আগামী মাসের প্রথমে অর্থাৎ ১ দুই ও ৬ মার্চ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পশ্চিমবঙ্গ সফরে আসবেন বলে রাজ্য বিজেপি সূত্রে দাবি করা হয়েছে। এক সপ্তাহে তিনি ৩টি সভা করবেন তাও জানা গিয়েছে। প্রথম সভাটি হবে ১ মার্চ, হুগলীর আরামবাগে। ২ মার্চ নদীয়ার কৃষ্ণনগরে হবে দ্বিতীয় সভা। প্রধানমন্ত্রী ৬ মার্চ সভা করবেন বারাসতে।
লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৩৫টি আসনের লক্ষ্যমাত্রা রেখেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সংবাদমাধ্যমে বিজেপি সেই প্রচারই করছে। ফেব্রয়ারিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর রাজ্যে আসার কথা থাকলেও সফর পিছানো হয়েছে। মোদী এবং শাহের সফর ঘিরে সংবাদমাধ্যমে দ্বৈরথের প্রচার ছড়িয়ে দিতে ব্যস্ত বিজেপি।
পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের শাসনে ভোট এবং আসন বেড়েছে বিজেপি’র। শাখা বেড়েছে বিজেপি’র ভিত্তি সংগঠন আরএসএস’র। ধর্মকে রাজনীতিতে ব্যবহার করার প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতার প্রভাব বাড়িয়েছে দু’পক্ষই। রাজ্যে বামপন্থীদের কোণঠাসা করতে ধর্মীয় মেরুকরণ এবং পরিচয়বাদী রাজনীতিতে সওয়ার দু’দলই।
২০২৩’র পঞ্চায়েত নির্বাচনে যদিও এই কৌশল কড়া প্রতিরোধের মুখে পড়েছে। যথেচ্ছ লুট এবং তাণ্ডব সত্ত্বেও সাফল্য আদায় করেছে বামফ্রন্ট। সাগরদিঘির উপনির্বাচনে তৃণমূল কেবল হারেনি বিজেপি তিন নম্বরে নেমে গিয়েছিল।
ছাতনার ঘোষের গ্রাম গ্রামপঞ্চায়েতে গিয়ে প্রধান সহ তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে বাঁকুড়ার বিজেপির সাংসদ ডাঃ সুভাষ সরকার।
২০২১ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় ১৮টি আসনে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। তৃণমূল কংগ্রেস জিতেছিল ২২টি আসনে। কংগ্রেস জিতেছিল ২টি আসন। বামফ্রন্ট কোনও আসন পায়নি।
সম্প্রতি সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন যে অনেকে ভেবেছিলেন ছাপ্পান্ন এসে নবান্নকে সরাবে। আদৌ তা হয়নি। কেন্দ্রীয় সংস্থা অপরাধীদের ধরেনি। সন্দেশখালির উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেছেন, মানুষ একজোটে রুখে দাঁড়ালে অন্যায়কে প্রতিরোধ করা সম্ভব।
এই আবহেই হচ্ছে লোকসভা ভোট। বিজেপি-তৃণমূল বোঝাপড়া সমানে স্পষ্ট হচ্ছে। সম্প্রতি কেন্দ্রের মন্ত্রী নিশীথ অধিকারী আদালতে রেহাই পেয়েছেন রাজ্যের পুলিশ চার্জশিট না দেওয়ায়। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার বিজেপির সাংসদ দেশের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডাঃ সুভাষ সরকার ছাতনা ব্লকের ঘোষের গ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে বেশ কিছুক্ষণ প্রধান শান্তনু কুন্ডু ও তৃণমূলের জেলা নেতা পরমেশ্বর কুন্ডুর সঙ্গে আলোচনা করেন। এই ছবি প্রকাশ্যে ছড়িয়ে পড়ার পরই চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।
রাজনৈতিক মহলের মত, প্রধানমন্ত্রীকে এনে সংগঠনে অক্সিজেন দিতে চাইছে বিজেপি। তৃণমূলের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধকে ধর্মীয় সমীকরণে দেখিয়ে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করেছে বিজেপি। কেন্দ্রে বিজেপি, রাজ্যে তৃণমূল- এমন বোঝাপড়া নিয়ে আলোচনা হচ্ছে পাড়ার মোড়েও। নরেন্দ্র মোদীকে দিয়ে নতুন কিছু ঘোষণা করাতে সে কারণে মরিয়া তাঁর দল।
Comments :0