RBI on Adani Group

কোন ব্যাঙ্কে কত ঋণ আদানির, তথ্য চাইল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক

জাতীয়

শেয়ার লেনদেনে গুরুতর কারচুপির অভিযোগে নাজেহাল আদানি গোষ্ঠী (Adani Group)। মোদী সরকারের ঘনিষ্ঠ আদানির বিরুদ্ধে শেয়ার লেনদেনে কারচুপির গুরুতর অভিযোগ এনেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থা হিডেনবার্গ। করফাঁকি থেকে কারচুপি, এমনকি শেয়ারের দামে জালিয়াতির অভিযোগও রয়েছে। এবার সেই অভিযোগের ভিত্তিতে আদানির গতিবিধি খতিয়ে দেখতে ময়দানে নামল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (Reserve Bank of India) আদানি গোষ্ঠীকে কোন ব্যাঙ্কে কত টাকা ঋণ দিয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে ব্যাঙ্কগুলির কাছ থেকে বিশদ তথ্য চেয়ে পাঠাল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। 

রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং সেবি, এই দুই নিয়ামকের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে গত কয়েকদিন প্রশ্ন বারবার উঠেছে। বৃহস্পতিবার সংসদে সরকারপক্ষকে চেপে ধরেন বিরোধীরা। 

আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স (Reuters) জানিয়েছে, দেশের সমস্ত শীর্ষস্থানীয় ব্যাঙ্কের সঙ্গে ইতিমধ্যেই যোগাযোগ করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। যে যে ব্যাঙ্ক আদানি গোষ্ঠীকে ঋণ দিয়েছে তাদের কাছ থেকে রেকর্ডও চেয়ে পাঠিয়েছে দেশের শির্ষ ব্যাঙ্ক। কবে ঋণ দেওয়া হয়েছিল, কত টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছিল, তার কিস্তি নিয়মিত জমা পড়েছে কিনা, কত টাকার ঋণ আনাদায়ী অবস্থায় পড়ে রয়েছে, এই সংক্রান্ত বিশদ তথ্য জানাতে বলা হয়েছে।

এদিকে বাজেট পেশের দিনই শেয়ার বাজারে ক্রমেই নিচের দিকে নামতে থাকে আদানি সংস্থার শেয়ার। সেই দিনই ফলো আপ পাবলিক অফার (FPO) প্রত্যাহার করে নেয় আদানি গোষ্ঠী। এই নিয়ে বৃহষ্পতিবার উত্তাল হল সংসদ ভবন। আদানির এফপিও প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে নিয়ে তুমুল হৈ-হট্টগোল হয়। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে (Mallikarjun Kharge) বলেন, 'হয় যৌথ সংসদীয় কমিটি বানিয়ে গোটা বিষয়টির তদন্ত করা হোক, নয়তো সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি কমিটি বানিয়ে তদন্ত করুন।এর সঙ্গে বামপন্থী দলগুলোর মূল তদন্তের সঙ্গে দাবি প্রত্যেক দিনের রিপোর্ট পেশ করতে হবে। একের পর এক শিল্পপতিরা দেশের টাকা নিয়ে বিদেশের মাটিতে পালিয়ে যাচ্ছে। আর তাঁদের সেফ করিডরকরে দিচ্ছে বিজেপি। দেশের মানুষ যাঁরা ব্যাঙ্ক বা এলআইসিতে টাকা রেখেছেন, তাঁদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।

যদিও বিরোধীদের এই দাবিকে মানেননি লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকর বিরোধীদের আনা সব প্রস্তাব মুলতুবি রাখেন। সরকারের এই অনমনীয় মনোভাবের ফলে ভবিষ্যতে বিপর্যয়ের মুখে পড়বে দেশের অর্থনীতি বলে মত বিরোধীদের।

লেনদেন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সংস্থা সিএলএসএর (CLSA) দেওয়া তথ্য অনুয়ায়ী, গত তিন-চার বছরে আদানি গোষ্ঠীর পাঁচটি সংস্থার ঋণের পরিমাণ বিপুল। বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ ৭০ থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকার মতো ছিল ২০২২ সালে। তবে ভারতের ব্যাঙ্কগুলি থেকে গত তিন বছরে আদানি গোষ্ঠীকে ১৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ দেওয়া হয়েছিল বলে এখনও পর্যন্ত তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে সিএলএসএ।

Comments :0

Login to leave a comment