Goalpokhar Farmers

অতিরিক্ত ধান নেওয়ার অভিযোগ, দুদিন বিক্রি বন্ধ কৃষকদের

জেলা

তপন বিশ্বাস-গোয়ালপোখোর

রাজ্যের মন্ত্রীর খাস তালুকে অতিরিক্ত ধলতা নেওয়ার কারণে দুইদিন থেকে ধান বিক্রি বন্ধ রাখল কৃষকেরা। একটি ধান ক্রয় কেন্দ্রে দুইদিন থেকে ধানখানা বন্ধ রয়েছে অথচ জানেন না গোয়ালপোখোরের বিডিও। উল্লেখ্য থ্রি ম্যানস কমিটির সদস্য বিডিও। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। গতি গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ সিংহ গ্রামের মহম্মদ ওয়াহিদ প্রায় ১৫ কুইন্ট্যাল ধান ভুটভুটি করে নিয়ে এসেছিলেন ধান ক্রয়কেন্দ্রে। অভিযোগ সেখানকার এক কর্মী কুইন্ট্যাল পিছু ৮ কিলোগ্রাম ধলতার দাবি করেন।
শুধু ওয়াহিদের কাছেই নয়, এ ভাবেই একাধিক কৃষকের কাছ থেকে কুইন্ট্যাল পিছু ৮কিলোগ্রাম করে ধলতা নিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে খাগর সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয়কেন্দ্রে। তা নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে কৃষকদের মধ্যে। তাঁদের অভিযোগ, ধান বিক্রির ক্ষেত্রে ধলতা নেওয়ার নিয়ম প্রশাসনের ‘থ্রি-ম্যানস কমিটি’ ঠিক করে দেয়। কিন্তু তা ওই কেন্দ্রে মানা হচ্ছে না।

কৃষকদের আরও অভিযোগ, তাঁরা যে চটের বস্তায় ধান আনছেন, সে সবও নিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বস্তা পিছু ২২ টাকা করে লোকসান হচ্ছে তাঁদের। কৃষকদের ধান মিল মালিকের ট্রাকে তুলতেও বস্তা পিছু ২ টাকা করে অতিরিক্ত নিচ্ছেন রাইস মিল নিযুক্ত শ্রমিকেরা। এ সবে ক্ষোভ ক্রমশ চড়ছে। কিন্তু তা নিয়ে প্রশাসনিক কোনও পদক্ষেপ নেই বলে অভিযোগ।
জেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গোয়ালপোখোর-১ ব্লকে প্রায়  ২৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ধান উৎপাদন হয়। প্রায় ১২ লক্ষ কুইন্টাল ধান উৎপাদন হবে বলে দাবি কৃষি দপ্তরের। কৃষকদের দাবি, চাকুলিয়া বা ইসলামপুর ধান ক্রয় কেন্দ্রে ধানের আর্দ্রতা বুঝে সর্বাধিক তিন কেজি ধোলতা নেওয়া হয় কিন্তু গোয়ালপোখরে ৮ কেজি ধলতা দাবি করে মিল মালিকেরা। কিন্তু কৃষকেরা দুদিন ধানের বিক্রি বন্ধ রাখায় মিল মালিকপক্ষ কিছুটা নমনীয় হয়েছে। তারা এখন কুইন্টালে ৬ কেজি ধলতা দাবি করছে। এ বিষয়ে মিল মালিক পক্ষের প্রতিনিধি বইযশ দাস বলেন, সরকার আমাদের কাছ থেকে কুইন্টালে ৬৮কেজি চাল বুঝে নিচ্ছে অথচ বর্তমানে ধানের যা অবস্থা তাতে কুইন্টালে ৬ থেকে ৮কেজি চাল কম উৎপাদন হচ্ছে। তাই আমাদের কোন উপায় নেই। বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
ওই কেন্দ্রের পার্চেজ অফিসার আনন্দ তামাং বলেছেন, ধান উৎকৃষ্ট মানের হলে ধলতা নেওয়ার কোন কথাই নয়। কিন্তু ধান আদ্র থাকায় সমস্যা হচ্ছে বিষয়টি নিয়ে কৃষক ও মিল মালিকপক্ষের সাথে আলোচনা চলছে। গোয়ালপোখর ১ ব্লকের বিডিও তথা থ্রি-ম্যানস কমিটির সদস্য কৌশিক মল্লিক বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি আপনার মুখ থেকে প্রথম শুনলাম বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।’’
সারা ভারত কৃষক সভার উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক সুরজিৎ কর্মকার জানিয়েছে, ধলতা নিয়ে জেলা জুড়ে দালাল চক্র তৈরি হয়েছে তার পিছনে মদত দিচ্ছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা।

Comments :0

Login to leave a comment