Bangla Bachao Jatra

উপার্জনের উপায় নেই, বাড়ছে বাল্য বিবাহ

রাজ্য বাংলা বাঁচাও যাত্রা

রাণীনগর সমাবেশের মহিলারা। ছবি: অনির্বাণ দে

“পড়িয়ে কী হবে, এটাই চিন্তা হয়ে গেছে। তাই তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে মেয়েদের।”
ভগবানগোলা থেকে রানিনগরের পথে জানালেন কুসুম খাতুন। কথাটা বারবার আসছে, আঠারো না পেরোতেই বিয়ে হয়ে যাচ্ছে মেয়েদের। সিপিআই(এম)’র বাংলা বাঁচাও যাত্রা-র পথে পথে কথা হচ্ছে তা নিয়ে। 
কুসুম সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির কর্মী। মেয়ে রয়েছে তাঁর নিজেরও। বললেন,  
“আমি চাই মেয়েটা পড়াশোনা করুক। এটুকুর জন্য যে নিজের ভালো মন্দ বুঝবে। কিন্তু কোনো কাজ পাবে কিনা সত্যিই জানি না।”
কুসুম নিজে স্নাতকোত্তর। তাঁর মত, সরকারি নিয়োগ বন্ধ। নিয়োগ দুর্নীতি সব অংশকেই হতাশ করছে। বেশি প্রভাব পড়ছে মেয়েদের ওপর।
মেয়ে ক্লাস সেভেনের ছাত্রী  তাহারিনা নাসরিন। কথা বলে খুব কম। সে জানালো একেবারেই অন্য সমস্যার কথা। ওদের স্কুলে বাথরুমের অবস্থা খুব খারাপ। রোজ নোংরা হয়ে পড়ে থাকে। 
বাহাদুরপুর গার্লস স্কুলের ছাত্রী তাহরিনা। সকাল দশটায় যায় স্কুলে। ছুটি হয় বিকেল চারটেয়।      টানা ছ’ঘন্টা বাথরুমে যাওয়ার উপায় নেই। 
মা কুসুম বললেন, “রোজকার চিন্তা আমাদের, বাড়ির লোকের।”


মেয়েদের বাথরুমের এমন অব্যবস্থা পড়া ছেড়ে দেওয়ার প্রধান কারণ এমন নয়। কিন্তু সমস্যাটা ভয়ঙ্কর। বলছেন, মুরসেলিনা খাতুন। 
মুরসেলিনাও মহিলা আন্দোলনের নেত্রী এলাকায়। তিনি বলেন, “মহিলাদের অনেকের থেকেই সাড়া মিলছে। বাংলা বাঁচাও যাত্রা নিয়েও কথা হয়েছে অনেকের সঙ্গে। মেয়েদের ওপর অত্যাচার, কম বয়সে বিয়ের মতো বিষয় নিয়েও কথা হয়েছে।”
মুরসেলিনা জানিয়েছেন যে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ মহিলাদের মধ্যে একটি বিষয়। তবে বহু মহিলা বলছেন যে তাদের কৃষক পরিবারে ধানের দাম তো মেরে দিচ্ছে তৃণমূল সরকার। সারের কালোবাজারিতে বাড়তি টাকা বেরিয়ে যাওয়া নিয়েও জানিয়েছেন ক্ষোভ। 
মুর্শিদাবাদ জেলার পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি সচ্চিদানন্দ কান্ডারী বলছেন সচেতনতার প্রচার না হওয়া বাল্য বিবাহ বেড়ে যাওয়ার একটি কারণ। 
কান্ডারী বক্তব্য, মুর্শিদাবাদ পশ্চিমবঙ্গের বাল্য বিবাহের হিসেবে ওপরের দিকে। তিনি বলছেন, “দীর্ঘ দিনের সামাজিক রোগ হলো মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দায়মুক্ত ভাবা। সেই সঙ্গে রয়েছে আর্থিক সংকট। বামফ্রন্ট পরিচালিত জেলা পরিষদ নিয়ম করে সচেতনতার প্রচার চালাতো। কমবয়েসে বিয়ে মানে কমবয়সে সন্তান। তারপরে হাই শারীরিক সমস্যা তৈরি হয়। এই ধরনের সচেতনতার প্রচার, প্রশাসনিক উদ্যোগ কোনটাই চোখে পড়ে না।”

Comments :0

Login to leave a comment