Assembly election

কংগ্রেস বিজেপি’র সরাসরি লড়াই তিন রাজ্যে

জাতীয়

রাজনৈতিক মহলে যথেষ্ট আগ্রহ ছিলই। সোমবার সাংবাদিক সম্মেলন করে ভোটের নির্ঘন্ট জানিয়ে দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। ছত্তিশগড়ে দুই দফায় ভোট। বাকি সব রাজ্যে এক দফায় নির্বাচন হবে। ৭ থেকে ৩০ নভেম্বর বিভিন্ন দিনে হবে নির্বাচন ফল ঘোষণা হবে ৩ ডিসেম্বর।

২০২৪র লোকসভা নির্বাচনের আগে বিভিন্ন অংশই মনে করছিল পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের সঙ্গেই হবে লোকসভা ভোট। তা হচ্ছে না। কিন্তু লোকসভা ভোটের আগে এই পর্বের নির্বাচন কংগ্রেস এবং বিজেপি, দুদলই গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার মুখে। রাজস্থান, ছত্তিশগড় এবং মধ্য প্রদেশে লড়াই সরাসরি কংগ্রেস এবং বিজেপির।

 

এই রাজ্যগুলিতে বিধানসভা ভোটের প্রবণতার সঙ্গে যদিও অনেকসময়ই লোকসভার প্রবণতা মেলেনি। ২০১৯র লোকসভা ভোটেও তা দেখা গিয়েছে। কংগ্রেসের ফলাফল বিজেপি বিরোধী মঞ্চ ইন্ডিয়া’-র পক্ষেও গুরুত্বপূর্ণ। 

পাঁচ রাজ্যের মধ্যে কেবল মধ্য প্রদেশে সরকারে আছে বিজেপি। ২০১৮ সালে এই রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয় কংগ্রেস। কমলনাথের নেতৃত্বে সরকার গঠনও হয়। কিন্তু ২০২০ সালের মাঝামাঝি ২২ জন বিধায়ক নিয়ে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। সরকার পড়ে যায়। পিছনের দরজা দিয়ে সরকারে আসীন হয় বিজেপি। অর্থাৎ বলা যেতে পারে জনমতনয় গায়ের জোরে সরকার দখল করেছে বিজেপি।

২৩০ আসন বিশিষ্ট এই বিধানসভায় ২০১৮ সালে কংগ্রেস পায় ১১৪টি আসন, বিজেপির দখলে যায় ১০৯টি এবং সমাজবাদী পার্টি পায় একটি আসন। নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার অনেক আগে থেকেই এই রাজ্যে নিজেদের হারানো জমি উদ্ধার করার জন্য মাঠে নেমে পড়েছে কংগ্রেস। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, রাহুল গান্ধীর মতো একাধিক কংগ্রেস নেতা এই রাজ্যে নিয়মিত সভা করছেন। 

বিধানসভা ভোটকে সামনে রেখে মধ্য প্রদেশে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর অনেক আগে থেকেই চড়া করেছে কংগ্রেস। ১৯ সেপ্টেম্বর মধ্যপ্রদেশের ২৩০টি বিধানসভা কেন্দ্র জুড়ে ‘‘জন আক্রোশ’’ যাত্রা করেছে কংগ্রেস। মধ্য প্রদেশের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। সেই সব কিছুকে হাতিয়ার করে এবার ভোটে নামতে চাইছে কংগ্রেস।

অন্যদিকে কংগ্রেসের দখলে থাকা রাজস্থান এবং ছত্তিশগড়ে বিগত পাঁচ বছরে দলের গোষ্ঠী কোন্দল বিভিন্ন সময়ে মাথাচাড়া দিয়েছে। গত বিধানসভা নির্বাচনে রাজস্থানের ২০০ টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস পায় ১০৮টি আসন, বিজেপি ৭০, সিপিআই(এম) ২, আরএলডি ১, নির্দল ১৩ অন্যান্য ৬। এর মধ্যে থেকে আরএলডি এবং নির্দলদের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করে কংগ্রেস। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে অশোক গেহলটকে এবং শচীন পাইলটের দ্বন্দ্ব ছিলই। মুখ্যমন্ত্রী হন গেহলটই। উপ-মুখ্যমন্ত্রী সচিন পাইলট। সম্প্রতি তিনি নিজের দলের সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে পথে নেমে প্রতিবাদও করেন। অবশ্য কর্ণাটক বিধানসভার ফল ঘোষণার পর প্রকাশ্য বিরোধিতার পথ থেকে তিনি সরে আসেন। বিহারের পর রাজসডথান দ্বিতীয় রাজ্য যেখানে জাতভিত্তিক এবং আর্থ সামাজিক সমীক্ষা করার ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার।

ছত্তিশগড়ে গত নির্বাচনে কংগ্রেসের জয় নির্ণায়ক ছিল। তবে মুখ্যমন্ত্রী ভুপেশ বাঘেল এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রী টিএস সিংহ দেওর দ্বন্দ্ব দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। ২০১৮ সালে এই রাজ্যের ৯০ টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস পায় ৬৮টি, বিজেপি ১৫টি। বাঘেলকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করা হলেও দলের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে বাঘেল আড়াই বছর এই দায়িত্বে থাকবেন, তারপর দায়িত্ব সামলাবেন দেও। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর দাবি, ছত্তিশগড় এবং মধ্য প্রদেশে দলের জয় নিশ্চিত।

এদিন বাঘেল সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, ওই রাজ্যে ফের কংগ্রেসের সরকার হবে। 

তেলেঙ্গানায় বিরোধী দল কংগ্রেস। কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস) সরকারে আসীন। ওই রাজ্যে ২০১৮ সালের ১১৯টি আসনের মধ্যে বিআরএস পায় ৮৮টি আসন, কংগ্রেস পায় ১৯টি আসন, এআইএমএম ৭, টিডিপি ২, বিজেপি ১, ফরওয়ার্ড বল্ক ১ এবং নির্দল ১। 

উল্লেখ্য কয়েকদিন আগে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন টিডিপি প্রধান তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু। 

মেইতেই এবং কুকি সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠা মণিপুরের পরিস্থিতির রেশ পড়েছে মিজোরামে। মণিপুরে সংখ্যালঘু কুকি জো জনগোষ্ঠী। সামাজিক সাংস্কৃতিক সূত্রে আবার মিজোদের সঙ্গে এই জনগোষ্ঠীর সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ। মিজেরামের সরকারে রয়েছে সেখানকার আঞ্চলিক দল মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট। ৪০টি আসনের মধ্যে তারা ২০১৮ সালে পায় ২৬টি আসন, কংগ্রেস পায় ৫টি এবং বিজেপি পায় ১টি মাত্র আসন। 

Comments :0

Login to leave a comment