MODI BALURGHAT

মোদীর ভাষণে সেই ‘রামমন্দির’, ‘সনাতন ধর্ম’, ‘রামনবমী’

জাতীয় রাজ্য

দেশের প্রধানমন্ত্রীর মাথাব্যথা যেন কেবল রামনবমী পালনেই। মঙ্গলবার বিহার এবং পশ্চিমবঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর ভাষণে তার সঙ্গে থাকল সনাতন ধর্ম, সিএএ এবং ‘ইন্ডিয়া’। পশ্চিমবঙ্গের বালুরঘাটে আবার রোহিঙ্গা প্রসঙ্গেও ঢুকে পড়েছেন নরেন্দ্র মোদী। 
যত দিন যাচ্ছে মোদীর প্রচারে বড় হয়ে উঠছে হিন্দু পরিবারে বরাবর পালিত উৎসবের প্রসঙ্গ। আরও বেশি আসছে রামমন্দির। এদিনও তাঁর ঘোষণা, রামমন্দির উদ্বোধনের পর প্রথম রামনবমী তিনি কাটাবেন অযোধ্যায়। 
বিরোধী দলগুলির মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’-কে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, দেশের উন্নয়নে বাধা দিয়েছে এই বিরোধীরা। মোদী বলেছেন, ‘‘যারা সিএএ (সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন)’র বিরোধিতা করছেন তাঁরা জেনে রাখুন মোদী থেমে যাবে না। সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করতেও থেমে যায়নি মোদী।’’
বলছেন ‘বিকশিত ভারত’, ‘সমৃদ্ধ ভারত’ গড়াই তার লক্ষ্য। তবে স্কুল, কলেজ, কারখানা, বিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ার পরিসংখ্যান হাজির করেননি। বরং বলেছেন, ‘‘সরকারের বড় সাফল্য যে রামমন্দির তৈরি করা গিয়েছে।’’ আর বলেছেন, ‘‘বিরোধীরা সনাতন ধর্ম বিরোধী। তাদের একটি আসনেও জয়ী করা উচিত নয়।’’
রামনবমী সারা দেশে বরাবরই বহু মানুষ পালন করেন, নরেন্দ্র মোদী আসীন হওয়ার আগে থেকেই করেন। কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর দশ বছরে সঙ্ঘ পরিবারের উদ্যোগে উৎসবের দিনেই বারবার ধর্মীয় মেরুকরণে কাজে লাগানো হয়েছে। মোদী বালুরঘাটে সন্তোষ জানিয়েছেন হাইকোর্ট রামনবমীর মিছিলে অনুমতি দেওয়ায়। গত বছর এই দিনেই রাজ্যে হয়েছে উত্তেজনা। 
এদিন মোদী আবার বলেছেন, ‘‘তৃণমূল সরকার রামনবমী পালন করতে দেয় না। যারা পাথর ছোঁড়ে মদত দেয় তাদের।’’ এ মাসেরই গোড়ার দিকে বিহারের নওয়াদায় মোদী রামনবমী পালনের ডাক দেন নির্বাচনী জনসভার মঞ্চ থেকে। বলেন, যারা পাপ করেছে তাদের ছেড়ে দেওয়া যাবে না।’ 
নির্বাচন কমিশনে অভিযোগও দায়ের করেছে সিপিআই(এম), ভোটের প্রচারে মোদীর ধর্মীয় মেরুকরণের ভাষণে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে। নির্বাচন কমিশন এখনও কিছু করেনি। তবে বিজেপি মমতার নামে কমিশনে এদিন নালিশ ঠুকেছে। বিজেপি’র অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি মোদীর নাম করে বলেছেন যে রামনবমীর দিন দাঙ্গা বাঁধানোর চক্রান্ত হচ্ছে।  
সাম্প্রদায়িক হিংসা ঠেকাতে ব্যবস্থা না নেওয়ায় মমতার ভূমিকায় তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন বামপন্থীরা। গতবার নিজে পুলিশ মন্ত্রী হয়ে দায় চাপিয়ে দিয়েছিলেন পুলিশের ওপর। এবার গোলমালের আশঙ্কা জানালেও প্রশাসনিক পদক্ষেপ প্রসঙ্গে নীরব মুখ্যমন্ত্রী।  
বালুরঘাটে মোদী বলেছেন, ‘‘দুষ্কৃতী এবং অনুপ্রবেশকারীদের হাতে রাজ্যকে তুলে দিয়েছে তৃণমূল।’’ বলেছেন, ‘‘এবারের রামনবমী আলাদা। কারণ রামলালা ঘরে ফিরেছেন।’’ মোদী বলেছেন, ‘‘অপরাধ এবং দুর্নীতি রাজ্যে সীমা ছাড়িয়েছে।’’
বিরোধীরা বলছেন, নির্বাচনী বন্ড দেখিয়ে দিয়েছে বিজেপি, তৃণমূলের মতোই, রাজনৈতিক তোলাবাজিকে কিভাবে আইনি স্বীকৃতি দিয়েছিল। তথ্য চাপতে শেষ পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় এজেন্সির কোনও তদন্তও পরিণামে পৌঁছায়নি। তাঁর রাজ্যে তাঁর দলই ধর্ষকদের জেল থেকে ছাড়িয়ে এনে সম্বর্ধনা দিয়েছে। দেশে বেকারি স্বাধীনতার পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে, মূল্যবৃদ্ধি চলছে লাগাতার। ধর্মীয় মেরুকরণই তাই একমাত্র ভরসা মোদীর।

Comments :0

Login to leave a comment