অভয়ার আন্দোলনকে আগামীর রুপরেখা ও পথ নিয়ে মতামতের আদান-প্রদান সভা করা হল ডক্টর্স ফর ডেমোক্রেসি তরফে। এদিন মৌলালি যুব কেন্দ্রে বিকেল সাড়ে চারটের সময় সভার শুরু হয়। 'নানা কথা নানা মত নিয়ে, এসো বিচারের আল পথ বেয়ে' এই সভায় বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ ও অধ্যাপক মালিনী ভট্টাচার্য, আইনজীবী শামীম আহমেদ, অভিনেতা চন্দন সেন, অধ্যাপক আব্দুল কাফি, সাক্ষরতা আন্দোলনের কর্মী উর্বা চৌধুরী, ছাত্র আন্দোলনের কর্মী ময়ূখ বিশ্বাস, দীধিতি রায় এবং যুব আন্দোলনের কর্মী মীনাক্ষী মুখার্জি সহ অন্যান্যরা।
ডক্টর ফর ডেমোক্রেসির সম্পাদক ডাঃ সুকান্ত চক্রবর্তী বলেন, "অভয়ার বাবা মা বলছেন সঞ্জয় একা দোষী নয়। তথ্য প্রমাণ বলছে সঞ্জয়ের একা দোষী হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। আমরাও যাঁরা প্রথম দিন থেকে আন্দোলনের ছিলাম আমরাও মনে করছি এখনো ন্যায় বিচারের রাস্তায় অনেক কিছু বাকি আছে। মেদিনীপুরে ভেজাল স্যালাইন কাণ্ডে ডাক্তারদের উপর দোষ চাপানো হচ্ছে। এই সমস্ত অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই। আজকের সভা থেকে আমরা চাইছি যাঁরা ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করছে সবাইকে এক ছাতার তলায় নিয়ে মতামত বিনিময় করতে।"
চিকিৎসক আন্দোলনের নেতা ডাঃ উৎপল ব্যানার্জি বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, " প্রথম থেকেই আমরা বুঝতে পারছিলাম প্রশাসন কিছু একটা আড়াল করার চেষ্টা করছে, কিছু চাপা দিতে চাইছে। এটা শুধুমাত্র একটা ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা নয়। যদি আমায় কেউ প্রশ্ন করেন সাড়ে পাঁচ মাসের আন্দোলন থেকে কী পেলেন? আমি এক কথায় উত্তর দিতে পারি, শাসকের ভাষ্যকে কেউ বিশ্বাস করে না। এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় পাওনা, গোটা রাজ্যের একটা মানুষ ও বিশ্বাস করে না সঞ্জয় রায় একাই এই ঘটনায় দোষী।"
অধ্যাপক মালিনী ভট্টাচার্য বলেন, "দীর্ঘ মেয়াদী আন্দোলন এর নানা রূপ থাকে, দীর্ঘস্থায়ী তাকে মেনেই প্রতিপক্ষকে মনে রেখে নিজেদের তৈরি হতে হবে। আন্দোলন ছেড়ে দিলে চলবে না ব্যাপক নেটওয়ার্কিং তৈরি করতে হবে। যোগাযোগ রাখতে হবে সবার সাথে। আন্দোলন কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়। প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়তে হবে আমাদের সকলকে। ভিন্নমতের মানুষকেও আমাদের পক্ষে আনতে হবে।"
এই সভা থেকে বিভিন্ন মতামত উঠে আসে। প্রশ্ন ওঠে সিবিআই এর ভূমিকা নিয়েও। আইনজীবী শামীম আহমেদ বলেন, "আসফাকুল্লা বিরুদ্ধে পুলিশ অতি সক্রিয় কিন্তু অভয়ার ঘটনায় পুলিশ তৎপর ছিল না উল্টে তথ্য প্রমান লোপাট করেছে। প্রথম থেকেই পুলিশের ভূমিকায় নানা প্রশ্ন ছিল এবং এখন বলা যায় পুলিশ ও সিবিআই দুই রাজনৈতিকভাবে প্রক্ষপাতদুষ্ট।"
বক্তাদের মতামত শেষে একটি প্রশ্ন উত্তরের পর্ব রাখা হয়। যেখানে উপস্থিত সাধারণ নাগরিকেরা বক্তাদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন এবং আন্দোলন নিয়ে মতামত রাখেন। এই পর্ব থেকে একাধিক কথা উঠে আসে। সাধারণ মানুষের টাকায় অভয়ার নামে একটি হাসপাতাল নির্মাণের জন্য বলেন। কথা হয় কী ভাবে জেলায় জেলায় আন্দোলনকে পৌঁছে নিয়ে যাওয়া হবে এবং রাজ্যের বিভিন্ন মহল্লায় আন্দোলনের যে বক্তব্য তা পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলবে।
Comments :0