অনির্বাণ দে, বহরমপুর
ভগবানগোলায় স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানকে ‘ভয়ঙ্কর রূপ’ দেখাবেন বলে শাসিয়েছিলেন। নির্বাচনী আচরণবিধিকে উড়িয়ে হরিহরপাড়ায় সভা করে আবার উপহারও বিলালেন মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী আবু তাহের খান।
তৃণমূল প্রার্থীর এই আচরণের নিন্দা করেছেন মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে সিপিআই(এম) প্রার্থী মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেছেন, ‘‘জনসমর্থনে ধস নামছে। প্রত্যাখ্যানের ভয়েই এসব করা হচ্ছে। ২০১৮’র পঞ্চায়েতের স্মৃতি উস্কে দিচ্ছেন তৃণমূল প্রার্থী।’’
প্রকাশ্য সভায় শাসানি এবল উপহার বিলানোয় অভিযোগ জানানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনে। ভোট ঘোষণার পর নির্বাচনী আচরণ বিধি জারি হয়ে গেলে কোনও রাজনৈতিক দল বা প্রার্থী ভোটদাতাদের প্রভাবিত করার চেষ্টায় উপহার বিলাতে পারেন না।
সোমবার হরিহরপাড়ায় একটি বেসরকারি অডিটোরিয়ামে সভা করেন আবু তাহের খান। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আইজুদ্দিন মণ্ডল। তৃণমূলের শাখা সংগঠন অল বেঙ্গল ইমাম মুয়াজ্জিম অ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড চ্যারিটেবল ট্রাস্ট-এর মুর্শিদাবাদ জেলা কমিটির নামে এই সভা ডেকে প্যাকেটে করে বিলানো হয় উপহার। ধর্মীয় বিদ্বেষপূর্ণ ভাষণও শোনা গিয়েছে মুর্শিদাবাদের বিদায়ী সাংসদ আবু তাহের খানের মুখে।
সেলিম বলেন, ‘‘মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের পরিসর খর্ব করবার চেষ্টা করছেন তিনি। ধস আটকানোর ব্যর্থ প্রচেষ্টায় নেমে তিনি মুর্শিদাবাদ জেলার ইতিহাসের অন্যতম কালো অধ্যায়, ২০১৮’র পঞ্চায়েত নির্বাচনের হিংসা ও তান্ডবলীলার স্মৃতিকে উস্কে দিচ্ছেন”।
নিন্দা জানিয়ে সিপিআই(এম) ভগবানগোলা এরিয়া কমিটির সম্পাদক কামাল হোসেন বলেন, ‘‘বিদায়ী সাংসদের দুঃখ প্রকাশ করা উচিত। উনি একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে কদর্য ভাষায় হুমকি দিয়ে ভগবানগোলার মানুষকে অপমান করেছেন। এর প্রতিবাদে একসঙ্গে পথে নামবে সিপিআই(এম) এবং কংগ্রেস।’’
রবিবার আবু তাহের পঞ্চায়েত প্রধানকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, ‘‘তুমি সাবধান হয়ে যাও। নির্বাচনের পরে বড় ভয়ঙ্কর রূপ আমাদের হবে। সেদিন কিন্তু তুমি চেষ্টা করেও আর এদিক ওদিক করতে পারবে না।’’ দলের কাছে আত্মসমর্পন করার জন্য সাত দিন সময়ও বেঁধে দেন আবু তাহের খান!
প্রতিবাদে সরব হন হাবাসপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তসলিমা বিবিও। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন তসলিমা বিবি। তিনি বর্তমানে কংগ্রেস ও সিপিআই(এম) পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান।
সেলিম বলেছেন, ‘‘আমরা এতদিন দেখতাম নেতা-সাংসদরা গুন্ডাবাহিনীকে কাজে লাগিয়ে ভোট লটঠ করছে। আজ দেখলাম এক বিদায়ী সাংসদ হতাশাগ্রস্ত হয়ে নিজে গুণ্ডার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। তবে হিংসাকে হাতিয়ার করে মহিলা অঞ্চল প্রধানকে ভয় দেখিয়ে ভোট লুট করতে পারবেন না। মুর্শিদাবাদের মানুষ প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন।’’
সেলিম বলেন, ‘‘নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে লুট করা টাকা দিয়ে গুণ্ডাবাহিনী কন্ট্রোল করার চেষ্টা হচ্ছে। উপহার-উপঢৌকন বিলি করে মানুষের আনুগত্য কেনার চেষ্টা হচ্ছে। এই রাজনীতি মানুষ আস্তাকুড়ে ছুঁড়ে ফেলবেন।’’ নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে সেলিম বলেন, ‘‘ আশা করব হিংসাত্মক ও উস্কানিমূলক আচরণের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’
TMC MURSHIDABAD MD SALIM
হুমকি-উপহার বিলি তৃণমূল প্রার্থীর, ‘প্রত্যাখ্যানের ভয়’, বলছেন সেলিম
×
Comments :0