নিজের সহযোগী কর্পোরেট পুঁজিপতিদের ১৬ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ মুকুব করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প চালু রাখতে বছরে ৬৫ হাজার কোটি টাকা খরচ হয় সরকারের। সরকার বলছে ১০০ দিনের কাজ চালু রাখার টাকা নেই, কিন্তু সেই প্রকল্প ২৪ বছর ধরে চালাতে যা খরচ হত, সেই পরিমাণ টাকার ঋণ মুকুব করতে সরকারের কোনও অসুবিধা হলনা। আসলে মোদী সরকার ২০-২৫জন পুঁজিপতির স্বার্থ দেখে চলেছে গত ১০ বছর ধরে।
সোমবার মধ্যপ্রদেশের শাহডোলে নির্বাচনী জনসভা করেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। সেই সভা থেকে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে আক্রমণ করে এমনটাই বলেন রাহুল। একইসঙ্গে আদিবাসী মানুষের হাতে জল, জমি ও জঙ্গলের অধিকার তুলে দেওয়ার প্রশ্নেও সরব হন তিনি।
রাহুল বলেন, কৃষক, ছাত্ররা কৃষিঋণ কিংবা স্টুডেন্ট লোন মুকুবের দাবি জানালে সরকার বলে সম্ভব নয়। কিন্তু ভারতের পুঁজিপতিদের সুবিধা করে দিতে সদা তৎপর তিনি। ভারতে এই মুহূর্তে ২২জন এমন ব্যক্তি রয়েছেন, যাঁদের মোট সম্পদের পরিমাণ দেশের ৭০ কোটি মানুষের সম্পদের সমান। নরেন্দ্র মোদী পুঁজিপতিদের আর্থিক সহায়তা দিতে পারে, তাহলে কংগ্রেসও মহিলা, আদিবাসী, ছাত্র, আর্থ সামাজিক ভাবে পিছিয়ে থাকা অংশের মানুষকে আর্থিক সহায়তা করবে।
বিশ্ব বানজারা দিবসের দিনে রাহুলের পাশাপাশি ছত্তিশগড়ের বস্তারে জনসভা করেন নরেন্দ্র মোদী। প্রসঙ্গত, ছত্তিশগড়ের ফুসফুস হিসেবে পরিচিত হাসদেও অরণ্যকে আদানির হাতে তুলে দিয়েছে বিজেপি। বিপুল পরিমাণ বনভূমি ধ্বংস করে সেখানে কয়লা খাদান তৈরি করবে আদানি গোষ্ঠী। সেই প্রেক্ষাপট টেনে এনে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেছেন, জল জমি জঙ্গল রক্ষার কথা শুধু মুখেই বলে বিজেপি। কংগ্রেস হাসদেও জঙ্গল ধ্বংস করে ৪০টি কয়লা খাদান তৈরির প্রস্তাব বাতিল করেছিল বলে বিপুল জীব বৈচিত্রে ভরা এই অরণ্য রক্ষা করা গিয়েছিল। আদানি গোষ্ঠীকে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার মুনাফা পাইয়ে দিতে সেই জঙ্গল ধ্বংস করার ব্লু প্রিন্ট বানিয়েছে বিজেপি।
রাহুলও এদিন বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেছেন, ভারতে ২টি বিচারধারার লড়াই চলছে। বিজেপি আদিবাসী মানুষকে কেবলমাত্র বনবাসী হিসেবে চিহ্নিত করে, অনুন্নত আদিম মানুষ, যাঁরা জঙ্গলে থাকেন। আমরা আদিবাসী বলি, কারণ আমরা মনে করি তাঁরাই ভারতের আদি বাসিন্দা। দেশের জল, জমি এবং জঙ্গলের অধিকার তাঁদের। কিন্তু বিজেপি মনে করে বনবাসীদের জল, জমি এবং জঙ্গলের পাওয়া উচিত নয়। কারণ সেই অধিকার অর্জন এবং ভোগ করার মত ক্ষমতা আদিবাসী মানুষের নেই। সেই কারণেই আদিবাসী মানুষের আপত্তি, আন্দোলন অগ্রহ্য করে দেশের একের পর এক জঙ্গল পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দিচ্ছে বিজেপি।
Comments :0