SUPREME COURT EC

নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে কমিটি গড়ল সুপ্রিম কোর্ট

জাতীয়

SUPREME COURT EC

নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা রাখতে কমিটি গড়ল সুপ্রিম কোর্ট। নির্বাচনে কমিশনের শীর্ষ স্তরে নিয়োগ চূড়ান্ত করবে এই কমিটি। প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং লোকসভার বিরোধী দলনেতাকে নিয়ে গড়া হবে কমিটি। নির্বাচন কমিশনার এবং মুখ্য নির্বাচন কমিশনারদের নাম বাছাই করবে এই কমিটি। তার ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ চূড়ান্ত করবেন।

পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ বৃহস্পতিবার বাছাই কমিটি গড়ার পক্ষে রায় দিয়েছে। এই রায়কে গুরুত্বপূর্ণ আখ্যা দিয়েছে বিভিন্ন অংশ। প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এসওয়াই কুরেশি বলেছেন, দীর্ঘ কুড়ি বছর ধরে বিষয়টি আলোচনায় ছিল। নিরপেক্ষতার জন্য এই পদক্ষেপ প্রয়োজনীয়। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, নির্বাচন কমিশনকে সরকারি হস্তক্ষেপ মুক্ত রাখতে হবে। সরকার পক্ষের মর্জি অনুযায়ী চলবে না নির্বাচন কমিশন। বিচারপতিরা বলেছেন,  গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সফল হতে পারে যখন সংশ্লিষ্ট সব অংশ নির্বাচন প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ রাখার পক্ষে কাজ করবে।

সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো। 

একাধিক আবেদন একত্রে করে এই মামলার শুনানি হয়েছে। যার অনেকগুলিতেই সুপ্রিম কোর্টকে নির্দেশিকা জারি করতে অনুরোধ করা হয় যাতে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ কেবল সরকারের মর্জির ওপর নির্ভর করে না থাকে। চালু ব্যবস্থায় মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং অপর নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ করে সরকার। সম্প্তি নির্বাচন কমিশনারের পদে অরুণ গোয়েলের নিয়োগ ঘিরে আপত্তি জমা পড়ে সুপ্রিম কোর্টে। শুনানির সময় আদালত প্রশ্ন তোলে ‘বিদ্যুৎগতিতে নিয়োগ’ সম্পর্কে। 

অরুণ গোয়েলকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে দায়িত্ব গ্রহণ প্রক্রিয়া মিটে যায়। এই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট অ্যাটর্নি জেনারেলের থেকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত সংক্রান্ত সরকারি  নথি আদালতে পেশ করার নির্দেশ দেয়। বিচারপতি কেএম জোসেফের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের যে বেঞ্চ এদিন রায় দিয়েছে তার মধ্যে রয়েছেন বিচারপতি অজয় রাস্তোগি, অনিরুদ্ধ বসু, হৃষিকেশ রায় এবং সিটি রবিকুমার। মূল রায়ের সঙ্গে একমত হলেও পৃথক রায় লিখেছেন বিচারপতি রাস্তোগি। জানা গিয়েছে, ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে একই মাপকাঠিতে আর দুই নির্বাচন কমিশনারকে বিবেচনার পক্ষে রায় দিয়েছেন তিনি। 

বৃহস্পতিবার বিচারপতি কে এম জোসেফও বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা গণতন্ত্রের পক্ষে অত্যন্ত জরুরি। নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ ঘিরে আপত্তি জানিয়ে দায়ের মামলার শুনানি চলছিল শীর্ষ আদালতে। আবেদনকারী পক্ষে আইনজীবী ছিলেন প্রশান্ত ভূষণ। তিনি এই রায়কে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়েছেন।

২০২৪’র লোকসভা নির্বাচনের আগে এই রায় বিজেপি’কে চাপে রাখবে বলে মত পর্যবেক্ষকদের। তাঁরা বলছেন, অতীতে বিভিন্ন সময়েই রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো হয়েছে। নরেন্দ্র মোদীর প্রধানমন্ত্রীত্বের মেয়াদে কোনও রাখঢাক না রেখে নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতিত্ব দেখিয়েছে একাধিক ঘটনায়। ভোটের দিন ভোট দিতে গিয়ে গুজরাটে রোড শো করেছেন মোদী। তাঁকে কমিশন কোনও প্রশ্নই করেনি।  তার আগে মোদীর ভাষণে নির্বাচন বিধি ভাঙার অভিযোগ তুলেছিলেন এক নির্বাচন কমিশনার। তাকে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করতে হয়। 

সুপ্রিম কোর্ট এদিন জানিয়েছে যে  নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগে সংসদে আইন পাশ না হওয়া পর্যন্ত এই  প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি এবং লোকসভার বিরোধী  দলনেতাকে নিয়ে গড়া কমিটি কাজ চালাবে।  লোকসভায় কোনও দলের বিরোধী দলনেতার স্বীকৃতি না থাকলে প্রধান বিরোধী দলের লোকসভা নেতাকে এই কমিটিতে নেওয়া হবে। 

Comments :0

Login to leave a comment