Real Wage Deflated Worldwide: ILO

কোভিড পর্বে মূল্যবৃদ্ধি, কমেই গিয়েছে প্রকৃত মজুরি: রিপোর্ট আইএলও’র

আন্তর্জাতিক

Real Wage Deflated Worldwide ILO

প্রকৃত মজুরি কমেছে বিশ্বে, নতুন রিপোর্ট জানালো আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠন। কোভিড পরিস্থিতিতে কাজ চলে যাওয়ার পাশাপাশি বেলাগাম মূল্যবৃদ্ধিকেও দায়ী করেছে আইএলও। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘‘বিশ্বে প্রকৃত মজুরি ০.৯ শতাংশ কমে গিয়েছে ২০২২’র প্রথম ভাগে। এই শতাব্দীর মধ্যে প্রথম বিশ্বময় প্রকৃত মজুরির হিসেব নেতিবাচক হয়েছে।’’ 

ন্যূনতম মজুরি নিশ্চিত করা, পরোক্ষ কর নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে কমানোর ওপর জোর দিয়েছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠন (ILO)। 

আইএলও বলেছে, মজুরি হ্রাসের ফলে আর্থিক বৈষম্য আরও বাড়বে। আরও কমবে কেনার ক্ষমতা, এবং তা বিপুল অংশের। ফলে বৃদ্ধির হার বিশ্বজুড়ে আরও কমে যেতে পারে। উল্লেখ্য, টাকার অঙ্কে প্রাপ্ত মজুরি দিয়ে বোঝা যায় না কতটা কেনার ক্ষমতা থাকবে। দামস্তরকে বিবেচনায় রাখতে হয়। প্রকৃত মজুরি দামের প্রভাবকে হিসেবে রাখে। ফলে ক্রয়ক্ষমতার স্পষ্ট সূচক বলে বিবেচিত হয়।

আইএলও বলেছে, দারিদ্র, বৈষম্য এবং সামাজিক অসন্তোষ মোকাবিলায় এখনই সুপরিকল্পিত নীতি নেওয়া দরকার। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিকে মোকাবিলার পরিকল্পনা না থাকাকেও দায়ী করা হয়েছে প্রকৃত মজুরি কমার কারণ হিসেবে। নতুন দফায় কোভিড বৃদ্ধির পর্বে বেড়েছে রিপোর্টের প্রাসঙ্গিকতা।

মূল্যবৃদ্ধির সংকটময় অবস্থা এবং বিশ্বব্যাপী আর্থিক বৃদ্ধি হ্রাসকে সঙ্কট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু, বেলাগাম মূল্যবৃদ্ধিকেই প্রকৃত মজুরির ওপর আঘাতের প্রধান কারণ চিহ্নিত করেছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠন। 

‘গ্লোবাল ওয়েজ রিপোর্ট, ইমপ্যাক্ট অব ইনফ্লেশন অ্যান্ড কোভিড ১৯ অন ওয়েজেস।’ স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে শিল্পোন্নত দেশে সবচেয়ে হারে কমেছে প্রকৃত মজুরি। বলা হয়েছে, সবচেয়ে সঙ্কটে পড়ছে একবারে কম মজুরির শ্রমজীবী অংশগুলি।

 ‘‘আমরা যে একাধিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছি তা প্রকৃত মজুরির হ্রাসকে ত্বরান্বিত করেছে। ক্রমবর্ধমান অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হওয়ায় এটা লক্ষ লক্ষ কর্মীকে একটি ভয়ানক পরিস্থিতিতে ফেলেছে,’’ বলেছেন আইএলও মহাপরিচালক, গিলবার্ট এফ. হাউংবো। ‘‘ তিনি বলেছেন, ‘‘সর্বনিম্ন বেতনের শ্রমিকের ক্রয়ক্ষমতা বজায় না থাকলে আয় বৈষম্য এবং দারিদ্র্য বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও, মহামারী পরবর্তী সময়ে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টা ধাক্কা খাবে। এটি সারা বিশ্বে আরও সামাজিক অসন্তোষ সৃষ্টি করতে পারে এবং সবার জন্য সমৃদ্ধি ও শান্তি অর্জনের লক্ষ্যকে ক্ষুণ্ণ করতে পারে।’’ 

প্রতিবেদনটি স্পষ্ট করেছে যে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি নিম্ন আয়ের উপার্জনকারীদের জীবনযাত্রার ব্যয়ের ওপর মারাত্নক প্রভাব ফেলেছে। এই অংশের মজুরি আয়ের বেশিরভাগই অত্যাবশ্যকীয় পণ্য এবং পরিষেবাগুলি কিনতে খরচ হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সমস্যার সমাধানের চেষ্টা নামাত্র। ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি দেশে দেশে ন্যূনতম মজুরির দ্রুত কমিয়ে দিচ্ছে। 

রিপোর্ট বলা হয়েছে যে, মজুরি শ্রমিক এবং তাদের পরিবারের ক্রয় ক্ষমতা এবং জীবনযাত্রার মান বজায় রাখতে সহায়তা করার জন্য সু-পরিকল্পিত নীতি চালু করা দরকার। ন্যূনতম মজুরি হারের পর্যাপ্ত সমন্বয় একটি কার্যকরী হাতিয়ার হতে পারে, কারণ ILO সদস্য রাষ্ট্রগুলির ৯০ শতাংশেই ন্যূনতম মজুরি ব্যবস্থা চালু রয়েছে। শক্তিশালী ত্রিপাক্ষিক সামাজিক আলোচনা এবং সমষ্টিগত দর কষাকষিও সংকটের সময় পর্যাপ্ত মজুরি সমন্বয় সাধনে সহায়তা করতে পারে বলে উল্লেখিত রিপোর্টে। 

আইএলও’র মতে, অন্যান্য নীতিগুলি যা পরিবারের উপর জীবনযাত্রার ব্যয়-সংকটের প্রভাবকে সহজ করতে পারে তার মধ্যে রয়েছে নির্দিষ্ট গোষ্ঠীগুলিকে লক্ষ্য করে কিছু ব্যবস্থা, যেমন নিম্ন আয়ের পরিবারগুলিকে প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে সহায়তা করার জন্য ভাউচার দেওয়া, বা এই পণ্যগুলির উপর পরোক্ষ কর কমানো।

Comments :0

Login to leave a comment