শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হলো ‘গণশক্তি’-র শারদ ও বিশেষ সংখ্যার সূচি। কমরেড মুজফ্ফর আহ্মদের জন্মদিনে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এই পঞ্জির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেছেন। ‘শারদ ও বিশেষ সংখ্যার প্রকাশিত রচনার সূচি ১৯৬৭-২০২২’ গণশক্তি ভবনে মুজফ্ফর আহ্মদের পাঠাগারের তরফে প্রকাশ করা হয়েছে।
১৯৬৭ সাল থেকেই বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করে এসেছে ‘গণশক্তি’। ১৯৯১ সাল থেকে নিয়মিত প্রকাশিত হয়েছে শারদ সংখ্যা। শারদ সংখ্যার প্রকাশনা শুরু হওয়ার কয়েক বছরের মধ্যেই তাতে স্থান পায় শিশু সাহিত্যের নানা বিভাগ। শারদ সংখ্যার ব্যাপ্তি এবং পরিধিও বৃদ্ধি পায়।
কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই পাঠক মহলের চাহিদা ছিল পুরানো বিশেষ সংখ্যাগুলির লেখা কিংবা বিগত দিনের শারদ সংখ্যাগুলির লেখা সংগ্রহ করার বিষয়ে। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ সঙ্কলন না থাকায় মুজফ্ফর আহ্মদ পাঠাগারে এসে এই লেখাগুলির বিষয়ে খোঁজ করে পূর্ণাঙ্গ তথ্য না পেয়ে নিরাশ হতেন বহু পাঠক ও গবেষক। সেই বিষয়টি বিবেচনা করেই রচনা সূচি প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পাঠাগারের তরফে জানানো হয়েছে, ১৯৬৭ সাল থেকে কখনও ফ্যাসিবাদের পরাজয়, আবার কখনও রুশ বিপ্লব ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করেছে ‘গণশক্তি’। বামপন্থী রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ দলিল বলা চলে এই সংখ্যাগুলিকে। একইভাবে গণশক্তি শারদ সংখ্যার লেখাগুলির রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্বও যথেষ্ট। হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির উত্থান থেকে শুরু করে ভারতীয় সমাজ ব্যবস্থায় নারীর অবস্থানের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে লেখা হয়েছে শারদ সংখ্যায়। রচনা সূচিতে নজর বোলালেই সেই সমস্ত লেখা খুঁজে পাবেন ইচ্ছুক পাঠক।
পাঠাগারের কর্মীরা জানাচ্ছেন, রচনা সূচিতে বিষয়ের পাশাপাশি ঠাঁই পেয়েছে লেখকের নামও। অর্থাৎ কোনও পাঠক যদি গণশক্তি শারদ সংখ্যা কিংবা বিশেষ সংখ্যায় জ্যোতি বসুর কোনও লেখা খুঁজতে চান, তাহলেও একনজরে গোটা তথ্য তিনি পেয়ে যাবেন। এখনও অবধি গণশক্তি শারদ এবং বিশেষ সংখ্যার জন্য কলম ধরা প্রত্যেক লেখকের নাম ঠাঁই পেয়েছে এই রচনা সূচিতে।
এদিন মুজফ্ফর আহ্মদ পাঠাগারে কমরেড মুজফ্ফর আহ্মদের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন প্রবীণ সিপিআই(এম) নেতা বিমান বসু, মহম্মদ সেলিম, শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, অনাদি সাহু, কল্লোল মজুমদার, মিনতি ঘোষ, দীপক দাশগুপ্ত সহ পার্টি নেতৃবৃন্দ। মাল্যদানের পরেই এই রচনা সূচির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন মহম্মদ সেলিম। প্রকাশের পরে বইটি বিমান বসুর হাতে তুলে দেন মহম্মদ সেলিম। গণশক্তি-র সহকারী সম্পাদক অতনু সাহা অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। ছিলেন মুজফ্ফর আহ্মদ পাঠাগারের গ্রন্থাগারিক প্রদোষ কুমার বাগচী সহ পাঠাগারের কর্মীরা।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে কাকাবাবুর জন্মদিন উপলক্ষে মুজফ্ফর আহ্মদ পাঠাগারে বিষয় ভিত্তিক একটি ক্যাটালগ প্রকাশিত হয়। সেই ক্যাটালগে চোখ বোলালেই পাঠক খুঁজে পাবেন ‘গণশক্তি’ পত্রিকায় প্রকাশিত সমস্ত ইস্যু। ধরা যাক, ২০০৯ সালে মাওবাদীদের সন্ত্রাসের উপর প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলি খুঁজছেন কেউ। এই সংক্রান্ত প্রকাশিত সমস্ত খবরের হদিশই তিনি ক্যাটালগে চোখ বোলালে পেয়ে যাবেন। মুজফ্ফর আহ্মদ পাঠাগারের এই নজিরবিহীন উদ্যোগের ফলে বহু সংবাদকর্মী এবং গবেষক উপকৃত হয়েছেন।
Comments :0