Brigade Rally

বিভেদের রাজনীতি, ট্রাম্প তোষণ নীতি মোকাবিলার ডাকও দেবে ব্রিগেড

রাজ্য ব্রিগেড

বাঁশদ্রোণীতে ব্রিগেডের প্রচারে মিছিল।

২০১১’র পর থেকে রাজ্যে কমেছে কৃষির উৎপাদনশীলতা। লাফিয়ে বাড়ছে চালের দাম। আবার আমেরিকার চাপ মেনে কৃষির সর্বনাশের দিকে এগচ্ছে দেশের সরকার। এই নীতি প্রতিরোধের আহ্বানও জানাবে ব্রিগেড সমাবেশ।
২০ এপ্রিল, রবিবার, শ্রমিক-কৃষক-খেতমজুর-বস্তিবাসী আন্দোলনের ডাকে সমাবেশ ব্রিগেডে। তার আগে, শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন সিআইটিইউ, সারা ভারত কৃষকসভা, সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়ন এবং পশ্চিমবঙ্গ বস্তি উন্নয়ন সমিতির নেতৃবৃন্দ। তাঁরা জানিয়েছেন বিভেদের রাজনীতিকে প্রতিরোধের স্বর তীব্র করবে এই সমাবেশ। শ্রমজীবীর ঐক্য গড়ে বিভেদের বিরুদ্ধে গড়তে হবে বাধার প্রাচীর। 
কৃষক সভার রাজ্য সম্পাদক অমল হালদার বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট যে পশ্চিমবঙ্গে কৃষির উৎপাদনশীলতা ব্যাপকভাবে কমেছে। ২০১১ সালের নির্বাচনে বামফ্রন্ট পরাজিত হয়। সরকারে আসীন হয় তৃণমূল কংগ্রেস। বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে  ধান চাষে গোটা দেশে প্রথম ছিল রাজ্য। আলুতে ছিল দ্বিতীয়। শাক সবজিতেও পশ্চিমবঙ্গ ছিল প্রথম। এখন রাজ্য ধান চাষে দেশে কার্যত চতুর্থ। তেলেঙ্গানা প্রথম, দ্বিতীয় পাঞ্জাব, তৃতীয় উত্তরপ্রদেশ।’’ 
হালদার বলেছেন, ‘‘উৎপাদনশীলতা না বাড়লে মানুষ খেতে পাবেন না। এমনিতেই অন্যান্য কাজে কৃষি জমি ব্যবহার হচ্ছে। ফলে জমি পিছু উৎপাদনের হার বাড়ানো জরুরি। তা নিয়ে রাজ্য সরকারের কোনও চিন্তা ভাবনা নেই বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে তৈরি পরিকাঠামো ধ্বংস করে দিচ্ছে তৃণমূল সরকার।’’
হালদার বলেছেন যে রাজ্যের মানুষ ভাত খান। ধানের উৎপাদনশীলতা না বাড়লে পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হবে। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বামফ্রন্টের সময়ের বীজ গবেষণাগারের পরিকাঠামো ধ্বংসের পথে। কেবল কয়েকজন চুক্তিভিত্তিক কর্মীকে বসিয়ে রাখা হয়েছে বীজ খামার কেন্দ্রগুলিতে। সমাবয় থেকে সার মিলত কৃষকদের। এখন খোলা বাজার থেকে সার কিনতে হচ্ছে চড়া দামে।’’ 
আমেরিকার উপরাষ্ট্রপতি জেডি ভ্যান্স আসছেন ভারতে। রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প চড়া শুল্ক চাপিয়ে ভারতকে নতিস্বীকার করাতে চাইছে। কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার সেই চাপ মেনে নেওয়ার দিকে এগচ্ছে। ভারতের বাজার কৃষি বহুজাতিকের জন্য খুলে দিতে চাপ দিচ্ছে আমেরিকা।
হালদার বলেন, ‘‘আমেরিকায় রপ্তানি হবে দেশের কৃষিপণ্য। ওরা আমদানি শুল্ক চড়া হারে চাপিয়েছে। উলটে ওদের কৃষিপণ্য অবাধে ঢুকবে ভারতে। আমাদের কৃষকরা বাঁচবেন না। মোদী সরকার কৃষি বিপণন নীতি কাঠামোর খসড়া করেছে। দেশ-বিদেশের বহুজাতিকদের হাতে কৃষি বাজার তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা পাকা করছে। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা বিপুলভাবে বিঘ্নিত হবে। আমরা ব্রিগেড থেকে দাবি জানাবো সরকারের কাছে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর জন্য।’’
খেতমজুর ইউনিয়নের রাজ্য সভাপতি তুষার ঘোষ বলেন, "কৃষি আজ বিপন্ন। কৃষি ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান নেই। পশ্চিমবঙ্গের গ্রামাঞ্চল বিপন্ন হচ্ছে। পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ছে। তেলেঙ্গানার বিপুল এলাকায় ধান কাটার কাজ করেন এ রাজ্যের কৃষকরা। বিজেপি সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে এই রুটি রুজির লড়াইকে লঘু করে দিচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি’র সাম্প্রদায়িক রাজনীতির পাশাপাশি মমতা ব্যানার্জির বিভেদকামী রাজনীতির বিরুদ্ধে ২০ এপ্রিলের ব্রিগেড হবে।’’

Comments :0

Login to leave a comment