Shahi Idgah mosque

কাশির পর এবার মথুরা, ফের দাবি মসজিদে সমীক্ষার

জাতীয়

জ্ঞানবাপী মসজিদের মতো মথুরার শাহি ইদগাহ মসজিদেরও বিজ্ঞানভিত্তিক সমীক্ষা হোক। এই মর্মে দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে কৃষ্ণ জন্মভূমি মুক্তি নির্মাণ ট্রাস্ট। মামলাকারীদের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টে করা আবেদনে উল্লেখ করেছে যে, ওই মসজিদ হিন্দু মন্দির ভেঙে তৈরি করা হয়েছে। তারা আরও দাবি করেছেন যে তাদের পক্ষ থেকে এবং মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে জমি সংক্রান্ত যেই দাবি করা হচ্ছে তার বাস্তবিক চিত্র সামনে আসবে বিজ্ঞানভিত্তিক সমীক্ষার মাধ্যমেই। 
সুপ্রিম কোর্টে করা আবেদনে বলা হয়েছে যে, ‘‘এই জমি সংক্রান্ত মামলাব আবেদনকারী এবং অন্য পক্ষের দ্বারা উত্থাপিত দাবির বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত করার জন্য, একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা প্রয়োজন। এই সমীক্ষার মাধ্যমে জমি সংক্রান্ত সমস্যার বিরোধ মেটানো সম্ভব।’’


চলতি বছর জানুয়ারিতে ট্রাস্টের পক্ষ থেকে মানচিত্র সহ মথুরা আদালতে মামলা দায়ের করে। সেই মামলায় বর্তমানে যেখানে শাহী মসজিদ ইদগাহ রয়েছে সেখানে কৃষ্ণ জন্মভূমি পুনঃস্থাপনের দাবি করা হয়।
সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে শাহী মসজিদ ইদগাহ এবং ইউপি সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডের পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয় যে মামলাটি উপাসনার স্থান আইন ১৯৯১ র পরিপন্থী। ওই আইনে বলা রয়েছে যে ১৫ আগস্ট ১৯৪৭ সালের আগে প্রতিষ্ঠিত কোন উপাসনা স্থানকে বদলে করা বা ভেঙে ফেলা যাবে না।

কৃষ্ণ জন্মভূমি ট্রাস্টের সভাপতি আশুতোষ পান্ডে হাইকোর্টের কাছে আবেদন জানান যাতে উচ্চ আদালতের পক্ষ থেকে মথুরার দেওয়ানি আদালতকে নির্দেশ দেওয়া হয় বিজ্ঞানভিত্তিক সমীক্ষার রায় দেওয়ার জন্য।


উল্লেখ্য অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর আরএসএস এবং উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন গুলির পক্ষ থেকে স্লোগান তোলা হয়েছিল ‘ইয়ে তো স্রিফ ঝাঁকি হ্যায়, কাশি মথুরা বাকি হ্যায়।’
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মসজিদ ভেঙে মন্দির তৈরির কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে বিজেপি এবং আরএসএস কাশির জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে এই স্লোগান তুলতে শুরু করে। হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে মসজিদের গায়ে হিন্দু দেব দেবীর ছবি রয়েছে। তাছাড়া মসজিদের অজুখানায় যেই পাথর রয়েছে তা শিব লিঙ্গ বলে দাবি করেন তারা। চারজন হিন্দু মহিলা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে মামলা দায়ের করে দাবি করেন যে তাদের মসজিদের ভিতর উপাসনা করার অনুমতি দিতে হবে। 
মামলা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত যায়। সেই সময় শীর্ষ আদালেতর নির্দেশে ভিডিওগ্রাফি করা হলে সেই ভিডিও এবং ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। বন্ধ করা হয় সমীক্ষা। এখন এলাহাবাদ হাইকোর্ট মসজিদের বিজ্ঞানভিত্তিক সমীক্ষার অনুমতি দিয়েছে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণকে। 

অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলা হয়েছিল জোর করেই। বিজেপি এবং আরএসএস’র পুরো বাহিনী তা করেছিল ১৯৯২’তে। সুপ্রিম কোর্ট ভেঙে দেওয়া মসজিদের জমিতে রামনমন্দির তৈরির অনুমতি দেয়। তার আগে এখানেও বিভিন্ন সমীক্ষা হয়েছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের ওই রায়েও কোথাও বলা হয়নি কোনও সমীক্ষায় মন্দির ভেঙে মসজিদ তৈরি করার নির্ণায়ক প্রমাণ মিলেছে। বরং, ‘ভাবাবেগ’ বিবেচনায় রেখে অনুমতি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে রায়ে। বিভিন্ন অংশের অনুমান, বিজ্ঞানভিত্তিক সমীক্ষার আসল উদ্দেশ্য ভোটের আগে হিন্দু-মুসলিম বিভাজনের পক্ষে ভাবাবেগ তীব্র করা।

Comments :0

Login to leave a comment