17th loksabha

৫ বছরে প্রশ্নই করেননি তৃণমূলের দলনেতা, উপস্থিতিতে দ্বিতীয় সিপিআই(এম), এগিয়ে প্রশ্নেও

জাতীয় লোকসভা ২০২৪

সপ্তদশ লোকসভায় সরকারের নীতি বা রাজ্যের দাবি দাওয়া নিয়ে একটাও প্রশ্ন তোলেননি তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ ব্যানার্জি। কেবল দলনেতাই নন, তৃণমূলের একাধিক সাংসদ কার্যত নীরব থেকেছেন লোকসভায়।
সিপিআই(এম)’র প্রতি সাংসদ গড়ে ২৩০টি করে প্রশ্ন তুলেছেন লোকসভায়। তৃণমূলের সাংসদের গড় ৯৪। আর বিজেপি’র গড় ১৪৯। প্রশ্নোত্তর পর্ব সংসদের দুই কক্ষ, লোকসভা এবং রাজ্যসভায়, নির্দিষ্ট থাকে। সরকারের বিভিন্ন কাজে প্রশ্ন তুলতে পারেন সাংসদরা। জনতার সমস্যা থেকে দাবি সংসদে তুলে ধরার অন্যতম রাস্তাও প্রশ্ন করা।
অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (এডিআর) সপ্তদশ লোকসভার বিভিন্ন দিক প্রকাশ করেছে সমীক্ষায়। এই সংগঠনের প্রতিবেদনেই ধরা পড়ছে সাংসদদের কাজে ধারা।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের ৪২টি আসনের মধ্যে তৃণমূল জয়ী হয় ২২ আসনে, বিজেপি ১৮ এবং কংগ্রেস ২ আসনে। নিজেদের কেন্দ্রের মানুষের অভাব অভিযোগ নিয়ে, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কোন প্রশ্নই তারা তোলেনি সংসদ। সুদীপ ব্যানার্জির কথা প্রথমেই উল্লেখ করা হয়েছে। মোট ২৭৩ দিনের অধিবেশনে ২০০ দিন উপস্থিত থাকলেও প্রশ্ন তোলেননি। তাঁর মতো চুপ থেকেছেন আরও একজন, চৌধুরি মোহন জাটুয়া। মথুরাপুরের সাংসদ মাত্র ৮০টি অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন। 
আসানসোলের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহাও প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ এবং এখন রাজ্যে তৃণমূল সরকারের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ের দেখানো পথে হেঁটেছেন। বাবুল সাংসদ পদ ছাড়ার আগে পর্যন্ত লোকসভায় কোন প্রশ্ন করেননি। শত্রুঘ্নও তাই, ‘খামোশ’ থেকেছেন। 
বিজেপি সাংসদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এসএস আলুওয়ালিয়াও নীরব থেকেছেন।  দলের নেতা এবং সাংসদ দিলীপ ঘোষ তুলেছেন ৩২টি প্রশ্ন। বারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং তুলেছেন ১৭টি প্রশ্ন। ঝাড়গ্রামের বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রম তুলেছেন ১৮টি প্রশ্ন।
বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায় সংসদে ২১১টি অধিবশনে যোগ দিয়ে প্রশ্ন করেছেন মাত্র একটি। বারাসতের তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারও মাত্র একটি প্রশ্ন করেছেন গোটা লোকসভা অধিবেশনে। মুর্শিদাবাদের সাংসদ (তৃণমূল) আবু তাহের খান ১৭৫ দিন অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন। টেনে টুনে প্রশ্ন করেছেন মাত্র চারটি। জঙ্গিপুরের তৃণমূল সাংসদ খলিলুর রহমান তুলেছেন ১২টি প্রশ্ন তুলেছেন।
অভিষেক ব্যানার্জি। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। এডিআর এর রিপোর্ট বলছে। ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ মাত্র ৪০ দিন অধিবেশনে উপস্থিত থেকেছেন। প্রশ্ন করেছেন ৮১টি। দলেরই শীর্ষ নেতা। তিনি কেন এত কম অধিবেশনে যেগ দিয়েছেন তা নিয়ে প্রশ্ন আছেই।
রাজ্যগুলির মধ্যে, মহারাষ্ট্রের ৪৯ জন সাংসদ ১৭ তম লোকসভায় সর্বাধিক প্রশ্ন করেছেন। গড়ে তারা ৩১৫টি করে প্রশ্ন করেছেন। রাজ্যগুলির মধ্যে, মণিপুরের ২ জন সাংসদ সবচেয়ে কম সংখ্যক প্রশ্ন করেছেন। তারা গড়ে ২৫টি প্রশ্ন করেছেন।
রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে টিডিপির তিন জন সাংসদ ১৭ দশ লোকসভায় সর্বাধিক গড় উপস্থিতি রয়েছে৷  গড়ে তাঁরা ২৭৩টি দিনের মধ্যে ২২৯ দিন অংশ নিয়েছেন। তারপরই রয়েছে সিপিআই(এম)। তিন সিপিআই(এম) সাংসদ ২৭৩ দিনের মধ্যে ২২৬ দিন গড়ে অংশ করেছেন।
সবচেয়ে কম উপস্থিতি রেকর্ড করা রয়েছে। আপের দুজন সাংসদের। মাত্র ৫৭ দিন অধিবেশনে যোগদান করেছেন তাঁরা। 
এনসিপির ৫ জন সাংসদ ১৭ তম লোকসভায় সব থেকে বেশি প্রশ্ন তুলেছেন। গড়ে তাঁরা একেকজন ৪১০টি প্রশ্ন করেছেন।
সপ্তদশ লোকসভায় মোট ২৪০টি বিল আনা হয়। তার মধ্যে পাশ হয়েছে ২২২টি বিল। প্রত্যাহার করা হয়েছে ১১টি বিল। ৬টি বিল ঝুলে থেকেছে।

Comments :0

Login to leave a comment