North Bengal Floods

আরও এক দেহ উদ্ধার , নাগরাকাটায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১১

রাজ্য জেলা

গত শনিবার রাতের মেঘভাঙ্গা বৃষ্টিতে জলঢাকা নদীর জলে ভেসে যাওয়া মডেল ভিলেজের আরও একজনের মৃতদেহ পাওয়া গেল। মৃতের নাম স্বরস্বতী বাংকারা বরাইক(৪৭)। রবিবার ও সোমবার দশজনের মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল। স্বরস্বতী বরাইক ও নিবিয়ান নায়েক এই দুইজন নিখোজ ছিলেন। বৃহস্পতিবার নদীর পাশে জঙলের মধ্যে মিলল স্বরস্বতী বরাইকের মৃতদেহ। এই নিয়ে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১১। এখনও নিঁখোজ নিবিয়ান নায়েক(৩৪)। 
শনিবার রাতের মেঘভাঙ্গা বৃষ্টি,নদীর জলচ্ছাসে প্লাবিত হয় নাগরাকাটা ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা। বন্যার জলশ্রোতে ভেসে গেছে বাড়িঘর। মানুষের প্রাণহানী সহ বহু গবাদিপশু নদীর জলে ভেসে প্রাণ হারিয়েছে। বনাঞ্চলের পশুপাখিরাও বিপন্ন হয়ে পড়ে। জাতীয় সড়ক রেলপথ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। 
চারদিন বাদে ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে নাগরাকাটা। জল অনেকটাই নেমে গেছে। এখন শুধু পলি সরিয়ে ভেঙে যাওয়া বাড়িঘর মেরামত করে আবার বাসযোগ্য করে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। সরকারি ভাবে আশানুরুপ না হলেও ও বেসরকারি উদ্যোগে ত্রাণ-সাহায্য করা হচ্ছে। 
বেশ কিছু এলাকায় পানীয় জলের সঙ্কট তৈরি হয়েছে। 
গত শনিবার রাতে গাঠিয়া নদীর প্রবল জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছিল বামনডাঙ্গা, টন্ডু, মডেল ভিলেজ এলাকা। বন্যা পীড়িত হয়েছিল কয়েক হাজার মানুষ। অনেকেরই বাড়িঘর ভেসে গেছে। সেই বিভীষিকা কাটিয়ে ঘরে ফিরেছে অনেকেই। সাইয়াদ নিজাম নামের এক বাসিন্দা জানান, ঘরের ভিতরে পলি পরিষ্কার করে বসবাসের উপযোগী করা হচ্ছে। বাইরের জমে থাকা পলি সাফাই করা হয়নি। 
এভাবেই দেখা গেল টন্ডু এলাকায় অনেকেই ভেঙে যাওয়া টিনের ঘর মেরামতের কাজে হাত দিয়েছেন। যাদের ঘর সম্পূর্ণ ভেসে গেছে তাদের এখনও আশ্রয় ত্রাণ শিবিরে। 
এদিনও দেখা গেল ওয়েস্টার্ন ডুয়ার্স প্রেসক্লাব, ন্যাচার এন্ড অ্যাডভেঞ্চার সোসাইটি সহ বিভিন্ন সংস্থা জামাকাপড় খাদ্য সামগ্রী সহ অন্যান্য ত্রান নিয়ে টন্ডু বামনডাঙ্গায় গিয়ে ত্রাণ-সাহায্য করছেন। এখনও বেশ কিছু এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। রাতের অন্ধকারে মানুষ যাতে কিছুটা চলাচল করতে পারে এজন্য প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে টর্চ বাতি বন্যা পীড়িত মানুষদের দেওয়া হয়। এদিনও রান্না করা খাওয়ার দেওয়া হয়েছে। 
অপরদিকে শনিবারে কালিখোলা ঝোড়ার প্রবল জলোচ্ছ্বাসে জাতীয় সড়ক সেতুর পাশের খানিকটা অংশ ধসে গিয়েছিল। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ দ্রুততার সঙ্গে যাওয়া অংশ এবং সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত করে বুধবার থেকে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করে। 
গোটা নাগরাকাটা ব্লকের এখনও বহু জায়গায় মানুষ গৃহহীন হয়ে ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন। আশা করা যায় আগামী কিছুদিনের মধ্যেই নাগরাকাটার পরিবেশ খানিকটা স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।

Comments :0

Login to leave a comment