KUNTAL GHOSH SSC BRIBE

মাথা পিছু ৮ লক্ষ ‘কামিয়েছে’ কুন্তল, ২০১৪-র টেটেই ১০ কোটির উপর

রাজ্য

উচ্চ প্রাথমিকে নবম ও দশম শ্রেণিতে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগে মাথা পিছু গড়ে ৮ লক্ষ টাকা করে নিয়েছিল ধৃত কুন্তল ঘোষ। মূলত ২০১৪ টেট পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে। ১৩০জনের কাছ থেকে গড়ে ৮ লক্ষ অর্থাৎ ১০ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা। 
শুধু চাকরি পাইয়ে দেওয়ার জন্য নয়, মামলা করে সেই চাকরি বাঁচানোর জন্যও টাকা নিয়েছিল ‘ভাইপো’ ঘনিষ্ঠ এই কুন্তল । ২০১৪’র টেট নিয়ে যখন দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসতেই আদালতে মামলা দায়ের করে চাকরি বহাল রাখার জন্য ১২০০ প্রার্থীর কাছ থেকে মাথা পিছু ২০হাজার করে টাকা তুলেছিল, সেই পরিমাণ হলো ২ কোটি ৪০লক্ষ টাকা!
তৃণমূলের যুব নেতা কুন্তল ঘোষের টাকা তোলার এমন একের পর এক ব্রেক-আপ আদালতে তথ্য প্রমাণ সহ পেশ করে শুক্রবার ইডি’র তরফে দাবি করা হয়েছে ২০১৪’র টেটে প্রাথমিক, উচ্চপ্রাথমিক ছাড়াও গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি পদে নিয়োগের দুর্নীতিতে মোট ৩০ কোটি টাকা তুলেছিল কুন্তল ঘোষ।


সেই টাকা কোথায় গেছে? আদালতে ইডি’র দাবি, গত ১৪দিনের হেপাজতে ধারাবাহিক জেরায় কুন্তল কবুল করেছে, চাকরির নামে তোলা বিপুল টাকার একটা বড় অংশ নির্দিষ্টভাবে প্রভাবশালী মহলের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। পার্থ চ্যাটার্জি সহ একাধিক ব্যক্তির কাছে টাকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। একাধিক কিস্তিতে পার্থ চ্যাটার্জিকে নগদে টাকা দেওয়া হয়েছিল। পার্থ চ্যাটার্জির বান্ধবী ধৃত অর্পিতা মুখার্জির মাধ্যমেও টাকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তাই প্রশ্ন, অর্পিতার বেলঘরিয়া ও হরিদেবপুরের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া ৪৯ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার খানিকটা কি কুন্তলের দেওয়া টাকাই। এদিন ইডি আদালতে জানিয়েছে, পার্থ ছাড়াও আরো বেশ কিছু প্রভাবশালী এখন তদন্তের নজরদারিতে রয়েছে। 
কুন্তলকে জেরা করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ইডি এদিন আদালতকে টাকার একটা  ব্রেক-আপও দিয়েছে। সংগঠক শিক্ষকদের নিয়োগ, স্থায়ীকরণের জন্য ১০ কোটি ৪৮লক্ষ টাকা নেওয়া হয়েছিল, উচ্চ প্রাথমিকে অবৈধ নিয়োগর জন্য ৩ কোটি ৩০ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা, ২০১৪’র টেট পাশ করিয়ে দেওয়ার জন্য এবং চাকরির অ্যাপয়নমেন্ট লেটার হাতে তুলে দেওয়ার জন্য ৫ কোটি ২৩লক্ষ ৫০ হাজার টাকা তোলা হয়েছিল। শুধুমাত্র এই যুব তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদককে টাকা দিয়ে ৩২৫জন টেট পরীক্ষার্থী খালি খাতা জমা দিয়ে পরীক্ষায় পাশ করেছিল।

 
এদিন শুনানিতে কুন্তলকে জেরা করে পাওয়া এই ভয়াবহ তথ্য পেশ করে ইডি কুন্তলের জামিনের বিরোধিতা করে। তাঁকে জেল হেপাজতে রাখা হয়েছে। জেলে গিয়েই তদন্তকারী আধিকারিকরা যাতে তৃণমূলের এই নেতাকে জেরা করতে পারে সেই আবেদনও জানানো হয় ইডি-র তরফে। শুনানি শেষে বিচারক কুন্তলের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন। আদালত ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেল হেপাজতের নির্দেশ দেয়।
 

Comments :0

Login to leave a comment