কার দিলেন কামিন্স। বললেন, ‘ একলক্ষ ভারতীয় অনুরাগী দলের হয়ে চিৎকার করবে। দুর্ধর্ষ পরিবেশ থাকবে। আমাদের সমর্থন খুবই কম থাকবে। তবে ভারতীয় সমর্থকদের চুপ করিয়ে দেওয়াই আমাদের প্রধান লক্ষ্য থাকবে।’ এইসব বললেই কামিন্স কিন্তু বিপক্ষকে সমীহ করার কথাও জানালেন, ‘ভারত খুবই ভাল ক্রিকেট খেলছে। গোটা প্রতিযোগিতায় একমাত্র দল হিসেবে অপরাজিত। তবে আমরা নিজেদের খেলাটা খেলতে পারলে ওদের একটা ধাক্কা দিতে পারব। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের বিরুদ্ধে আমরা সাফল্যের সঙ্গে খেলেছি। আশাকরি উপভোগ্য ফাইনাল হবে।’
রোহিত শর্মা রান করেছেন পাঁচশোর উপর। বিরাটের সংগ্রহ ৭১১। রোহিত শুরুতে ঝড় তুলছেন। কোহলি একদিক ধরে রেখে, বাকিদের স্বাধীনভাবে খেলার সুযোগ করে দিচ্ছেন। তাতেই ভারত প্রতি ম্যাচে পার করেছে তিনশোর উপর। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া এই দু’জনের জন্য আলাদা করে পরিকল্পনা করছে না। ইঙ্গিত কামিন্সের। পুরো দলটাকে নিয়েই ভাবছেন তাঁরা। তবে ভয় পাচ্ছেন সামিকে। ব্যাখা করলেন অজি অধিনায়ক, ‘ ভারতের সব ক্রিকেটারই প্রতি বিভাগে দুরন্ত খেলেছেন। কিন্তু একজনের নাম বিশেষ করে বলতেই হবে, তিনি সামি। শুরু থেকে বিশ্বকাপে খেলেনি। আগমনের পর থেকেই জাত চিনিয়েছ। বলতে অসুবিধে নেই আমাদের চিন্তার কারণ ভারতের পেস ব্যাটারি।’
এদিন মাঠে এসে বাইশ গজ পর্যবেক্ষণ করেন তিনি। পিচের চরিত্র দেখে খুশি তিনি। অস্ট্রেলিয়ার সার্পোট স্টাফরাও উইকেট নিয়ে অভিযোগ করেনি। ঐচ্ছিক অনুশীলনে অস্ট্রেলিয়ার ছ’সাত জন মতো ক্রিকেটার এসেছিলেন। রুদ্ধদ্বার প্র্যাকটিস ছিল শনিবারও। কারা এসেছিলেন আমেদাবাদ স্টেডিয়ামের ছ’তলা ছাদের উপর থেকে দাঁড়িয়ে বোঝা যায়নি। একমাত্র ক্যামেরুন গ্রিনকে ছাড়া (তাঁকে বোলিং করতে দেখা গিয়েছিল)। তবে যারা উপস্থিত ছিলেন তাঁরা প্রত্যেকেই আমেদাবাদের সূর্যের তাপে গা ঘামিয়েছেন। মূলত জোরে বোলারদের খেলার দিকে বিশেষ জোর দিলেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটাররা। কারণ, প্রথমে ব্যাট করতে হলে ভারতীয় পেসারদের খেলেই বোর্ডে বড় রান তুলতে হবে। রান তাড়ায় নামতে হলে একই কাজ করতে হবে ওয়ার্নার, মিচেল মার্শরা। যা খবর, সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে যে একাদশ খেলিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ফাইনালে সেই দলই খেলার সম্ভাবনা।
সব মিলিয়ে যা দাঁড়ালো, অস্ট্রেলিয়া ০৩’য়ের পুনরাবৃত্তি চাইছে তেইশে।
2003 vs 2023
০৩’য়ের পুনরাবৃত্তি তেইশেও চায় অস্ট্রেলিয়া
×
Comments :0