অক্টোবরের শেষেই সাইক্লোন। ‘দানা’-র প্রভাব পড়েছে রাজ্যের বহু এলাকাতেই। দক্ষিণবঙ্গে বড় ক্ষতির মুখে পড়ছেন কৃষকরা। জায়গায় মাঠের ধান নষ্ট হচ্ছে বৃষ্টি আর ঝড়ে।
পূর্ব বর্ধমানের মেমারি, উত্তর ২৪ পরগনা থেকে হুগলীতে এমনই ছবি। আশঙ্কা, ফসল নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বাজারে আরও চড়বে চাল, সবজির দাম।
উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা অঞ্চলে দু’দিনের বৃষ্টিতে নিচু অঞ্চলের সবজি ও ধান চাষের ক্ষতি হলেও উঁচু অঞ্চলগুলি এখনও তেমন ক্ষতি হয়নি। তবে এই বৃষ্টি যদি আরো চলতে থাকে তাহলে অনান্য সবজির সাথে কলা ও সরষে চাষের বিরাট ক্ষতির আশঙ্কা আছে।
বনগাঁ মহাকুমায় পাকা আমন ধান ও শীতের সবজির সর্বনাশ হয়েছে। চাষের মাঠে এক হাঁটু জল জমে আছে। ধানের তো সর্বনাশ হয়েইছে, তার সঙ্গে উচ্ছে, পটল, ঝিঙা, পুঁইশাক,পালঙশাক, ফুল কপি, বাধাকপি, পিঁয়াজ, শিম, বরবটি সহ রবি সর্ষের বিরাট ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকার ছোট কৃষক আলি হোসেন। বৃষ্টি এখনো থামেনি। পাটের দাম ৫০৫২ টাকা কুইন্টাল থেকে নেমে ৪৩০০ টাকা হয়েছে। বনগাঁর নিকাশি ব্যাবস্থা খুবই খারাপের ফলে জল টানতে পারছে না। বিল, বাওরগুলিতে জল ভর্তি হয়ে গেছে। ইছামতীর সংস্কার না হওয়ার কারনে ইছামতীর জল উল্টে বিল বাওরে ঢুকে আশপাশের অঞ্চল ভাসাচ্ছে। বনগাঁ, গাইঘাটা, বাগদা অঞ্চলে অনেকগুলর ফিসারি আছে। অতি বৃষ্টির কারনে সেই সমস্ত ফিসারির মাছ অন্যের উঠোনে খেলা করছে। গ্রামের অনেক বেকার যুবক মাটি কেটে মাছের চাষ শুরু করেছিল। তাদের মাথায় হাত।
অকাল বৃষ্টিত আমডাঙার বিস্তীর্ণ চাষের মাঠে খুব ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টি জলে নষ্ট হয়েছে পাকা আমন ধান সহ কলা ও শীতের সবজির।
দানা'র প্রভাবে হুগলী জেলার সর্বত্রই সারাদিন ধরে একটানা বৃষ্টি চলছে। জেলার অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল ধান চাষ ক্ষতি মুখে। সিংহভাগ জমিতে ফলন্ত ধান। জলের দাপটে বহু জমিতে ধান গাছ পড়ে গেছে। এর ফলে পড়ে যাওয়া জমির ধান চিটে হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। নিচু এলাকাগুলির ধান খেতে জল বাড়ছে। এই সময়ে যাবতীয় সবজি ফসল ফুলকপি, শসা, বেগুন, লাউ, ঝিঙে ও কচু সহ সব ধরনের সবজির চাষ জলের কারণে মার খাবে।
মগরা ও পোলবা এলাকার কৃষকরা জানালেন, এর আগের টানা বৃষ্টিতে ফুলকপির চারা সব নষ্ট হয়ে যায়। এবার ফের বসানো হলেও তা এই জলের দাপটে নষ্ট হয়ে যাবে। এর ফলে শীতের শুরুতে সবজি ফসলের আকাল দেখা দেবে।
জেলার খানাকুল, জাঙ্গিপাড়া, সিঙ্গুর, হরিপাল,পোলবা, মগরা ও বলাগড় সহ সর্বত্রই একই অবস্থা। সারাদিনের বৃষ্টিতে জনজীবন সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। কার্তিক মাসের প্রথম দিকের এই ব্যাপক বৃষ্টিতে আগামী শীত মরসুমের অর্থকরী ফসল আলু, পেঁয়াজ সহ অন্যান্য চাষ ব্যাহত হবে বলে আশঙ্কা কৃষকদের।
পূর্ব বর্ধমানের মেমারিতে দেউলে গ্রামে ধান জলের তলায়। ফসল নষ্টের একই ছবি রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে।
Comments :0