Siliguri Natya Mela

শিলিগুড়ি নাট্যমেলার উদ্বোধন

জেলা

শিলিগুড়ির সকল নাট্যদলের সম্মিলিত প্রয়াসে ২২তম শিলিগুড়ি নাট্যমেলা ২০২৫—র উদ্বোধন হলো। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দীনবন্ধু মঞ্চে নাট্যমেলার উদ্বোধনের শুরুতেই নাট্যকার কুন্তল ঘোষের লেখা ও পরিচালনায় ‘বাদল ছায়া’ নামাঙ্কিত ছোট দশ মিনিটের অনুনাটক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্ব বাদল সরকারের জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষ্যে শিলিগুড়ি নাট্যমেলার কমিটির পক্ষ থেকে সংক্ষিপ্ত শ্রদ্ধার্ঘ্য জানানো হয়। এরপরেই নাট্য মেলার উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব ও চলচ্চিত্র অভিনেতা দেবদূত ঘোষ। এবারের নাট্যমেলার স্লোগান ‘সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সম্প্রীতির পক্ষে শিলিগুড়ি নাট্যমেলা’। এদিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাট্যমেলার প্রধান উপদেষ্টা অশোক ভট্টাচার্য, নাট্যব্যক্তিত্ব রতন কুমার দাস, নাট্যমেলা কমিটির সভাপতি সভাপতি ড. তপন চট্টোপাধ্যায়, যুগ্ম সম্পাদক পল্লব বসু, জয়দীপ বড়াল প্রমুখ। 
প্রদীপ প্রজ্জ্বোলনের মধ্যে দিয়ে নাট্যমেলার উদ্বোধন করে বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব ও চলচ্চিত্র অভিনেতা দেবদূত ঘোষ বলেন, নয়ের দশকের গোড়া থেকে দীনবন্ধু মঞ্চে নাটক করার সুযোগ হয়েছে আমার। একমাত্র থিয়েটারই হলো সেই মাধ্যম যার মাধ্যমে দেশ ও রাজ্যের বাস্তব অবস্থা উঠে আসে। আমি স্কুল কলেজেও থিয়েটারের পক্ষপাতী। বর্তমান সময়ে দেশ ও রাজ্যের যে অবস্থা সেই পরিপ্রেক্ষিতে থিয়েটারের কাজ দূর দূরান্তের আমাদের সবাইকে ছড়িয়ে দিতে হবে। এ বিষয়ে প্রশাসনিক স্তরে উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত। নাটকে ধারা বজায় রাখতে হবে। সারা পৃথিবী জুড়েই এই সময় শিশুরা মানসিক অবসাদে ভুগছে। মানসিক অবসাদ কাটাতে নাটক ও নাট্য উৎসবের কোন বিকল্প নেই। নাট্য আন্দোলন ও নাটকের প্রতি মানুষের আগ্রহ উঠবে পড়বে। কিন্তু নাট্যকর্মী আমাদের দিশেহারা হলে চলবে না। নাটক ও নাটকের সাথে সব সময় আমাদের সকলকে সংলগ্ন থাকতে হবে। তাহলে এই ধরনের নাটক উৎসব সর্বাঙ্গীন সুন্দর হয়ে উঠবে।  
এদিন নাট্যমেলার উদ্বোধনের প্রথম দিনে শিলিগুড়ির সমস্ত নাটকের দলগুলির কুশিলবদের নিয়ে সম্মিলিতভাবে শিলিগুড়ি নাট্যমেলা সমন্বয় নাম দিয়ে প্রযোজিত রচনা কুমার দাস, আবহ কুন্তল ঘোষ, পল্লব বসুর সম্পাদনা ও নির্দেশনায় উদ্বোধনী নাটক ‘ফুটুস’ মঞ্চস্থ হয়। 
প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও শিলিগুড়ি নাট্যমেলা সম্মাননা ২০২৫ প্রদান করা হবে শিলিগুড়ির বর্ষিয়ান  নাট্য ব্যক্তিত্ব রতন নন্দীকে। এছাড়াও রত্না ভট্টাচার্য স্মৃতি সম্মাননা প্রদান করা হবে শিলিগুড়ির নাট্য বন্ধু পম্পা কর্মকারকে। নাট্যমেলা চলাকালীন আগামী ৭ জানুয়ারি এই পুরস্কার গুলি তুলে দেওয়া হবে।এদিনের অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত ভাষন দেন পল্লব বসু। অনুষ্ঠানে নাট্য ব্যক্তিত্বদের হাতে স্মারক শুভেচ্ছা তুলে দেওয়া হয়।  উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন নাট্যমেলা কমিটির সভাপতি সভাপতি ড. তপন চট্টোপাধ্যায়। প্রথমদিনেই অসংখ্য দর্শক দর্শকাসনে বসে নাটক দেখেছেন।
নাট্যমেলার পরবর্তী দিনগুলিতে ৩জানুয়ারি হবে গৌতম হালদার অভিনয় ও নির্দেশনা এবং নয়ে নাটুয়া প্রযোজনায় রতন কুমার দাসের নাটক ‘দুসরা’। ৪জানুয়ারি হবে কোলকাতার উষ্ণিক প্রযোজিত নাটক ‘ভূত’। নির্দেশনায় ঈশিতা মুখোপাধ্যায় এবং অভিনয় কেন্দ্রে রয়েছেন দেবশঙ্কর হালদার ও শুভাশীষ মুখার্জি। ৫জানুয়ারি কোলকাতার টুইস্ট প্রযোজিত এবং বিপ্লব বন্দোপাধ্যায়ের নির্দেশনায় রতন কুমার দাসের নাটক ‘বনস্পতির ছায়া’ হবে। অভিনয়ে থাকবেন দেবশঙ্কর হালদার। ৬জানুয়ারি হবে কোলকাতার ইচ্ছেমতো প্রযোজিত এবং সৌরভ পালোধীর নির্দেশনায় উৎপল দত্তের নাটক ‘ঘুম নেই’। ৭ জানুয়ারি চাকদহ নাট্যজন প্রযোজিত এবং সুদীপ্ত দত্ত নির্দেশিত, উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ের নাটক ‘মালা ও মল্টি’ মঞ্চস্থ হবে। অভিনয়ে থাকবেন সঞ্জীব সরকার ও বিন্দিয়া ঘোষ। ৮ জানুয়ারি নাট্য উৎসবের শেষ দিনে বালিগঞ্জ স্বপ্নসূচনা প্রযোজিত ও অতনু সরকার নির্দেশিত সমরেশ মজুমদারের নাটক ‘তিন নম্বর চোখ’ মঞ্চস্থ হবে। ওইদিনই নাট্য মেলার সমাপ্তি হবে।
 

Comments :0

Login to leave a comment