JALPAIGURI WATER CRISIS

জলপাইগুড়ি: ভাটাখানায়
নব্বই পরিবারের ভরসা একটিই কল

জেলা

দীপশুভ্র সান্যাল

পানীয় জলের সমস্যায় জর্জরিত জলপাইগুড়ি পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্রনগর আপার ভাটাখানা। ৯০টি পরিবারের জন্য ১টি মাত্র পানীয় জলের কল। তাও আবার জল ঘোলা থাকায় কলের মুখে কাপড় বেঁধে ছেঁকে জল সংগ্রহ করতে হয়। 

সকাল থেকে জলের কলে লম্বা লাইন পড়ে যায় এলাকাবাসীর । দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকার রাস্তা ঘাটের ভগ্নদশা। 

এলাকার বাসিন্দা গীতা সরকার বলেন, ভোট আসে ভোট যায়। প্রতিশ্রুতিই সার। এই এলাকার আমরা প্রতিটা পরিবারই জলের সমস্যা ভোগ করি। বিশেষ করে আমরা মহিলারা সংসারে অন্যান্য কাজের চাপের মধ্যেও পানীয় জলের জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে জল সংগ্রহ করতে হয়। 

আরেক বাসিন্দা ইন্দ্রজিৎ বিশ্বাস বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে এই এলাকার রাস্তা ঘাট খারাপ। এই এলাকার কথা শুনলে টোটো, রিকশা কিছুই আসতে চায় না। প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে বিডিও অফিস মোড়ে গিয়ে শহরের যাওয়ার জন্য টোটো ধরতে হয়। মাধ্যমিক পরীক্ষা সবে শেষ হল, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পরীক্ষার্থীরা কিভাবে যাতায়াত করবে তা চিন্তার বিষয়। অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দা হরিপদ মন্ডল, মানিক বিশ্বাস বলেন, এখানকার সবচেয়ে বড় সমস্যা পানীয় জল। একটি মাত্র জলের কল। অনেকে লাইনে দাঁড়িয়েও জল পান না। বাধ্য  হয়ে অন্য পাড়ায় যেতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা খানা খন্দে ভরে গিয়েছে। ড্রেন না থাকায় বাড়ির ব্যবহৃত নোংরা জল রাস্তার উপর গড়াগড়ি খাচ্ছে। 

জলপাইগুড়ি পৌরসভার প্রাক্তন বিরোধী দলনেত্রী দুর্বা ব্যানার্জী বলেন, গত নির্বাচনের তৃণমূল মানুষের ভোট লুট করে পৌরসভায় এসেছে। নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিশ্রুতি ছিল প্রতি ওয়ার্ডে ১৫ কোটি টাকার কাজ হবে। এক বছর পেরিয়ে গেল, শুনেছি জলপাইগুড়ি পৌরসভায় ৩৫টি টেন্ডার ৩ বার বাতিল হয়েছে। কোনও ঠিকাদারি সংস্থা কাজ করতে আসেনি। এক বছর হয়ে গেল ৩ কোটি টাকার কাজ হয়ে যাওয়ার কথা। নতুন কাজ তো দূরের কথা, ২০১৭’তে ওয়াকারগঞ্জ ব্রিজের সামনে থেকে ভাটা এলাকা পর্যন্ত একটি রাস্তার অনুমোদন হয়েছিল। সেই কাজ এখনো হয়নি! 

সংশ্লিষ্ট  ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মহুয়া দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এসজেডিএ’র উদ্যোগে ইতিমধ্যেই আপার ভাটাখানা এলাকার ঊৎসস্থল থেকে ১৫০০ মিটার রাস্তার কাজ বরাদ্দ করা  হয়েছে। নবান্ন থেকে পৌরসভায় টাকা চলে এলেই কাজ শুরু হবে। তাঁর দাবি, বিনা পয়সায় পানীয় জলের পাইপ বসানো হয়েছে ওই এলাকায়। বাড়ি বাড়ি ‘অম্রুত’ প্রকল্পের পানীয় জল পৌঁছে যাবে। তাই নতুন করে ওই এলাকার রাস্তার ধারে জলের কল বসানো হচ্ছে না। 

অম্রুত প্রকল্পে তিস্তা নদী থেকে জল নিয়ে সেই জল পরিশ্রুত করে জলপাইগুড়ি শহর এলাকায় রিজার্ভারের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা। শহর জুড়ে পাইপলাইন বসেছে, রিজার্ভার হয়েছে। কিন্তু তিস্তার উপরে জলের প্রকল্প গত পাঁচ বছরে তৈরি হয়নি।

Comments :0

Login to leave a comment