‘‘অধিকাংশ ভারতীয়কে কঠিন বাস্তবের মুখে পড়তে হচ্ছে। কর্মহীনতা আকাশ ছুঁয়েছে। মানুষ কাজ চাইছেন, কিন্তু রেগার বরাদ্দ কমানো হচ্ছে। অপরদিকে খাদ্য পণ্য সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি হয়েই চলেছে। ভারতের আর্থিক বিকাশের সুফল সাধারণ মানুষের জীবনে এসে পৌঁছনো উচিত, তাঁদের জীবনকে আরও সহজ করে তোলা উচিত।’’
নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্যে প্রশ্ন তুলে মঙ্গলবার এক্সে এমনটাই লিখলেন সিপিআই(এম)’র সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। নিজের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে। ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে উন্নত দেশে পরিণত করারও দাবি শোনা গিয়েছে তাঁর গলায়। সেই ভাষ্যকে খারিজ পরে বর্তমান ভারতের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরেছেন ইয়েচুরি।
২০২৪’র লোকসভা নির্বাচনে কোনও কেন্দ্রীয় বক্তব্য বা স্লোগান কিংবা কর্মসূচিকে এখনও হাতিয়ার করে উঠতে পারেনি বিজেপি। প্রধানমন্ত্রীর কথায় ঘুরেফিরে আসছে রাষ্ট্রীয় গরিমার লম্বা চওড়া স্বপ্ন কিংবা হিন্দুত্ব। দক্ষিণপন্থী চেনা ফর্মুলায় সাধারণ মানুষের সামনে ‘লার্জার দ্যান লাইফ’ অবাস্তব কিছু ভাষ্য হাজির করার জোর চেষ্টা করে চলেছে বিজেপি, যার সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই।
ইয়েচুরি বলেছেন, ‘‘ বিজেপির নির্বাচনী ইস্তেহার মোদী গ্যারান্টির দাবিতে গর্জমান। সেই দাবি অনুযায়ী, ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে। কিন্তু বাস্তব হল, মোদী জামানায় ভারতের আর্থিক বিকাশের গতি অনেকাংশে শ্লথ হয়েছে। ২০০৪ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে জিডিপি বৃদ্ধির হার ছিল ১৮৩ শতাংশ। গত ১০ বছরে সেই হার নেমে এসেছে মাত্র ৮৩ শতাংশে। ২০২৭ সাল নাগাদ ভারতের জিডিপি আমেরিকার ৬ ভাগের এক ভাগ এবং চীনের জিডিপি’র পাঁচ ভাগের এক ভাগ হবে।’’
দেশে বৃদ্ধি যাওবা হচ্ছে, তার সুফল শ্রমজীবী অংশ পাচ্ছে না। বৈষম্যের কারণে উপরতলার একটা অংশের কাছে সম্পদ পুঞ্জীভূত হচ্ছে। একাধিক বেসরকারি সংস্থার সমীক্ষায় এই ছবি স্পষ্ট হয়েছে।
সিপিআই(এম)’র এক্স হ্যান্ডেলে তুলে ধরা হয়েছে দেশের মহিলাদের অবস্থার করুণ ছবি। একাধিক ডিজিটাল পোস্টারের মাধ্যমে সিপিআই(এম) বলেছে, ২০১৭-১৮ সালের কেন্দ্রীয় সংস্থা এনএসএসও’র সমীক্ষা জানায়, ৪০ লক্ষ মহিলা কর্মচ্যুত হয়েছেন। সিএমআইই’র ২০২২ সালের তথ্য বলছে, ৮.৮ কোটি মহিলা কাজ চেয়েও কাজ পাচ্ছেন না। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো জানিয়েছে, ২০১৪ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে পুরুষ দিনমজুরদের আত্মহত্যার হার বৃদ্ধি পেয়েছে ১৭০ শতাংশ। মহিলা দিনমজুরদের ক্ষেত্রে সেটা ১৩৭ শতাংশ বেড়েছে।
সিপিআই(এম) বলছে, নোটবন্দীর ফলে ১ কোটি মানুষ কাজ হারিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৮৮ শতাংশ ছিল মহিলা।
Comments :0