Student

সংসারের হাল ধরতে টোটোই ভরসা সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীর

জেলা

Student


নাম রাত্রি মালিক। সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। তার মুখখানির দিকে তাকালে যে কারও মায়া লাগতে পারে। যে বয়সে হাতে স্কুলবই থাকার কথা, বন্ধুদের সঙ্গে দাপিয়ে বেড়ানোর কথা, খেলাধুলা করার কথা, সে বয়সে কাঁধে তার সংসারের ভার। পেটের তাড়নায় টোটো রিকশা নিয়ে ছুটে বেড়াচ্ছে সড়কের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। সে-ও স্কুলে পড়ে। পেটের জন্যই পড়াশোনার মাঝেই টোটো চালাতে বাধ্য হতে হচ্ছে। কৃষ্ণদেবপুর বালিকা বিদ্যালয়ে পাঠরত এই ছাত্রী রাত্রি মালিকের বাড়ি কালনা থানার নিভুজিবাজারে। সে যখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে, তখন তার বাবা টোটো চালক মদন মালিক সেরিব্রাল স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। তখন থেকে সংসার চালানোর জন্য রাত্রি মালিককে টোটোর হ্যান্ডেল ধরতে হাত পাকাতে শুরু করতে হয়। কারণ সংসারে রয়েছে তার ভাই মা বাবা ঠাকুর মা ও ছোট ভাই। 

একমাত্র সংসারের রোজগারে ছিলেন তার বাবা। কিন্তু তিনি এখন পুরোপুরি অসুস্থ হওয়ায় রাত্রি মালিককেই এখন সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। সে এখন নিয়মিত একজন টোটো চালক হয়ে উঠেছে। এই অবস্থায় কোনো সরকারি সাহায্য তাদের জোটেনি। সাতসাঁতে আবহাওয়া তাদের ঝুপড়িতে বাস করতে হলেও, সরকারি আবাসন প্রকল্পে তাদের নাম ওঠেনি। তাদের দাবি স্থানীয় নেতা-নেত্রী থেকে বিধায়ক পর্যন্ত ছুটেও কোনো সাহায্য মেলেনি। এমত অবস্থায় সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী রাত্রি মালিকই এখন মালিক পরিবারের অন্নদাতা। রাত্রি মালিকের বক্তব্য, ‘পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারতাম। তাহলে খুব ভালো লাগতো। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি হয়তো সেই ইচ্ছা পূরণ করতে দেবে না’। রাত্রি নামের এই শিশুটির জীবনের গল্প এমনই করুণ।
 

Comments :0

Login to leave a comment