অনিন্দ্য হাজরা
আমতলা থেকে বারুইপুরের পথে রওনা হতে প্রায় বিকেল। আমতলা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বৃহস্পতিবার শুরু হলো ইনসাফ যাত্রার দ্বিতীয় পর্ব। বিকেল থেকে সন্ধ্যে, রাস্তায় আলো অন্ধকারের মধ্যেই ছোট বড় জটলা।
এদিন সকালেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরে শহীদ কমরেড বিদ্যুৎ মণ্ডলের গ্রামে গিয়েছে ইনসাফ যাত্রা। কোম্পানী পুকুরে কমরেড বিদ্যুৎ মন্ডল’র স্মৃতিতে তৈরি শহীদ বেদীতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান মীনাক্ষী মুখার্জি। তারপর বারুইপুর পর্যন্ত প্রায় ১৯ কিলোমিটার পথ হেঁটেছে ইনসাফ যাত্রা।
কোচবিহার থেকে শুরু এই পদযাত্রা ডিওয়াইএফআই’র ডাকে ৪৯ দিন ধরে চলছে। শুক্রবার ৫০তম দিনে যাদবপুরে হবে সমাবেশ। প্রচার চলেছে ৭ জানুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশের।
বারুইপুরের পথে গোবিন্দপুর। এখানেই গ্রাম পঞ্চায়েতে ৪ আসনে জয়ী বামপন্থীরা। জয়ী প্রার্থীদের সম্বর্ধনা দিল ইনসাফ যাত্রা। ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি বললেন, ‘‘মানুষ ভোট দিতে পারলে হারবে, তাই মানুষকে ভোট দিতে দেওয়া হয় না। আরও বেশি জনাতকে সমবেত করে ভোট লুটের অন্যায়ের মোকাবিলা করতে হবে।’’
আলো পড়ে আসছে। প্রায় অন্ধকারের মধ্যে গ্রামের ভেতর দিয়ে চলেছে ইনসাফ যাত্রা। কিন্তু একটু বড় মোড় হলেই দেখা গিয়েছে স্থানীয়দের দাঁড়িয়ে থাকতে। তার মধ্যে রয়েছেন মহিলারা। রয়েছে যুব অংশ।
লড়াইয়ে সংহতি। আমতলা থেকে বারুইপুরের পথে।
মোড়ে মোড়ে দেখা গিয়েছে ইনসাফ যাত্রীদের স্বাগত জানাতে মোবাইলে ফ্ল্যাশলাইট জ্বেলে অপেক্ষা করছে গ্রামের যুবরা। এক জায়গায় বাজি ফাটানোর শব্দ তুমুল। জানা গেল, ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনালের জন্য কেনা হয়েছিল বাজি। ভারত হেরে গিয়েছে। বাজি ফাটানো হয়নি। আনন্দ করার মতো মাঝে কিছু পাওয়াও যায়নি। সেই বাজি ফাটল এবার ইনসাফ যাত্রা পথ দিয়ে যাওয়ার সময়। এভাবেই অভিনন্দন জানানো হলো যাত্রীদের। ট্যাবলোর প্রচার শুনে বারবার বেরিয়ে আসতে দেখা গিয়েছে স্থানীয়দের।
এদিন সকালে মিছিলে ছিলেন এসএফআই’র প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক শমীক লাহিড়ি, ছাত্র আন্দোলনের প্রাক্তন নেতা কৌস্তভ চ্যাটার্জি, খেতমজুর আন্দোলনের নেতা তুষার ঘোষ। ছিলেন ডিওয়াইএফআই’র সাধারণ সম্পাদক হিগ্নরাজ ভট্টাচার্য। ডিওয়াইএফআই’র প্রাক্তন সর্ব ভারতীয় সম্পাদক অভয় মুখার্জি, রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা, পারমিতা ঘোষ চৌধুরী, কলতান দাশগুপ্ত যুব নেতৃবৃন্দ এই ইনসাফ যাত্রায় অংশ নেন।
এসএফআই রাজ্য সভাপতি প্রতিকঊর রহমানসহ জেলা ছাত্র নেতৃত্ব এই পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। জয়রামপুর থেকে শুরু হওয়া ইনসাফ যাত্রা আমতলা মোড়, পীরতলা, ঘাঁটুর মোড়, গাববেড়িয়া, জুলপিয়া হয়ে সোজা টংতলা। এখানেই দুপুরে পদযাত্রীদের আহারের ব্যবস্থা করা হয়। কিছুক্ষণ বিশ্রাম। ফের পথ চলা শুরু। সকাল থেকে প্রায় ১৯ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে এদিন সন্ধ্যায় বারুইপুরের পদ্মপুকুরে পৌঁছয় ইনসাফ যাত্রা। সেখানে এক অনুষ্ঠানে সিআইটিইউ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা কমিটি মূল পদযাত্রীদের সম্বর্ধিত করে।
Comments :0