অনন্ত সাঁতরা
পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল ও বিজেপিকে হঠিয়ে দুর্নীতিমুক্ত জনগণের পঞ্চায়েত গড়ে তুলতে মহিলাদের ঐক্যবদ্ধ লড়াই করতে হবে। শুক্রবার চুঁচুড়া ঘড়ির মোড়ে সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি হুগলী জেলা সমাবেশে এই আহবান জানান সংগঠনের নেত্রীবৃন্দ। নারী নির্যাতন বন্ধ করা, ১০০ দিনের কাজ চালু করা, স্বচ্ছভাবে নিয়োগ করা ও দুর্নীতি মুক্ত পঞ্চায়েত গড়ে তোলার দাবিতে এই সমাবেশ হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের রাজ্য নেত্রী দেবলীনা হেমব্রম, রাজ্য সম্পাদিকা কণীনিকা ঘোষ, রাজ্য নেত্রী দীপ্তি চ্যাটার্জি ও জেলা সম্পাদিকা শিবাণী দাশগুপ্ত। সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের জেলা সভানেত্রী অর্চনা মন্ডল। উপস্থিত ছিলেন মহিলা নেত্রী স্বপ্না ভট্টাচার্য, মিতালি কুমার ও নমিতা চক্রবর্তী প্রমুখ।
সমাবেশে দেবলীনা হেমব্রম বলেন, বামফ্রন্ট আমলে গরিব মানুষের অধিকার রক্ষার কাজ শুরু হয়েছিল। গরিব পরিবারের ছেলে মেয়েরা পড়াশোনা করবে, চাকরি করবে। কিন্তু এখন চাকরি টাকার বিনিময়ে বিক্রি হচ্ছে। এইভাবেই জনপ্রতিনিধিরা কোটি কোটি টাকা রোজগার করছে। এটা তো আমরা চাই নি। ইংরেজদের তাড়িয়ে দেশের স্বাধীনতা এনেছিল পূর্বসূরিরা। এই জন্যই কি স্বাধীনতা এনেছিল। তিনি আরো বলেন যে, খেতমজুররা সারাদিন কাজ করে মাত্র ২০০ টাকা রোজগার করে। আর এখন জনপ্রতিনিধিরা গাড়ি, বাড়ি করেছে। এসি গাড়িতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কোথায় থেকে এত টাকা পাচ্ছে। এর হিসাব আমরা বুঝে নেব। মানুষ ওদের ভেল্কিবাজী ধরে ফেলেছে। সরকারের টাকা খরচ করে, পুলিশ ব্যবহার করে আপনার আমার টাকা খরচ করে এখন নবজোয়ার চলছে। তিনি বলেন, বাম আমলে মহিলাদের স্বনির্ভর করতে গোষ্ঠী তৈরি করা হয়েছিল। এখন তৃণমূলীরা সেখান থেকে আয় করছে। আর মেয়েরা সুদ দিয়ে দিয়ে নাজেহাল হয়ে যাচ্ছে। মেয়েদের ঠকিয়ে তৃণমূলীরা নিজেদের রোজগার বাড়াচ্ছে। এ সব হতে দেওয়া যাবে না। তৃণমূল ও বিজেপিকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে হঠাতে হবে। আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। সমাবেশ থেকে আমাদের এই শপথ নিতে হবে।
চুঁচুড়া ঘড়ির মোড়ে মহিলা সমিতির হুগলী জেলা সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন সংগঠনের রাজ্য সম্পাদিকা কণীনিকা ঘোষ।
কনীনিকা ঘোষ বলেন, বনাঞ্চলের অধিকার, জল ও জঙ্গলের অধিকারের আইন তৈরি হয়েছে বামপন্থীরা যখন প্রথম ইউপিএ সরকারকে সমর্থন করছিলো তখন হয়েছিলো। আজ আমরা যখন এই প্রবল দাবদাহের মধ্যে এখানে বসে আছি তখন আদিবাসী ও প্রান্তিক মানুষের অধিকার অরণ্য বাঁচানোর অধিকার চলে যাচ্ছে। আজ বনাঞ্চল জলাভূমি ভরাট করে কোটি কোটি টাকা পকেটে ভরছে জমি মাফিয়ারা। জমি মাফিয়াদের পাশে দাঁড়িয়েছে কেন্দ্রে বিজেপি, আর এখানে তৃণমূল। গাছপালা জলাভূমি ধ্বংস করা হচ্ছে। বিনিময়ে আমরা পাচ্ছি এই দাবদাহ। তাই পেশার ক্ষেত্রে নারী পুরুষের সমানাধিকার, চাকরির দূর্নীতিতে জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। দূর্নীতির বাস্তুঘুঘুদের বাসা ভাঙতে হবে। মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। পরিবেশকে বাঁচাতে হবে। তিনি বলেন , বামপন্থীরা ইউপিএ জমানায় ছিলো বলেই গ্রামীণ রোজগার প্রকল্প ১০০ দিনের কাজ, মনরেগা প্রকল্প গড়তে বাধ্য হয়েছিলো কেন্দ্রীয় সরকার। আজ তাই দিল্লীর দাদা আর এরাজ্যের দিদি বামপন্থীদের ধ্বংস করতে চাইছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই।
Comments :0