YECHURY HOUSEHOLD SAVINGS

গার্হস্থ্য ঋণ চড়া, সঞ্চয় তলানিতে, ক্ষোভ ইয়েচুরির

জাতীয়

গার্হস্থ্য ঋণ দেশের মোট জাতীয় উৎপাদনের ৪০ শতাংশ। আর উলটোদিকে গার্হস্থ্য বা পারিবারিক সঞ্চয় নেমে মোট জাতীয় উৎপাদনের মাত্র ৫ শতাংশে। অর্থনীতির ছবি দেখাচ্ছে এই বাস্তব তথ্য। ‘নতুন ভারত’ আর ‘বিকশিত ভারত’ স্লোগানে ছুঁড়ে দিচ্ছে চ্যালেঞ্জও। 
সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির প্রতিক্রিয়া, ‘‘নরেন্দ্র মোদী সরকার প্রচার চালাচ্ছে যেন মধ্যবিত্তি এবং নিম্নবিত্তের বেঁচে থাকার সমস্যা সব উধাও হয়ে গিয়েছে। তাঁরা যেন বাড়ি-গাড়ির মতো সম্পদ কিনছে। এই ভুয়ো প্রচার চালানো অপরাধের শামিল।’’
সমীক্ষা সংস্থা মোতিলাল অসওয়ালের প্রতিবেদনে গার্হস্থ্য ঋণ এবং সঞ্চয়ের এই তথ্য ধরা পড়েছে। গৃহস্থের কী অবস্থা তা ধরা পড়ে এই প্রতিবেদনে। অর্থনীতিতে পারিবারিক ঋণ এবং সঞ্চয়ের তথ্যকে গুরুত্ব দেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের বক্তব্য, ঋণের মাত্রা বেড়ে চললে খরচে রাশ টানতে বাধ্য হন নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত মানুষ। তার ওপর পারিবারিক স্তরে সঞ্চয় কমতে থাকলে অর্থনীতিতে বিনিয়োগের সমস্যাও হয়। 
পারিবারিক বা গার্হস্থ্য সঞ্চয়ে সমস্যার তথ্য যদিও কেবল এই বেসরকারি সমীক্ষা সংস্থাই জানাচ্ছে না। গত সেপ্টেম্বরে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্যেই সঙ্কট ধরা পড়েছিল। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছিল গার্হস্থ্য নিট আর্থিক সঞ্চয় ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে মোট জাতীয় উৎপাদন বা জিডিপি’র ৫.১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গার্হস্থ্য সঞ্চয়ের এই হার গত ৪৭ বছরে সবচেয়ে কম। 
এই তথ্য সামনে আসার পরই পালটা ভাষ্য হাজির করতে থাকে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। বলা হয়, শেয়ারের মতো আর্থিক সম্পদ জনতা কিনছে না। তার বদলে বাড়ি এবং গাড়ির মতো ‘প্রকৃত’ সম্পদ কিনছে। নিট আর্থিক সঞ্চয় কমে যাওয়ার মানে অর্থনীতির সমস্যা নয়। আসলে জনতা অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। নিজেদের আয় এবং কর্মসংস্থান সম্পর্কে আশাবাদী। সে কারণেই ভরসা রেখে গাড়ি-বাড়ি কিনছে।
এই প্রচারকে পালটা আক্রমণ করেছেন ইয়েচুরি। মোতিলাল অসওয়ালের তথ্যের উল্লেখ করে বলেছেন, ‘‘পারিবারিক বা গার্হস্থ্য সঞ্চয় এবং ঋণের মধ্যে দেশের সবচেয়ে বিত্তশালী অংশের হিসেবও রয়েছে। তার পরও এই অবস্থা। সবচেয়ে বিত্তিশালী অংশকে বাদ দিয়ে ধরলে বোঝা যাবে আমজনতার সঙ্কট কত গভীর। গভীর সমস্যায় রয়েছে মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত সব পরিবার।’’
ইয়েচুরির ব্যাখ্যা, ‘‘মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্তের সারা জীবনের সঞ্চয় খরচ হয়ে যাচ্ছে। বেঁচে থাকার জন্য ধার করতে হচ্ছে। এই সমীক্ষাই সেই অবস্থাই স্পষ্ট।’’

Comments :0

Login to leave a comment