চোর সন্দেহে খুঁটিতে বেঁধে চলল মারধর। কাতর আর্তিতে কান দিতে নারাজ উন্মত্ত কয়েকজন। টানা মারধরের জেরে মারা গেলেন ছাব্বিশ বছরের ইসরার আহমেদ। দেশের অন্য কোথাও না, রাজধানী দিল্লিতে পিটিয়ে হত্যা করা হলো এই মুসলিম যুবককে।
ঘটনা মঙ্গলবার রাতের। উত্তর পূর্ব দিল্লির এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ দিল্লির বহু মানুষ। দিল্লি পুলিশ কেন্দ্রীয় স্ববরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে কাজ করে। সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষজনিত হত্যার অভিযোগ যদিও অস্বীকার করেছে পুলিশ। কিন্তু দিল্লির বহু বাসিন্দাই সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
ঘটনার ভিডিও ছড়িয়েছে। পরপর আঘাতে কাতর আর্তি জানিয়েছেন ইসরার। কিন্তু কোনও ভ্রূক্ষেপ না করেই চলেছে মার। ইসরারের বাবা আব্দুল ওয়াজিদ জানিয়েছেন তাঁদেরই এক প্রতিবেশী জানতে পেরে ইসরারকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন। তিনিই বাড়ি পৌঁছে দেন। তখন তাঁর দেহের সর্বাঙ্গে আঘাত। বাড়িতেই মারা যান ইসরার।
উত্তর পূর্ব দিল্লির ডেপুটি কমিশনার জয় তিরকে সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন যে ইসরার আহমেদের দেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। খুনের মামলা দায়ের হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘‘ইসরারের বাবা ফল বিক্রেতা। এখনও সব তথ্য পাওয়া যায়নি। ঠিক কী হয়েছিল জানার চেষ্টা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে ইরার আহমেদকে ঘিরে ধরে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব চাইছিল কয়েকজন। ঠিক মতো জবাব দিতে পারেনি বলে মনে করেছিল তারা। কেউ কেউ জানিয়েছে এই যুবকের মানসিক সমস্যা ছিল। তবে নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি।’’
মঙ্গলবার রাতের ঘটনার চব্বিশ ঘন্টা পরও রাজধাণী শহরে বোঝা গেল না কেন কারা হত্যার জন্য দায়ী, এই প্রশ্ন উঠেছে। বিভিন্ন অংশের বক্তব্য, সমাজে বিদ্বেষ মারাত্মক বাড়ছে। বাড়ছে অসহিষ্ণুতা। গোরক্ষার নামে মানুষ পিটিয়ে হত্যার একের পর এক ঘটনা দেখছে দেশ। ধর্মের নামে চলছে উন্মত্ত হিংসা। রাজনীতিতে এই আবহ তৈরির প্রভাব পড়ছে সমাজে।
Comments :0