UCRC SUJAN CHAKRABARTY

উদ্বাস্তু আন্দোলনের ঐতিহ্য স্মরণে রেখে বিভাজনের শক্তিকে রোখার ডাক

জেলা ব্রিগেড

ব্রিগেড সমাবেশ সফল করতে কোচবিহার শহরে মিছিল ইউসিআরসি-র। রয়েছেন সুজন চক্রবর্তী সহ নেতৃবৃন্দ।

অমিত কুমার দেব : কোচবিহার

বাংলার ভাষা, সংস্কৃতি, জীবন, জীবিকা, পরম্পরা স্মরণে রেখে বিভাজনের শক্তিকে ঠেকানোর শপথ নিতে হবে উদ্বাস্তু আন্দোলনকে।
বৃহস্পতিবার সম্মিলিত কেন্দ্রীয় বাস্তুহারা পরিষদ কোচবিহার প্লাটিনাম জুবিলী উদযাপন কমিটির ‘উদ্বাস্তু আন্দোলন- অতীতের ঐতিহ্য ও বর্তমান চ্যালেঞ্জ‘ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই আহ্বান জানালেন উদ্বাস্ত আন্দোলনের নেতা সুজন চক্রবর্তী।
এদিন কোচবিহার শহরের গুঞ্জবাড়ি ঠাকুর পঞ্চানন বর্মা সভাকক্ষে এই সেমিনারে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক মধু দত্ত, উদ্বাস্তু আন্দোলনের নেতা সুমিত দে, সম্মিলিত কেন্দ্রীয় বাস্তুহারা পরিষদ কোচবিহার প্লাটিনাম জুবিলী উদযাপন কমিটির অন্যতম উপদেষ্টা অনন্ত রায়, সংগঠনের কোচবিহার জেলা সম্পাদক মহানন্দ সাহাও। 
সেমিনার পরিচালনা করেন সুজিত দাস ও খগেন্দ্রনাথ বর্মনকে নিয়ে গঠিত সভাপতিমন্ডলী। এদিন সেমিনার শেষে কোচবিহার শহরে ব্রিগেড সমাবেশকে সফল করার আহ্বান জানিয়ে মিছিল হয়। অংশ নেন বাস্তুহারা উদ্বাস্তু কলোনির বাসিন্দারা।
আলোচনা সভায় সুজন চক্রবর্তী বলেন,  উদ্বাস্তুরা আকাশ থেকে আসেননি।  রাজনীতির ছক এবং চক্রান্তের চাপে পড়ে এই সমস্ত মানুষকে বাস্তহারা হতে হয়েছিল দেশভাগের সময়ে। বাংলার এই বাস্তুহারা পরিবারগুলিকে নিয়ে ছিনিমিনি করা হয়েছে। তৎকালীন দিল্লির সরকার তাদের যথাযথ দায়িত্ব পালন করেননি। এই মানুষই তখন লাল ঝান্ডাকে সঙ্গে রেখে নিজেদেরকে সংগঠিত করে, শক্তি ধরে উচ্ছেদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন। রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার আসার পর তারা নিঃশর্ত দলিল পেয়েছেন। আর এই মুহূর্তে রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার না থাকায় কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার এই উদ্বাস্তু পুনর্বাসন দপ্তর তুলে দিয়েছে। 
সুজন চক্রবর্তী এদিন বলেন, সংখ্যাগুরু হলেই সংখ্যালঘুর ওপর দাপট দেখানোর বরাত পেয়ে যাবে, এই মনোভাব কখনোই ঠিক নয়। এতে সমাজের কোন লাভ নেই, মানুষের কোন লাভ নেই। এতে শুধুই সর্বনাশ। চক্রবর্তী বলেন, আসল সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেন শ্রমজীবী মানুষ। যে দু-চার জন মানুষ এই দেশটাকে ভাগ করতে চায় তারা সংখ্যালঘু। তাই শ্রমজীবী মানুষ, গরিব মানুষের ঐক্যকে সুদৃঢ় করতে হবে।
এদিন সিপিআই(এম) কোচবিহার জেলা সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের চক্রবর্তী বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ব্রিটেনে গিয়ে মিথ্যে বলে যাচ্ছেন। তিনি বলেছেন, যে ব্রিটেনের সঙ্গে আমাদের আবেগ ঐতিহ্যের সম্পর্ক। ১৯০ বছর শাসন করেছেন ব্রিটিশ, আমরা আবেগপ্লুত। এই কথার মানে কী? ব্রিটিশের ঐতিহ্য এই যে তারা বাংলার সর্বস্ব লুট করেছে। ১৯০ বছর পরাধীনতার শৃঙ্খলে আমাদের আটকে রেখেছে। এই ঐতিহ্যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আপ্লুত? তিনি বলেন, আরএসএস’র পথেই পা গলিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। 
এদিন সেমিনার মঞ্চ থেকে ঘোষণা করা হয় যে রাজ্যের প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর পূর্ণ অবয়ব মূর্তি স্থাপন করা হবে কোচবিহার শহরের সাগরদিঘী চত্বরে।

Comments :0

Login to leave a comment