হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের কালিতলা গ্রাম পঞ্চায়েত। পঞ্চায়েতের সীমাহীন আর্থিক দুর্নীতিতে সরব হতে শুরু করেছেন মানুষ। তৃণমূলের প্রধান এবং তাঁর স্বামী, যিনি পঞ্চায়েতের সদস্যও, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মতো নানা প্রকল্পের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ দু’জনের বিরুদ্ধেই। কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশিত হয়েছে গণশক্তি পত্রিকায়। খবর প্রকাশিত হতেই সিপিআই(এম)’কে দেখে নেওয়ার হুমকি দিতে থাকে প্রধানের স্বামী পঞ্চায়েত সদস্য শ্যামল মণ্ডল। সেই হুমকি উড়িয়ে সন্ত্রাস কবলিত কালিতলা গ্রাম পঞ্চায়েতে পদযাত্রায় অংশ নেন গরিব কৃষক, খেতমজুর, মৎসজীবী, বঞ্চিত গ্রামীণ শ্রমজীবী মানুষ। অন্যদিকে সন্ত্রাস কবলিত হাড়োয়াতেও পদযাত্রা হয়। সূচনা করেন সিপিআই(এম) নেতা সায়নদীপ মিত্র।
সুন্দরবন ঘেষা চিংড়েখালি নদীর পাড়ে বক্তব্য রাখেন সিপিআই(এম) হিঙ্গলগঞ্জ দক্ষিণ এরিয়া কমিটির সম্পাদক রবি বিশ্বাস। ‘জবকার্ডের টাকা কোথায় গেল, তৃণমূল জবাবে দাও’- স্লোগান তুলে শুরু হয় পদযাত্রা।
এই পঞ্চায়েতের অধিকাংশ গরীব মৎসজীবি ও অন্যান্য অংশের মানুষের বাস। এক ফসলির দেশ। পঞ্চায়েতের প্রধান এবং তার পঞ্চায়েত সদস্য স্বামীর আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে ওঠার কাহিনী নিয়েই স্লোগান পদযাত্রায়। ২০১৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকল্প বাবদ সাড়ে ৪ কোটি টাকা কাজ না করেই তুলে নেওয়া হয়েছে।
পদযাত্রা থেকে সেই সমস্যা বেআইনি লুটের টাকা ফেরত চেয়ে সোচ্চার হয়। সম্প্রতি পঞ্চায়েত সদস্য এই শ্যামল মণ্ডল এবং প্রধান দীপ্তি মণ্ডলের বিরুদ্ধে উঠতে শুরু করেছে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার লক্ষ লক্ষ টাকার দুর্নীতির। কালিতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের অধিকাংশ দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ। তাঁরা ঘর পেলেন না, তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও। টাকার বিনিময়ে ঘর পেলেন ২৪৪ নম্বর বুথে ১৩ জন, ২৪৬ নম্বর বুথে ৭ জন, ২৪৭ নম্বর বুথে ৫ জন, ২৪৮ নম্বর বুথে ৮ জন, ২৫১ নম্বর বুথে ১৮ জন এবং ২৫২ নম্বর বুথে ২৪ জন। ‘আমাদের হকের ঘর ফিরিয়ে দাও’, দাবি উঠল পারঘুমটি, দক্ষিণ কালিতলা বনবিবিতলা, হরিদাসকাটি ছাড়িয়ে সামসেরনগর লাগোয়া পূর্ব ও পশ্চিম কালিতলা সহ সর্বত্র।
মুড়ির সঙ্গে জিলিপি খেয়ে ৪-৫ কিলোমিটার পথ হেঁটে দৃপ্ত পদযাত্রা এসে শেষ হয় গোবিন্দকাটি বাজারে।পদযাত্রায় পা মেলান হিঙ্গলগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি তপন মণ্ডল, নিশিকান্ত মণ্ডল, মৎসজীবী সমিতির নেতা আবুল গাজি, প্রবীর মণ্ডল প্রমূখ।
এদিন হাড়োয়ার কলুপুকুর থেকে প্রায় চার শতাধিক মানুষের পদযাত্রা শুরু হয় গ্রাম বাঁচাও চোর তাড়াও স্লোগান তুলে। ২০১৩সালের পর এই এলাকায় সিপিআই(এম)'র কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে দিত না তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতিরা। অতীতের সমস্তরকম ভয়ভীতি হুমকি উপেক্ষা শীরদাঁড়া সোজা রেখে পদযাত্রায় অংশ নেয় কৃষক খেতমজুর গ্রামীণ শ্রমজীবীরা। ছাত্র যুবরাও এই পদযাত্রায় অংশ নেয়।৬-৭ কিমি পথ অতিক্রম করে পদযাত্রা এসে শেষ হয় শালিপুর বাজারে।সেখানে সভায় বক্তব্য রাখেন সিপিআই(এম) নেতা সায়নদীপ মিত্র, শানু রায়, কিশোর গাঙ্গুলি প্রমূখ।
Comments :0