প্রশাসনিক অনুমতি না থাকায় মঙ্গলবার বিকেলের সিপিআই(এম)’র পথসভা স্থগিত রাখা হয় ক্রান্তি বাজারে। পথসভার বদলে হয় কর্মী সভা। মালবাজার মহকুমার ক্রান্তি ব্লকের অন্তর্গত ক্রান্তি বাজারে জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের বামফ্রন্ট মনোনীত ও কংগ্রেস সমর্থিত সিপিআই(এম) প্রার্থী দেবরাজ বর্মনের নির্বাচনী প্রচারের লক্ষ্যে পথসভার আয়োজন করা হয়েছিল সিপিআই(এম) ক্রান্তি এরিয়া কমিটির তরফে। জানা গেছে এদিনের পথসভার জন্য নির্বাচন কমিশনের পোর্টালে আবেদন করা হলেও অনুমতি মেলেনি। অনুমতি না মেলায় পথসভার পরিবর্তে কর্মীসভা হয়। কর্মী সভাতেই বক্তব্য রাখেন শতরূপ ঘোষ।
মঙ্গলবার সকালে শাল সেগুনে ভরা বনবস্তীতে নির্বাচনের মাদল বাজিয়ে দিলেন জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের সিপিআই(এম) প্রার্থী দেবরাজ বর্মন। এদিন সকাল ১০ টায় প্রার্থী এসে পৌছালেন বনভূমি রক্ষার পটভূমি, অধিকার রক্ষার লড়াইয়ের অগ্রবর্তী ঘাটি মেচবস্তী সাগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন বনরক্ষার সৈনিকরা। প্রার্থী আসতেই তাঁকে পুস্পস্তবক দিয়ে স্বাগত জানালেন প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্যা ও ফরেষ্ট শ্রমিক ইউনিয়নের সক্রিয় সদস্য দীপিকা ওরাও ও জলপাইগুড়ি ফরেষ্ট শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক সমীর ঘোষ। প্রার্থীকে পেয়ে ফরেষ্ট শ্রমিকরা তাদের সমস্যার কথা জানালেন। সে এক বঞ্নার উপাখ্যান। বনবিভাগ কাজ দেয় না। নাই জ্বালানী, ফরেষ্ট আবাসগুলি জীর্ণ। স্কুল ঘর হাতির হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত, চিকিৎসার নুন্যতম সুযোগ নাই। তাদের জীবনযাপন ভঙ্গুর। এর থেকে পরিত্রাণ এনে দেওয়ার আবেদনে সাড়া দিয়ে প্রার্থী তাই বললেন বামপন্থীরা গরীব মানুষের অধিকারের জন্য লড়াই করে। ফরেষ্ট শ্রমিকদের দুর্দশার কথা, নির্বাচনে জেতার পর সংসদে তুলবেন। শ্রমিক ফ্রন্টের জন্য লড়াই হবে। এর পর প্রার্থীর সাথে পদযাত্রায় সামিল হলেন বনবস্তীর বাসিন্দারা। হাটলেন সিপিআই(এম) নেতা আশীষ সরকার, আবেদ আলী, সমীর ঘোষ, জগন্নাথ অধিকারী প্রমুখ। রাস্তার দুধারের মানুষ দাঁড়িয়ে হাত মেলালেন প্রার্থীর সঙ্গে। ষোলঘড়িয়া বনবস্তীতে পদযাত্রায় মীরা শৈব প্রার্থীকে মাথায় হাত দিয়ে আশীর্বাদ করলেন। মানুষের ভালবাসা নিয়ে, প্রত্যাশা, নিয়ে প্রার্থী রওনা হলেন ক্রান্তি পার্টি অফিসে কর্মীসভায়। সেখানে সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন, রাজ্যের তৃণমূল ও কেন্দ্রের বিজেপি দুই সরকারই দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এলাকায় বিজেপি প্রার্থী জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু তারপর এলাকায় কোন উন্নয়নমূলক কাজকর্ম তিনি করতে পারেননি। পাশাপাশি রাজ্যের বর্তমান সরকারের নেতা-মন্ত্রীরা নিজেদের আখের গোছাতেই ব্যস্ত। তারা সাধারণ মানুষের জন্য কি কাজ করেছেন? তিনি জানিয়েছেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন পোর্টালের মাধ্যমে আবেদন জানানোর কথা বললেও রাজ্যের প্রশাসনের যে আধিকারিকরা নির্বাচনী কাজে যুক্ত রয়েছেন তাদের একাংশ শাসকদলের অঙ্গুলিহেলনে কাজ করছেন। তারই ফলে এদিনের অনুমতি পাওয়া যায়নি’’।
তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যের সাধারণ মানুষ তৃণমূল ও বিজেপি উভয় সরকারেরই কার্যকলাপ সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল। আসন্ন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মানুষ তার জবাব দিয়ে দেবেন’’।
Comments :0