শ্রমুকোড বাতিল করা, অস্বাভাবিক দ্রব্যমূল্যে রোধ করা, রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প গুলির বিলগ্নীকরণ বন্ধ করা, প্রকল্প ও ঠিকা কর্মীদের স্থায়ীকরণ করার দাবি সহ ১৭ দফা দাবিতে আগামী ৯ জুলাই সারা দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। সেই ধর্মঘটের সমর্থনে বৃহস্পতিবার রঘুনাথপুর বাসস্ট্যান্ডে সংঘটিত হল বিশাল জনসভা। সিআইটিইউ, সারা ভারত কৃষক সভা, সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়ন এবং ১২ ই জুলাই কমিটির ডাকে সে জনসভায় বক্তব্য রাখেন শতরূপ ঘোষ। সভাপতিত্ব করেন প্রদীপ রায়।
শতরূপ ঘোষ তার বক্তব্যে বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার দেশের মানুষকে ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ করে দিয়ে সমস্ত সমস্যা থেকে দৃষ্টিভঙ্গি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে চাইছে। তিনি বলেন, ২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল রাম মন্দির গড়তে হবে। সুপ্রিম কোর্টের সেই নির্দেশ মেনে রাম মন্দির তৈরি করে হয়েছে। কিন্তু ২০১৬ সালের সেই সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল সম কাজে সমবেতন চালু করতে হবে। কিন্তু আজ অব্দি তা চালু করা হয়নি। কম বেতনে বিভিন্ন জায়গায় চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের বেগাড় খাটানো হচ্ছে। কোথাও কোন স্থায়ী কর্মী নাই। চাকরি নেই ঘরে ঘরে। বেকারত্বের জ্বালা নিয়ে ছেলেমেয়েরা বসে আছে রাস্তায়। ব্যাংক বীমা রেলসহ সৈন্যবাহিনীতেও এখন স্থায়ী কোন চাকরি নেই। রাজ্য সরকারের সমালোচনা করতে তিনি বলেন, এখানেও একই চিত্র। পুলিশ ,স্কুল, পঞ্চায়েত, পৌরসভা সর্বত্রই কোথাও স্থায়ী চাকরি নেই। বি এ, এম এ পাস করার পরেও মিলছে না কোন চাকরি। চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগের মাধ্যমে তাদের শোষণ করা হচ্ছে। কত ঘন্টা কাজ করা হবে তার ঠিক নেই। চিকিৎসার কোন সুযোগ নেই। তিনি বলেন বামপন্থীরা সুযোগ পেলে সমকাজে সমবেতন চালু করবে। রক্ত শোষণ করা যাবেনা। বেসরকারি ক্ষেত্রেও এই শোষণ বন্ধ করা হবে। বলা হয় বাসুদেব আচারিয়ারা যখন লোকসভায় ছিলেন তখন ইউপিএ ওয়ান সরকার গঠন করা হয়েছিল। মন্ত্রিত্বে না গিয়ে বামপন্থীদের দাবি ছিল ১০০ দিনের কাজ চালু করতে হবে। বাধ্য হয়েছিল বামপন্থীদের চাপে ১০০ দিনের কাজ চালু করতে। এখন সেই ১০০ দিনের কাজ বন্ধ হয়ে আছে। শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে দুই সরকারের চলছে টানা পোড়েন। বামপন্থীদের দাবি একশো দিনের কাজ নয় ২০০ দিনের কাজ চালু করতে হবে। তিনি বলেন, যেভাবে আদিবাসীদের অধিকার সুরক্ষিত করা হয়েছিল এই সরকারের আমলে সে অধিকারও আর সুরক্ষিত নয়। স্থায়ী চাকরি দিত গেলে সেখানে জাতিগত সংরক্ষণ রাখতে হবে। কিন্তু ঘোরা পথে চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী নিয়োগ করে সংরক্ষণ ব্যবস্থাটাকেই তুলে দিতে চাইছে। নষ্ট হচ্ছে সামাজিক বৈষম্য। কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারের বৈষম্যমূলক নীতি, জনবিরোধী নীতি সীমাহীন দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে সাধারণ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। পথে নেমে সে ধর্মঘটকে সফল করার আহ্বান জানানো হয় জনসভা থেকে।
General Strike
ধর্মঘটের সমর্থনে রঘুনাথপুরে জনসভা

×
Comments :0