CBI ENQUIRY JUVENILE DEATH

বন্দি কিশোরের মৃত্যুর তদন্তে সিবিআই,
মারাত্মক অভিযোগ মায়ের

জেলা

CBI ENQUIRY JUVENILE DEATH কোচবিহারে মৃত নাবালকের বাড়িতে সিবিআই আধিকারিকরা।

বিচারাধীন কিশোরের দেহ উদ্ধার হয়েছিল ১৫ ডিসেম্বর। পুলিশ জানিয়েছিল, লাবু ইসলামের গলায় ফাঁস ছিল। ঘটনায় সিবিআই তদন্তে দাবি জানিয়েছিল মৃত কিশোরের পরিবার। সেই আবেদন মঞ্জুর করে কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ। তদন্তে নেমে সংশ্লিষ্ট পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে কথাও বলেছে সিবিআই। দায়ের হয়েছে অভিযোগ। 

সিবিআই এদিন কথা বলে মৃত কিশোরের পরিবারের সঙ্গে। পরে তার মা সংবাদমাধ্যমে অভিযোগ করেন যে ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে হোমে। তাকে নিয়মিত মারধর করা হতো। মায়ের অভিযোগ, হোমে জানানো হয়েছিল। কাজ হয়নি। উলটে তাঁর কাছে দেড় লক্ষ টাকা চাওয়া হয়। তিনি টাকা দিতে পারেননি বলে ছেলের বিরুদ্ধে গাঁজা পাচারের অভিযোগ দেয় পুলিশ। 

আদালতে পরিবার অভিযোগ জানানোর পর দুই বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এবং রাই চট্টোপাধ্যায়ের বেঞ্চ এই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় ৯ ফেব্রুয়ারি। পুলিশের তদন্তে নানা অসঙ্গতি ধরা পড়ে। তার প্রকৃত বয়স ১৭ হলেও ময়না তদন্তের রিপোর্টে বয়স ৩৪ লেখা হয়। ময়না তদন্ত একজন ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হওয়ার কথা থাকলেও এক্ষেত্রে তা হয়নি বলে অভিযোগ। 

বেঞ্চের নির্দেশ, কবর থেকে দেহ তুলে ফের ময়না তদন্ত করতে হবে সিবিআইকে। ১৩ মার্চের মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট দেওয়ার জন্য সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতিরা। জানা গিয়েছে, ফের ময়না তদন্ত করবে সিবিআই। 

লাবু ইসলাম যে ঘটনায় বিচারাধীন ছিল তা কোচবিহারের। এই জেলায় অপ্রাপ্তবয়স্ক বিচারাধীন বন্দি রাখার হোম না থাকায় পাঠানো হয় জলপাইগুড়ির কোরক হোমে। ১৫ ডিসেম্বর তার দেহ উদ্ধার হয় হোম থেকে। 

তদন্তে গাফিলতির জন্য আদালতের কড়া ভর্ৎসনার মুখে পড়ে পুলিশ। তদন্তে একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়ে। বিচারপতিদের প্রশ্নের স্বচ্ছ জবাব দিতে পারেননি তদন্তকারী আধিকারিক। 

মঙ্গলবার কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের টাপুরহাট এলাকায় মৃত কিশোরের মা এবং  পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে সিবিআই। প্রায় ৩ ঘন্টা কথা বলেন সিবিআইর আধিকারিকরা। 

পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতে ৯ ফেব্রুয়ারি এই মৃত্যুতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের এই ডিভিশন বেঞ্চ। ১০ তারিখেই জলপাইগুড়িতে এসে পৌঁছায় সিবিআই। জলপাইগুড়ি থানা থেকে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সহ ৭পাতার রিপোর্ট সংগ্রহ করেন সিবিআইর আধিকারিকরা। 

মৃত কিশোর লাবু ইসলামের মা গুরুতর অভিযোগ এনেছেন এদিন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, তাঁর নাবালক ছেলে একটি মারপিটের ঘটনায় জড়িয়ে পড়েছিল। এরপর কোচবিহার কোতোয়ালি থানার পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে আসে। বারবার সংশ্লিষ্ট থানায় যোগাযোগ করা হলে পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে বলা হয় তিনি দেড় লক্ষ টাকা পুলিশের হাতে তুলে দিলে, পুলিশ তার নাবালক ছেলেকে ছেড়ে দেবে। তিনি জানান যে তাঁর পক্ষে এত টাকা জোগার করা সম্ভব নয়। পরে তিনি জানতে পারেন ছেলের বিরুদ্ধে গাঁজা পাচারের মামলা দিয়েছে পুলিশ।

 

তাঁর আরও অভিযোগ, জলপাইগুড়ি কোরক হোমে ছেলেকে পাঠানোর পর প্রতি সপ্তাহে যেতেন দেখা করতে। ছেলের তাঁকে বলেছিল যে মারধর করা হতো। এই হোমের আবাসিকদের মধ্যে কয়েকজন তার ওপর অত্যাচার চালাতো, তার পেটে কামড় পর্যন্ত বসিয়ে দিয়েছিল তারা। বিষয়টি হোম কর্তৃপক্ষকে জানালেও কাজ হয়নি। মায়ের অভিযোগ, ছেলেকে হোমেই নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। 

 

Comments :0

Login to leave a comment