Sreerampur Loksabha

কর্মসংস্থানেই জোর দীপ্সিতার প্রচার, জুড়ে যাচ্ছেন নতুন মানুষ

রাজ্য লোকসভা ২০২৪

সৌরভ গোস্বামী

একটা সময় শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্র জুড়ে ছিল একাধিক জুটমিল। প্রতিদিন হাজার হাজার কর্মী সেখানে কাজ করতেন। তৃণমূল শাসনে তালা পড়েছে একের পর এক জুটমিলে। কাজের জন্য অন্যত্র যেতে হচ্ছে এলাকার যুবক যুবতীদের। সাংসদ হয়ে এলাকায় নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করা এবং রাজ্যের ছেলে মেয়েদের পরিযায়ী হওয়া বন্ধ করাই হচ্ছে দীপ্সিতা ধরের প্রধান লক্ষ্য।
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী দীপ্সিতা ধর শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রে বামফ্রন্ট মনোনীত সিপিআই(এম) প্রার্থী। দলীয় কর্মী সমর্থকদের নিয়ে গোটা এলাকা চষে ফেলছেন তিনি। বুধবার কোন্ননগর পৌরসভার ৮ এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচার করেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন সিপিআই(এম) হুগলী জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য শ্রুতিনাথ প্রহরাজ, অভিজিৎ চক্রবর্তী সহ জেলা নেতৃত্ব।
এদিন এসসি চ্যাটার্জি স্ট্রিট, রাজরাজেশ্বরী তলা হয়ে রেল বাজারে প্রচার শেষ করেন দীপ্সিতা। সিপিআই(এম) প্রার্থীকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ তৈরি হয়। শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জির বিরুদ্ধে অনেকে ক্ষোভ উগরে দেন। এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘ওনার ব্যবহার খুবই বাজে। কথা বার্তা ভালো না।’’ স্থানীয়দের অভিযোগ, শ্রীরামপুরের যে সংস্কৃতিক ঐতিহ্য তা শেষ করেছে কল্যাণ ব্যানার্জি এবং তৃণমূল। এলাকা জুড়ে সিন্ডিকেটের দাপট সাংসদের মদতে। শাসকদল ঘনিষ্ঠ কোনও ঠিকাদার ছাড়া অন্য কেউ এলাকায় কাজ করতে পারেন না।


রাজরাজেশ্বরী তলায় এদিন সিপিআই(এম) প্রার্থীর সাথে দেখা করার জন্য অপেক্ষা করছিলেন প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক পরে প্রবীর ঘোষাল। প্রবীণ এই সাংবাদিক বিজেপি’তে যোগ দেন পরে। এখন যদিও তাঁর নাম বিশেষ শোনা যাচ্ছে না। তবে এদিন তিনিও দীপ্সিতার সঙ্গে কথা বলেন।
সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দের অভিযোগ, কোন্নগর পৌরসভার যে সব চুক্তিভিত্তিক কর্মী বামপন্থী মনোভাবাপন্ন তাঁদের কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে তৃণমূল সাংসদের নির্দেশে।
সিপিআই(এম) প্রার্থীর মিছিল যখন কোন্নগর পৌরসভা পার করছিল তখন বহু কর্মী পৌরসভা থেকে বাইরে এসে প্রার্থীর সাথে করমর্দন করেন। পৌরসভায় তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে নিজেদের কথা তাঁরা জানান দীপ্সিতাকে। 
বুধবার নবগ্রাম পঞ্চায়েতেও প্রচার করেন দীপ্সিতা। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্যাপক ভোট লুঠ হওয়া সত্ত্বেও মাত্র দশ ভোটে পরাজিত হন বামফ্রন্ট প্রার্থী। তৃণমূলের ভোট লুঠ এবং দুর্নীতি, বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে নিজেদের জনমত জানাতে তৈরি হচ্ছেন তারা এমনটাই জানাচ্ছেন গ্রামের মানুষজন। 
শ্রীরামপুরের বিজেপি প্রার্থীকে নিয়েও মানুষের মনে সংশয় আছে। এই প্রার্থী কবীর শঙ্কর বসু সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জির ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তাঁকে এবার প্রার্থী করেছে বিজেপি। কেবল এই কারণেই নয়, বাসিন্দারা তাঁকে ভরসা করতে পারছেন না তৃণমূল যোগের অন্যান্য তথ্য বেরিয়ে আসায়।
স্থানীয়দের মধ্যে কথা রয়েছে যে বিজেপি প্রার্থীর বাবা মুখ্যমন্ত্রীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। বিশ্ব বাণিজ্য সম্মেলনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। স্থানীয় বিজেপি কর্মীদের মধ্যেও প্রার্থী নিয়ে বিস্তর ক্ষোভ আছে বলে জানা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মানুষ তাদের সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন দীপ্সিতার দিকে।

Comments :0

Login to leave a comment