‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের বর্ষপূর্তিতে ডাকা হয়েছে মিছিল। মুম্বাইয়ে সেই মিছিলেই নিষেধাজ্ঞা জারি করল পুলিশ। কেবল তাই নয়, মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর প্রপৌত্র তুষার গান্ধীকে আটকও করল মহারাষ্ট্রের পুলিশ।
গান্ধীবাদী সমাজকর্মী এবং ইতিহাসবিদ তুষার গান্ধী নিজেই টুইট করে এই বৃত্তান্ত লিখেছেন। পুলিশ প্রশ্নের মুখে পড়ে জানিয়েছে যে তুষার গান্ধী মিছিলে যোগ দিয়েছেন।
মহারাষ্ট্রে বিজেপি এখন সরকারে। শিবসেনা এবং এনসিপি’র অংশ ভাঙিয়ে জোট সরকার চলছে রাজ্যে।
তুষার গান্ধী লিখেছেন, ‘‘৯ আগস্ট ভারত ছাড় দিবসের কোন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে এই প্রথম পুলিশের বাধার মুখে পড়লাম। মহাত্মা গান্ধী এবং তাঁর অনুগামীরা ব্রিটিশ শাসনে এই দিনেই গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।’’
এদিন ‘ভারত ছাড় দিবস’ পালনে গিরগাঁও চৌপথি থেকে আগস্ট আজাদ ক্রান্তি ময়দান অভিমুখে মিছিলের ডাক দেয় বিভিন্ন সংগঠন। এই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা সমাজকর্মী এবং সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী তিস্তা শেতলবাদেরও। বুধবার সকাল থেকে ধরপাকড় শুরু করে দেয় মুম্বাই পুলিশ। একাধিক সমাজকর্মীকে গ্রেপ্তার করে। ১৯৪২ সালে মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর নেতৃত্বে ব্রিটিশের বিরুদ্ধে এই দিন শুরু হয়েছিল আন্দোলন।
‘ভারত ছাড় দিবস’-এ এবার স্লোগান তোলা হয় ‘ঘৃণা ভারত ছাড়, ভালবাসা দিয়ে ভারত জোড়ো।’ স্পষ্টতই ঘৃণা এবং বিদ্বেষ ছড়ানোর রাজনীতিকেই লক্ষ্য বানানো হয়েছে। বিজেপি এবং আরএসএস এই স্লোগানে অসন্তুষ্টও।
গান্ধী জানিয়েছেন, বুধবার সকাল পৌনে আটটা নাগাদ বাড়ি থেকে বের হন তিনি। সামনেই ছিল সান্তা ক্রুজ থানার বাহিনী। পুলিশ বলে যে মিছিলের অনুমতি বাতিল করা হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে এই সিদ্ধান্ত। ফলে তিনি মিছিলে যেতে পারবেন না।
তুষার গান্ধী বলেছেন, ‘‘সমাজে ভয় ছড়ানোর চেষ্টা কেমন চলছে স্পষ্ট বোঝা যায়। সান্তা ক্রুজ থানা থেকে আমাকে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হলে রিক্সায় বান্দ্রা পৌঁছাই। সেখানে একটি ট্যাক্সি ভাড়া করতে যাই। চালক মুসলিম। তিনি বললেন, ‘আমাকে দয়া করে ফাঁসাবেন না।’ অনেকটা সময় ধরে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে হলো।’’
এরপরই তুষার গান্ধী বলেছেন, ‘‘নফরৎ (ঘৃণা) ভারত ছাড়, মহব্বত (ভালবাসা) দিয়ে হৃদয় জোড়ো। আজ এ কথা বলা খুব জরুরি।’’
Comments :0