Kanchanjungha Express Collision

রেল দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর, ক্ষতিপূরণ ঘোষণা

রাজ্য

ছবি রাজু ভট্টাচার্য।

শিয়ালদহমুখী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে মালগাড়ির ধাক্কায় লাইনচ্যুত ৩ কামরা। দুটি কামরা দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছে, একাটি কামরা মালগাড়ির উপরে উঠে রয়এছে।। এখনও পর্যন্ত মৃত ৮, আহত প্রায় ৩০ জন। রেল সুত্রে খবর ইতিমধ্যেই পাঁচজনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ৩০ জনকে। আরও কতজন এখনও দুমরেমুচরে যাওয়া কামরায় আটকে রয়েছে তা নিশ্চিত নয়। গ্যাস কাটার ব্যবহার করে উদ্ধার কাজ কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই দড়ি বেঁধে ট্রেনের ভাঙা অংশগুলি সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করছেন উদ্ধারকারীরা। তবে উদ্ধার কাজে সমস্যা হচ্ছে বলে জানান উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা। সরকারি সূত্রে খবর এখনও পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা আট। আহতের সংখ্যা প্রায় ৩০ জন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে রয়েছেন রেলেন উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ। আপাতত ওই লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
 


 

রেলের সিগন্যালিং সিস্টেমে সমস্যার কারণেই কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ও মালগাড়ির মধ্যে সংঘর্ষ হয়। প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই মনে করছে রেল। সোমবার সকালে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে রাঙাপানির কাছে নিজবাড়ি এলাকায়। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা শিয়ালদাগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পিছনে ধাক্কা মারে একটি মালগাড়ি। মালগাড়ির ধাক্কায় কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের একটি কোচ ইঞ্জিনের ওপরে উঠে যায়। দুমড়ে মুচড়ে যায় কাঞ্চনজঙ্ঘার তিনটি ইঞ্জিন। মালগাড়ির কয়েকটি কোচও ছিটকে পড়ে লাইন থেকে। এই লাইন দিয়ে বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচল।
রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে অনুমান সিগন্যালিংয়ের সমস্যার কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। সিগন্যাল ফেল করেই মালগাড়িটি ধাক্কা মারে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে। মালগাড়ির ধাক্কায় ট্রেনের পার্সেল ভ্যান মালগাড়ির ইঞ্জিনের ছাদে উঠে যায়। পিছনের কামরাটি দুমড়ে মুচড়ে যায়।
দুর্ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। শোকার্ত পরিবারগুলির পাশে আছি বলে জানিয়েছেন তিনি। "তিনি এক্স-এর একটি পোস্টে বলেছেন, ‘‘ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণহানির খবর "গভীর বেদনাদায়ক"। আমার চিন্তা ও প্রার্থনা শোকসন্তপ্ত পরিবারের সাথে রয়েছে। আমি আহতদের দ্রুত আরোগ্য এবং ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযানের সাফল্যের জন্য প্রার্থনা করছি।’’  
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করে বলেছেন, "পশ্চিমবঙ্গে রেল দুর্ঘটনাটি দুঃখজনক। যারা তাদের প্রিয়জনকে হারিয়েছে তাদের প্রতি সমবেদনা। আমি প্রার্থনা করি যে আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক। উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের সাথে কথা বলেছি এবং পরিস্থিতির পর্যালোচনা করেছি। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য উদ্ধার অভিযান চলছে।‘উদ্ধার অভিযান চলছে, ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।’’ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে ২ লক্ষ এবং আহতদের জন্য পঞ্চাশ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে।
জানা গেছে ইতিমধ্যেই দুর্ঘটনাস্থলে রওনা দিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তিনি এক্স-এর একটি পোস্টে বলেছে ‘‘যুদ্ধের ভিত্তিতে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে। দুঃখজনক দুর্ঘটনা। উদ্ধার অভিযান যুদ্ধের পর্যায়ে চলছে। রেলওয়ে, এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফ নিবিড় সমন্বয়ে কাজ করছে। আহতদের হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন।’’ এই দুর্ঘটনার ফলে অন্য কয়েকটি ট্রেনের চলাচলে প্রভাব পড়েছে।
জানা গেছে দুর্ঘটনায় আটক যাত্রীদের উদ্ধারে ঘটনাস্থলে রওনা দিয়েছে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিগমের ১০ টি বাস। যাত্রীদের নিরাপদে পৌছে দিতে এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিগমের চেয়য়ারম্যান পার্থপ্রতীম রায়। 

Comments :0

Login to leave a comment