Post Editorial

চট শিল্পের সঙ্কট ও সর্বভারতীয় ধর্মঘটের প্রাসঙ্গিকতা

উত্তর সম্পাদকীয়​

গার্গী চ্যাটার্জি

ভারতবর্ষের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ও শ্রম নির্ভর শিল্প চট শিল্প আজ চরম সঙ্কটের মধ্য দিয়ে চলেছে। এই শিল্পে কর্মরত লক্ষ লক্ষ শ্রমিক, যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের শ্রম-ঘামে দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা রেখেছেন, আজ তাঁরা বঞ্চনার শিকার। তাঁদের জীবন ও জীবিকা আজ মিল কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিপনা, অবহেলা এবং শাসক শ্রেণির শ্রমিক বিরোধী নীতির করাল গ্রাসে বিপন্ন। এমন পরিস্থিতিতে আগামী ৯ জুলাই যে সর্বভারতীয় ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে, তা শুধুই একটি প্রতিবাদ কর্মসূচি নয়— এ এক ঐতিহাসিক প্রতিরোধের মুহূর্ত, যেখানে শ্রমজীবী মানুষের লড়াই নতুন গতি পাবে।
চট শিল্পে শ্রমিক শোষণের বহুমাত্রিক চিত্র
চটকল মালিকরা দীর্ঘদিন ধরে নানা অজুহাতের আশ্রয় নিয়ে শ্রমিকদের ন্যূনতম মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত করে চলেছে। শতাব্দী প্রাচীন ব্রিটিশ আমলের যন্ত্রপাতির মাধ্যমে এখনও বহুমিলের উৎপাদন কার্যক্রম চালু রয়েছে, যেখানে শ্রমিকদের দৈহিক পরিশ্রম সহ্যসীমার বাইরে গিয়ে দিতে হয় কিন্তু তার বিনিময়ে তাঁরা প্রাপ্য সম্মানজনক মজুরি, সামাজিক সুরক্ষা কিংবা ন্যূনতম মানবিক পরিবেশ পর্যন্ত পান না।
কারখানার অভ্যন্তরে কাজ করার পরিবেশ অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর ও দুর্ঘটনা প্রবণ। অধিকাংশ মিলেই পর্যাপ্ত আলো-বাতাস নেই, নেই সঠিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা কিংবা জরুরি সময়ে উদ্ধারের উপযোগী ব্যবস্থাও। শ্রমিকদের গায়ে ন্যূনতম সুরক্ষার উপকরণ— যেমন হেলমেট, গ্লাভস, মাস্ক, বুট ইত্যাদি পর্যন্ত সরবরাহ করা হয় না। তীব্রশব্দ, ধুলো, আঁধার আর তাপের মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে বা মেশিনে মাথা গুঁজে কাজ করতে হয়—যেখানে অসুস্থ হয়ে পড়া যেন নিত্যকার ঘটনা।
এরসঙ্গে যুক্ত হয়েছে ইএসআইসি-এর ভয়াবহ দুরবস্থা। সময়মতো মালিকপক্ষ কর্তৃক শ্রমিকদের ইএসআইসি কন্ট্রিবিউশন জমা না পড়ায়, বহু শ্রমিক চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। দুর্ঘটনা ঘটলেও ইএসআই কার্ড কার্যকর না থাকায় সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়ে চরম সমস্যায় পড়তে হয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, শ্রমিক দীর্ঘদিন ধরে কাজ করলেও তাঁর নামই ইএসআই তালিকায় নেই কিংবা ‘অকার্যকর’ দেখাচ্ছে।
প্রভিডেন্ট ফান্ডের ক্ষেত্রেও একইরকম ভয়াবহতা বিরাজ করছে। মাসে মাসে পিএফ বাবদ শ্রমিকের মজুরি থেকে অর্থ কেটে নেওয়া হলেও, মালিকপক্ষ তা যথাসময়ে আঞ্চলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড অফিসে জমা করে না। আবার যেসব মিলের নিজস্ব পিএফ ট্রাস্ট রয়েছে, সেগুলো ‘প্রভিডেন্ট ফান্ড ট্রাস্টের আইন অনুযায়ী পরিচালিত হয় না। ফলে বছর শেষে ব্যালেন্স দেখাতে গিয়ে গরমিল হয়, অবসরের সময় জমাকৃত অর্থের হদিশ পাওয়া যায় না। অনেক সময় পিএফ অ্যাকাউন্ট নম্বরই মিলছে না বা ভুল তথ্য দিয়ে শ্রমিককে হয়রানি করা হচ্ছে।
শ্রমিক অবসর নিলেও তাঁর প্রাপ্য পিএফের টাকা বুঝিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতা এবং ইচ্ছাকৃত প্রশাসনিক জটিলতা সৃষ্টি করা হয়। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হলো—ইপিএস (এমপ্লয়িজ পেনশন স্কিম)-এর অধীনে পেনশন ফান্ড মালিকপক্ষ বছরের পর বছর জমা দেয়নি, ফলে অবসরের পর শ্রমিককে পেনশন পেতে বারবার পিএফ অফিস ঘুরতে হয়, কাগজপত্র জোগাড় করতে হয় এবং শেষ পর্যন্ত ‘পেনশন নাকচ’ হওয়ার মতো বেদনাদায়ক পরিস্থিতি পর্যন্ত দেখতে হয়।
গ্রাচ্যুইটির বিষয় তো কার্যত তামাশায় পরিণত হয়েছে। আইন অনুযায়ী ৫ বছর পূর্ণ সময় ধরে কাজ করার পর একজন শ্রমিক গ্রাচ্যুইটির অধিকারী হন। কিন্তু বহু মিলেই শ্রমিককে ইচ্ছাকৃতভাবে বদলি দেখিয়ে বা ফাঁকফোকর খুঁজে তাঁকে এই অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। অনেক ক্ষেত্রেই অবসরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও গ্রাচ্যুইটির টাকা দেওয়া হয় না। আর যারা নিতান্ত বাধ্য হয়ে অভিযোগ জানাতে চান, তাঁদের নানা কৌশলে ভয় দেখানো হয় বা হয়রানির মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়।
এই সমস্ত অব্যবস্থার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিক সংগঠনগুলি আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু মালিক পক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক মহলের নির্লজ্জ নিষ্ক্রিয়তায় একের পর এক চটকল শ্রমিক আজও তাঁদের রক্ত-ঘামে অর্জিত অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে চলেছেন। ফলে স্বাক্ষরিত ত্রিপাক্ষিক চুক্তির কার্যকর বাস্তবায়ন না হলে, এই ন্যায্য আন্দোলন আরও তীব্র হবে, এই অসন্তোষ বিস্ফোরণ ঘটাবে—এ কথা বলাই বাহুল্য।
 ‘কাটা ডিউটি’ থেকে ‘স্ট্রেট ডিউটি’: শ্রমিকের জীবনে এক নিষ্ঠুর রূপান্তর
চটশিল্পে আগে প্রচলিত ছিল। ‘কাটা ডিউটি’ ব্যবস্থা— যেখানে শ্রমিকরা ৪, ৬ বা ৮ ঘণ্টার ভাগ করে কাজ করতেন। পারিবারিক পরিস্থিতি, স্বাস্থ্যগত কারণ বা অন্যান্য বাস্তবতাকে সামনে রেখে এই পদ্ধতি বহু শ্রমিকের জন্য কর্মসংস্থানের অন্যতম ভরসা ছিল। এই ব্যবস্থার ফলে একই দিনে বিভিন্ন ব্যাচে কাজ ভাগ করে নেওয়া যেত, যা মিল কর্তৃপক্ষেরও উপকারে আসত।
কিন্তু এখন মালিকপক্ষ একতরফাভাবে ‘স্ট্রেট ডিউটি’ চালু করার চেষ্টা করছে—যেখানে একটানা সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পূর্ণ সময় শ্রমিকদের কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। এই ব্যবস্থায় শ্রমিকদের মানসিক ও শারীরিক চাপ বাড়ছে, বহু শ্রমিক কাজ হারাচ্ছেন বা বাদ পড়ছেন। বিশেষত, যারা আগের ব্যবস্থায় আংশিক সময় কাজ করে সংসার চালাতেন, তাঁদের কাছে নতুন এই স্ট্রেট ডিউটি কার্যত এক ভয়ঙ্কর সংকেত। বিশেষত মহিলা শ্রমিকদের কার্যত এই ব্যবস্থায় কাজ হারানোর আশঙ্কা তৈরি করেছে।
 ত্রিপাক্ষিক চুক্তি ও ৪ জুনের বৈঠক: আশার আলো না হতাশার ধোঁকা?
চটকল শ্রমিকদের জন্য ৩ জানুয়ারি ২০২৪-এর ত্রিপাক্ষিক মজুরি চুক্তিতে প্রতিশ্রুতি ছিল, যারা ১৫ বছর একটি মিলে কাজ করেছেন, তাঁদের স্পেশাল বদলি এবং ২০ বছর কাজ করা শ্রমিকদের স্থায়ী শ্রমিক হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। এই দাবি আদায়ে শ্রমিকদের বহু বছরের লড়াই ছিল, কিন্তু বাস্তবায়নে মিল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে দেখা গেছে শুধুই টালবাহানা।
শেষমেশ, ২০২৫ সালের ৪ জুন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পুনঃবৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়—২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ৩১ মে পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে যাঁদের ৭০ শতাংশ কর্মদিবসে উপস্থিতি আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে উল্লিখিত পরিবর্তন কার্যকর হবে। কিন্তু এটিই শ্রমিকদের জন্য নতুন ফাঁদ নয় তো? দীর্ঘ কর্মদিবসে কাটা ডিউটির প্রথাগত স্বরূপ, স্বাস্থ্যগত সমস্যা, দুর্ঘটনা প্রবণ কাজ এবং চরম অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে বহু অভিজ্ঞ শ্রমিকই উপস্থিতির এই শর্ত পূরণ করতে পারবেন কিনা সংশয় থাকছে। ফলে বড় সংখ্যার শ্রমিক একই মিলে ১৫ বা ২০ বছর কাজ করা সত্ত্বেও টানা ৪ বছর ৫ মাস সময়ের ৭০ শতাংশ উপস্থিতির ‘গেরো’ যদি অতিক্রম করতে ব্যর্থ হন তবে, যোগ্য শ্রমিক হওয়া সত্ত্বেও এই ঘোষিত সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হবেন, এই আশঙ্কা থাকছে।
এইভাবে জুটমিল শ্রমিকরা একদিকে চরম পরিশ্রম এবং স্বাস্থ্যহানির মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন, অন্যদিকে তাঁদের আইনি অধিকার, সামাজিক সুরক্ষা ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা একযোগে লঙ্ঘিত হচ্ছে। রাষ্ট্র যখন কর্পোরেট স্বার্থে শ্রমিক স্বার্থকে বিসর্জন দেয়, তখন এই ধরনের চুক্তি কেবল রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি হয়ে থাকে, বাস্তব রূপ লাভ করে না। 
এ প্রসঙ্গে স্পষ্ট করে বলা দরকার— বর্তমান শ্রম আইন কার্যকর থাকা অবস্থাতেই যখন এই পরিস্থিতি, তখন যদি কর্পোরেটপন্থী ‘শ্রম কোড’ কার্যকর হয়, তাহলে চটশিল্পে শ্রমিকদের অস্তিত্বই ধ্বংসের মুখে পড়বে।
শ্রমিকদের জীবন ও ভবিষ্যৎ প্রশ্নে এই ধরনের নিষ্ঠুর অবহেলা আর সহ্যযোগ্য নয়— তাই ৯ জুলাই ২০২৫-এর সর্বভারতীয় ধর্মঘট হয়ে উঠছে এক চূড়ান্ত প্রতিরোধের ডাক, যা এই শ্রমিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের পথচলাকে নিশ্চিত করবে।
 ধর্মঘটের ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতা: শ্রমিক ঐক্যের নির্মাণ ও সিআইটিইউ’র নেতৃত্ব
ভারতের শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাসে ধর্মঘট শুধু একটি প্রতিবাদ নয়— এটি শ্রমজীবী মানুষের মর্যাদা ও অধিকার রক্ষার অন্যতম হাতিয়ার। ১৯৯১ সালে বিশ্বায়ন ও উদার অর্থনীতির সূচনা পর্ব থেকেই সিআইটিইউ প্রথম সাহসিকতার সঙ্গে এই নতুন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সংগঠিত প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তখন হাতে গোনা কয়েকটি ট্রেড ইউনিয়ন যেমন এআইটিইউসি, এইচএমএস, ইউটিইউসি এই প্রতিবাদে শামিল হয়।
কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে, দেশের বাস্তবতা ও শ্রমিকদের অভিজ্ঞতা প্রমাণ করেছে— সিআইটিইউ’র অবস্থানই ছিল বাস্তব ও দূরদর্শী। একের পর এক সর্বভারতীয় ধর্মঘটে দেখা গেছে, নতুন নতুন সংগঠন, ক্ষেত্রভিত্তিক ফেডারেশন, এমনকি অতীতে গা-ঝাড়া না দেওয়া সংগঠনগুলোও এক সময় নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে এই লড়াইয়ে শামিল হয়েছে। বিশেষত ২০১২, ২০১৬ ও ২০২০ সালের ধর্মঘটগুলোতে প্রায় সব ট্রেড ইউনিয়নকে এক মোহনায় এনে দিয়েছে এই আন্দোলন।
সিআইটিইউ এই লড়াইয়ে কোনোদিন আত্মঘাতী সমঝোতা করেনি। তাদের অবস্থান ছিল স্বচ্ছ—শ্রমিকের পক্ষেই কেবল নয়, শ্রমিকশ্রেণির রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দিকেও। আজ দেশের শ্রমজীবী মানুষ ও তাঁদের সংগঠনসমূহ সর্বসম্মতভাবে স্বীকার করছেন— সিআইটিইউ কেবল এক সংগঠন নয়, বরং দেশের শ্রমজীবী মানুষের এক গ্রহণযোগ্য ও নির্ভরযোগ্য নেতৃত্ব। আন্দোলনের প্রেক্ষিতে তৈরি হওয়া এই ঐক্য এক আশার ভিত্তি রচনা করেছে— যেখান থেকে আগামীদিনের বৃহত্তর রাজনৈতিক বিকল্পের সূচনা সম্ভব।
 ৯ জুলাই এর ধর্মঘট: চটশিল্পের শ্রমিকদের কাছে এক সন্ধিক্ষণ
এই প্রেক্ষিতে আগামী ৯ জুলাই-এর সর্বভারতীয় ধর্মঘট চটশিল্পের শ্রমিকদের কাছে আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কারণ—
• এই ধর্মঘটকে হাতিয়ার করে শ্রমিক স্বার্থে স্বাক্ষরিত ত্রিপাক্ষিক চুক্তি বাস্তবায়নের দাবি পুনরায় জোরালো করার সুযোগ তৈরি করেছে।
• পিএফ, ইএসআই, হাজিরা ভাতা, বোনাস, স্থায়ীকরণ— এসব শ্রমিকদের প্রাপ্যকে নিশ্চিত করার সপক্ষে লড়াইতে অন্য অংশের শ্রমিকদের পাশে পাওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে।
• স্ট্রেট ডিউটির চাপের বিরুদ্ধে কাটা ডিউটির শ্রমিক-বান্ধব প্রথা পুনঃপ্রবর্তনের লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছে।
• নতুন শ্রম কোড বাতিল করে শ্রম আইনের পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবিতে সংগঠিত প্রতিরোধ গড়ে তুলছে এই ধর্মঘট।
• এবং সবশেষে, কর্পোরেট স্বার্থে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও শ্রমিকের ভবিষ্যৎ নিলামে তুলে দেওয়া, বিভাজন সৃষ্টিকারী নীতির বিরুদ্ধে শ্রমজীবী মানুষের ঐক্য গড়ে তোলার সংগ্রাম এই ধর্মঘট।
 পরিবর্তনের লড়াইয়ের নতুন অধ্যায়
চটশিল্পের শ্রমিকদের অবস্থা আজ এতটাই সঙ্কটজনক যে, এই সংগ্রাম আর শুধুমাত্র শ্রমিকদের নয়— এই সংগ্রাম দেশের প্রতিটি শ্রমজীবী মানুষের সম্মান, নিরাপত্তা ও ভবিষ্যতের লড়াই। এই লড়াই শুধু একটি দাবি নয়, এটি একটি রাজনৈতিক অবস্থান, যা শাসকের শ্রমিকবিরোধী নীতি বদলের রণহুঙ্কার। যদি সরকার এই দাবি না মানে, তাহলে এই আন্দোলনের শক্তি শাসককে বদলানোর দিকেও এগবে।
সুতরাং, ৯ জুলাইয়ের সর্বভারতীয় ধর্মঘট হবে সেই আহ্বান, যেখান থেকে নতুন দিগন্তের সূচনা সম্ভব। এই ধর্মঘটের সফলতা নির্ভর করছে— চটশিল্পের শ্রমিক, অন্যান্য সংগঠিত ও অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী সহ সমাজের সব অংশের শ্রমজীবী মানুষের ঐক্যবদ্ধ অংশগ্রহণের উপর।
আর এই ঐক্যই শেষ পর্যন্ত নির্ধারণ করবে— কে থাকবে ইতিহাস তৈরির পক্ষে, আর কে থাকবে কর্পোরেট স্বার্থের পক্ষে।

Comments :0

Login to leave a comment