STORY — CAESER ROY / MUKTADHARA

গল্প — সামার হিট / মুক্তধারা

সাহিত্যের পাতা

STORY  CAESER ROY  MUKTADHARA

গল্প

সামার হিট 

সীজার রায়

"মুক্তির মন্দির সোপানতলে.....না,না, গান নয়।টাচফোনের রিংটোন। সতীনাথবাবু সকালের দিকে বাইরের ড্রয়িং রুমে বসেন। দেখলেন আদ্যনাথবাবুর ফোন।অর্থাৎ বউমার বাবা, উঠতে হবে।মনে মনে বললেন, "আঃ সকালবেলায় জ্বালাতন। এখনই দোতলায় উঠতে হবে। মেয়ের সঙ্গে দরকার নেই। যত কথা 
দিদিভাই-এর সাথে। যা বলবেন মেয়েকে বলুন। তাহলে একতলাতে মিটে যায়। দিদিভাই ছাড়া চলবে না।" মনে ভাবলে কি হবে। ফোন ধরতে হল।
"একবার দিদিভাইকে দিন না।"


" বললেই হবে। এখন আমায় দোতলায় উঠতে হবে। দিদিভাই কি করছে দেখতে হবে। মুডে থাকলে তবে ফোন দেওয়া যাবে। চুপ করে ফোন ধরে বসে থাকুন।"
আসলে কথা বলার মতো শক্তিনাথবাবুর আছে তো ওই দিদিভাই,সেখানে কেউ ভাগ বসালে তা তার পছন্দ হয় না। ধীরে পায়ে বেশ সময় নিয়ে উঠলেন দোতলায়। দিদিভাই-এর ঘরে প্রবেশ করে দেখলেন সে খুব ব্যস্ত। কিছুক্ষণ পর বললেন,"এই নাও তোমার মামাদাদুর ফোন।"
খুব ব্যস্ত নাতনি ফোনটা নিয়ে বলল,"বলো দাদু, কি বলছ।"
"এ সামারে তোমাদের ওখানে হিট কেমন পড়েছে?"
নাতনির বয়স মাত্র আট। স্কুলের প্রজেক্ট নিয়ে ব্যস্ত।বেশি কথা বলার সময় তার নেই।বলল,"এখানে সামার নেই।হিট- ফিট কিছু পড়েনি।"


   চমকে উঠে বললেন
"বলো কি? পুরুলিয়া বাঁকুড়ায় ৪২-৪৩
ডিগ্রি আর তোমার ওখানে গরম পড়েনি?"
 নাতনি ফট করে বলল," তুমি খালি যত গাঁজা গল্প দাও, থামো তো। আমার কথা বলার সময় নেই।"
 ফোনটা তৎক্ষণাৎ চলে গেল 
শক্তিনাথবাবুর হাতে। শক্তিনাথবাবু সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে ফোনে শুনতে পেলেন "শক্তিনাথবাবু,আপনি একজন অভিজ্ঞ শিক্ষক। নাতনিকে কিছু শেখালেন না, ও সামার পড়েছে কি না জানে না। বলে হিট-ফিট নাকি পড়েনি। আমি নাকি গাঁজা গল্প বলছি। 
দিদিভাই মানুষ হবে কি করে!"


 শক্তিনাথবাবু খুব আহত হলেন ।কোনো কথা না -বলে একতলায় বউমা-র হাতে ফোনটা দিয়ে বাইরের ড্রয়িং রুমে গিয়ে বসলেন। 
অনেক কথার পর শক্তিনাথবাবুর বউমা তথা আদ্যনাথবাবুর কন্যা বাবাকে বুঝিয়ে বললেন,"আরে! একতলা,দোতলা তো ফুল এসি।  স্কুলে প্রায় দেড় মাস ছুটি।ও তো পড়াশোনা,প্রজেক্ট আর গেম নিয়ে ব্যস্ত। ঘরের বাইরে বের হয়নি দেড় মাস। ও কি করে তোমার সামার,হিট এইসব বুঝবে।ওর ঘরে তো উইন্টার। সবসময় এই ১৫-১৬ ডিগ্রি।"

Comments :0

Login to leave a comment