গুজরাটে ব্রিজ ভেঙে পড়ার ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪১ হয়েছে বলে সোমবার জানিয়েছেন গুজরাটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সংভি। এখনো অনেকে নিখোঁজ। তাঁদের খোঁজে উদ্ধারকাজ জারি রয়েছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পাশাপাশি উদ্ধারকাজে শামিল পুলিশ, সেনা, বায়ুসেনা এবং নৌবাহিনী। জানা গেছে রাতভর তল্লাশি চালিয়ে ১৭৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শোকপ্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেলও নিহতদের পরিবার পিছু ৪ লক্ষ টাকা এবং আহতদের পরিবার পিছু ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করেছেন। গুজরাটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সংভি জানান, দুর্ঘটনার কারণ জানতে ইতিমধ্যেই পাঁচ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হচ্ছে।
রবিবার ভদোদরায় টাটার বিমান কারখানার ভিত পুজো সেরে আসার কয়েক ঘণ্টা পরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিজ রাজ্য গুজরাটে শ’চারেক লোক সমেত নদীতে ভেঙে পড়ে এক কেবল ব্রিজ। চারদিন আগে গুজরাটি নববর্ষের দিনই নবরূপে খুলে দেওয়া হয়েছিল এই মোরবি কেবল ব্রিজ। রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছটা নাগাদ মোরবির ওই ঝুলন্ত সেতু থেকে মাচ্ছু নদীতে পড়ে প্রাণ গেছে অন্তত ১৪১ জনের। উদ্ধারকাজ চলছে বলে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এখনও অনেকে নদীতে রয়ে গেছে আশঙ্কা করা হচ্ছে তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
রবিবার সন্ধ্যায় ব্রিজ ভেঙে পড়ার পরে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বহু মহিলা বাচ্চাকে ভেঙে পড়া ঝুলন্ত ব্রিজ থেকে গড়িয়ে গড়িয়ে নদীতে পড়তে দেখা গেছে। ব্রিজের ধারের তার ধরে অনেকেই তখন বাঁচার মরিয়া চেষ্টা করছে। একে দেওয়ালির মরশুম, তার মধ্যে রবিবারের ছুটির দিন। তাই সেতুর উপর অত্যধিক ভিড়ও ছিল। রাতে উদ্ধারকাজে হাত লাগানোর ফাঁকে অমিত প্যাটেল ও সুখরাম নামে স্থানীয় দুই যুবক জানালেন, হয়তো বেশি ভিড়ের জন্যই দুর্ঘটনাটি ঘটলো। ব্রিজটা যখনপড়ে গেল দেখলাম উপরের লোকগুলো একে অপরের উপর পড়ে যাচ্ছে। পেছনের লোকের ঠেলায় সামনের জন নিচে নদীতে গিয়ে পড়ছেন। তারপর পেছনেরজনও খানিক লড়াই চালিয়ে নিচে পড়ছে। কেউ কেউ তার ধরে ঝুলে পড়ে বাঁচতে চাইছেন। অনেকেই আবার নিজে সাঁতরে পাড়ে ওঠার চেষ্টা করেন। তবে এক লহমায় শতাধিক মানুষ নদীতে পড়ে যান। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই বাচ্চা, মহিলা ও বয়স্ক মানুষ।
এই প্রায় শতাব্দী প্রাচীন সাসপেনশন ব্রিজ মোরবির একটা বড় পর্যটক আকর্ষণও। বহু পুরানো এই সেতুটি প্রায় ৬ মাস বন্ধ রেখে মেরামতি করে গত ২৬ তারিখই এটি জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল। তারপরই এই বিপত্তি। স্বাভাবিকভাবেই যে বেসরকারি ঠিকাদার সংস্থাকে দিয়ে এই কাজ করা হয়েছে, তাদের কাজ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
প্রধানমন্ত্রী নিজে এখন গুজরাটে রয়েছেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রী ও অন্যান্য আধিকারিকদের সঙ্গে এব্যাপারে কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর জানিয়েছে, গুজরাট সরকারকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
Bridge Collapse
গুজরাটে ব্রিজ ভেঙে পড়ার ঘটনায় মৃত বেড়ে ১৪১
×
Comments :0