ভোটদাতাদের ভীত করে পুনর্নিবাচন হচ্ছে বসিরহাট ও বাদুরিয়ায়। সোমবার সকাল থেকে সশস্ত্র দুষ্কৃতীর ভিড়। সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
রাতভর তান্ডব চলল বসিরহাট-১ ব্লকের গাছা আখারপুর, বাদুড়িয়া ব্লকের পূর্ব জয়নগর সহ বিভিন্ন এলাকায়। বিনা বাধায় বাড়ি ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হলো বিরোধী দলে কর্মীদের।
বিশেষ করে সিপিআই(এম)'র কর্মীদের মারধর করা গ্রামছাড়া করা হলো পুলিশের সামনেই।
এমনই অভিযোগ জানিয়েছ সিপিআই(এম)। পুলিশকে বারবার জানানো সত্ত্বেও নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়।
সোমবার সকাল থেকেই গ্রামের ভিতরে বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে তৃণমূল আশ্রিত বহিরাগত দুষ্কৃতীদের জমায়েত। মানুষ ভয়ে বুথে যেতে পারছেন না। যারা তৃণমূলের ভোটার তারাই যাচ্ছেন কেবল। বুথে পরিচালনায় তৃণমূলের শিক্ষা সেলের সক্রিয় সদস্যরা।
গত ৮ জুলাই তৃণমূলের শিক্ষা সেলের যে সমস্ত সদস্যরা তৃতীয় পোলিং হিসাবে গিয়েছিলেন সোমবার তাঁদের অধিকাংশ প্রিসাইডিং অফিসার হিসাবে দায়িত্বে। ফলে তাঁরাই ছাপ্পা ভোটের ব্যবস্থা করবেন, এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
গত শনিবার বসিরহাটের কচুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের গোরাইতলা হাইস্কুলে ৫৫,৫৬,৫৭,৬১ নং বুথে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বোমা বন্দুক নিয়ে তান্ডব চালিয়ে ছাপ্পা ভোট দিতে গেলে প্রতিরোধে নামে গ্রামের মহিলারা। বন্ধ হয় যায় ভোট প্রক্রিয়া। সেখানেই সোমবার হচ্ছে পুনর্নির্বাচন। অথচ গ্রাম কার্যত শূন্য।
রবিবার রাতে বহিরাগত তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তান্ডব চালায় ওই ৪টি বুথ এলাকায়। বিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মী সমর্থকদের বাড়ি ঘর ভাঙচুর লুটপাট চালিয়ে গ্রামছাড়া করা হয়। গ্রামের মোড়ে মোড়ে অতন্দ্র প্রহরী সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা। ফলে ফের প্রহসনের ভোট সাক্ষী থাকলো গোরাইতলা,বাগুয়াডাঙা সহ অন্যান্য গ্রাম।
বাদুড়িয়া ব্লকের আটুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৮২,১৮৩,১৮৫ নং বুথে শনিবার পুনর্নিবাচন হচ্ছে। রবিবার রাতভর বুথগুলির অভ্যন্তরে বেপরোয়া হামলা চালিয়ে গ্রামকে গ্রাম সন্ত্রস্ত করে তোলে। বামফ্রন্ট সমর্থিত সিপিআই(এম) প্রার্থীদের বাড়িতে বেপরোয়া হামলা চালানো হয়।
সোমবার সকাল থেকে চিত্রটি একই রকম। বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী, রাজ্য পুলিশ দিয়ে ভোট হলেও সাধারণ ভোটাররা আতঙ্কিত। তাঁরা বুথ কেন্দ্রে যেতে সাহস পাচ্ছেন না।
অভিযোগ বুথগুলির ৫০০ মিটারের মধ্যে আটুরিয়া ষষ্ঠিতলা মাঠে সহস্রাধিক তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের জমায়েত করে এলাকায় ভয়ভীতির পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
প্রশ্ন উঠছে গত ৮ জুলাই যারা থার্ড পোলিং হিসাবে গিয়েছিলেন, তাঁদেরই সোমবার রিপোলে প্রিসাইডিং করে পাঠানোয়। কারণ, তাঁদের তো প্রিসাইডিং ট্রেনিং নেই। তাহলে ব্যালট ইস্যু থেকে শুরু করে ভোট শেষে যাবতীয় রিপোর্ট তৈরি করা,ব্যালক বাক্স সিল করা তো সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। আদৌ কী এর কোন বৈধতা আছে, উঠছে প্রশ্ন।
উল্লেখ্য,গত শনিবার ওই তিনটি বুথের একটিতে সিপিআই(এম)কে কালিমালিপ্ত করতে সিপিআই(এম)'র প্রতীকে পুলিশের সাহায্য নিয়ে ছাপ্পা ভোটের ভিডিও বাজারে ছেড়ে ছিল তৃণমূলীরা। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয় বিতর্ক। সিপিআই(এম)'র পক্ষ থেকেও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় তৃণমূলের এমন ষড়যন্ত্রের সমালোচনা করা হয়।
Comments :0