প্রবীর দাস
এবার নিজের ভোট নিজে দেবেন সন্দেশখালির জনতা, ভোট দেবে বসিরহাট। ২০১১’ র পর এই অধিকার ছিল না এখানে, রাজ্যের আর বহু জায়গার মতো। কিন্তু এবার রোখা যাবে না।
হিঙ্গলগঞ্জে সামসের নগর বাজারে জনসভায় বলছেন নিরাপদ সরদার। বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে বামফ্রন্ট মনোনীত সিপিআই(এম) প্রার্থী বলছেন সন্দেশখালির আন্দোলনের কথা। বলছেন, দুর্নীতি দুষ্কৃতী রাজ হটাতে হবে। তবে বিভেদ করে যে বিজেপি , তাকে নিয়ে নয়।
সারা ভারত খেত মজুর ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদক, সিপিআই(এম) রাজ্য কমিটির সদস্য ঘুরছেন সাতটি বিধানসভা এলাকাতেই। সন্দেশখালির বিধায়ক ছিলেন। বলেছেন যে জমি লুট আর নারী নির্যাতনের কথা বিধানসভায় বলতে চেয়েছিলেন, বলতে দেওয়া হয়নি।
সামসের নগরের গা দিয়ে বয়ে গেছে চিংড়েখালি। ওপারেই সুন্দরবনের ঘন জঙ্গল। বাঘ চলে আসে গ্রামে। দেখা যায় বাংলাদেশের সীমান্ত। নদী বাঁধের ওপর রাস্তা, বেশ নিচে বসতি।
সোমবার চড়া রোদে দুপুরে প্রচার সভা। তবু এসেছেন স্থানীয়রা। প্রার্থী বলছেন, “ভোটে দিতে বাধা দিলে, প্রচারে বাধা দিলে জানাবেন । কমিশনে অনলাইনে জানাতে পারেন। না হলে ছবি তুলে আমাদের পাঠান। এই কেন্দ্রে নজর সারা দেশের। সজাগ আমরা। ভোট লুট করতে দেব না।“
নিরাপদ বলছেন, “এই ভোটের প্রধান বিষয় দেশ। এই ভোটে দেশরক্ষার লড়াইয়ে নেমেছে বামপন্থীরা। সারা দেশে বিজেপি বিরোধী সব শক্তি আমাদের সঙ্গে আছে। রাজ্যে বিজেপি এবং তৃণমূল বিরোধী শক্তি অনেকাংশে এক জায়গায় করতে পেরেছে বামপন্থীরা। তৃণমূলকে হারাতে বিজেপি নয়, বামপন্থীদের পাশে থাকুন।”
কেন?
নিরাপদ বলছেন, “বিজেপি সরকারের সময়ে সবচেয়ে বেশি অপুষ্ট শিশু জন্ম নিয়েছে। সবচেয়ে বেশি বেকার হয়েছে দেশে। কৃষকরা আত্মহত্যা করছে। চড়া হয়ে গিয়েছে খাদ্য থেকে জ্বালানির দাম। বলার কিছু নেই, তাই ভোটের আগে মন্দির-মসজিদ করে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নিজে। ওরা বিভেদ চায়, আমরা ঐক্য চাই। পাশে থাকুন।”
বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের রেখা পাত্রকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। ফোনে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন নরেন্দ্র মোদী। আর নুসরাত জাহানকে সরিয়ে হাজি নুরুল ইসলামকে ফিরিয়ে এনেছে তৃণমূল। বিধানসভায় সব কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিল তৃণমূল।
সিপিআই(এম) প্রার্থী বলছেন, “লাল ঝান্ডা না জিতলে গরিব মানুষের মুক্তি নেই। বামপন্থীরা জিতলে একটাও স্কুল বন্ধ হবে না, নারীদের সম্মানহানি হবে না। আমরা দাঙ্গা চাই না বিভেদ চাই না, আমরা ঐক্য চাই। লাল ঝান্ডা জিতলে কেউ আপনার নিরাপত্তা কাড়তে পারবে না।”
২০১০ সালে দেগঙ্গায় দাঙ্গার জন্য সরাসরি হাজি নুরুল ইসলামকে দায়ী করছে সিপিআই(এম)। আবার বিজেপি’র উন্নাও, হাথরস, বিলকিস বানু প্রসঙ্গ মনে করিয়ে দিচ্ছেন কর্মীরা।
প্রার্থী বলছেন, সন্দেশখালি সারা রাজ্যে ভোটের বিষয় করতে কেবল আগ্রহী বিজেপি। নারীদের সম্মান রক্ষায় নয়।
প্রচারে যুব এবং মহিলারা রয়েছেন ভালো সংখ্যায়।
Comments :0