Tea Gardens workers

ধর্মঘটে শামিল হলেন বানারহাট ব্লকের চা শ্রমিকরা

রাজ্য জেলা

কেন্দ্রীয় সরকারের অধিগৃহীত এন্ড্রু ইওল কোম্পানি পরিচালিত ডুয়ার্সের চা বাগানের শ্রমিকদের  বাৎসরিক ছুটির টাকা না পেয়ে বাগান কারখানার সামনে বিক্ষোভ দেখালেন শ্রমিকরা। কাজে যোগ না দিয়ে সকাল থেকে ধর্মঘট পালন করলেন বানারহাট ব্লকের চার টি বাগানের শ্রমিকরা। কারবালা, নিউ ডুয়ার্স, চুনাভাটি এবং বানারহাট চা বাগানের শ্রমিকরা সকাল থেকেই ধর্মঘটের শামিল হন। 
ডুয়ার্সের বানারহাট ব্লকের বানারহাট চা বাগানের সামনে এদিন সকাল থেকেই বাগান শ্রমিকরা জমায়েত হন। সমস্ত চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্ব বাগান শ্রমিকদের সাথে বৈঠক করেন। তারপরেই বাগানের কাজকর্ম বন্ধ করে ধর্মঘটে শামিল হন তাঁরা। বর্তমানে বানারহাট বাগানে শ্রমিক সংখ্যা প্রায় ১৪০০ জন। বাগান কর্তৃপক্ষ প্রতিবছর বাৎসরিক ছুটির পাশাপাশি তাদেরকে ছুটি বাবদ তিন হাজার করে টাকা প্রদান করে থাকেন। তবে এবছর সেই বাৎসরিক ছুটির টাকা প্রদান করা হয়নি বলেই অভিযোগ। টাকা না দিয়েই জানুয়ারি মাসে ১৫ দিন ছুটিতে বসানো শ্রমিকদের এই আশ্বাস দিয়ে, হোলির আগে তাদের টাকা দিয়ে দেওয়া হবে। অথচ মার্চ মাসে পড়ে গেল সেই টাকা প্রদান করা হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে এদিন বাগানের শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে ধর্মঘটে শামিল হন। সকালবেলা প্রথম বানারহাট বাগানের শ্রমিকরা ধর্মঘটে শুরু করেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়তে এন্ড্রু উইল কোম্পানির বাকি বাগানগুলিতেও শ্রমিকরা ধর্মঘট শুরু করেন। বানারহাট হাট চা বাগানের পাশাপাশি নিউ ডুয়ার্স, কারবালা, চুনাভাটি চা বাগানেও ধর্মঘট পালিত হয়।
নিউডুয়ার্স চা বাগানের শ্রমিক করিশমা ওরাও বলেন, ‘‘আমাদের সাত সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে। তার উপরে আমাদের বার্ষিক ছুটির যে টাকা সেটাও দিচ্ছে না বাগান কর্তৃপক্ষ। তাই আজকে আমরা স্ট্রাইক করেছি। আমাদের টাকা যদি হোলির আগে দেওয়া না হয় তাহলে আবারো স্ট্রাইকে যাব।’’ 
চা বাগান শ্রমিক রুমা মিনজ বলেন,‘‘যদি আমাদের দাবি মত আমাদের বকেয়া টাকা প্রদান করা না হয় তাহলে এই ধর্মঘট আরও দীর্ঘতর হবে।আমাদের সঙ্গে বাগান কর্তৃপক্ষ প্রতারণা করছে।’’
চা বাগান মজদুর ইউনিয়নের রিজিওনাল সভাপতি অজয় মাহালী বলেন,‘‘আজকের শ্রমিকরা ছুটির টাকা না পেয়ে স্ট্রাইকে যেতে বাধ্য হয়েছেন। বানারহাট চা বাগানে ১৪০০ শ্রমিক রয়েছে চার টি বাগান মিলিয়ে প্রায় ৪ হাজার শ্রমিক। প্রত্যেক শ্রমিককে তিন হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা। প্রতিবছর এই টাকাটা পেয়ে থাকেন সকলে। কিন্তু এখনো দেয়নি। এর আগে দেবে বলেছিল। তাই বাধ্য হয়ে বুধবার গেট মিটিং করে ধর্মঘটে শামিল হয়েছি আমরাও। এন্ড্রুয়েল কোম্পানির অধীনস্থ বাগান গুলিতে এই সমস্যা।’’
এদিন ধর্মঘট শুরুর আগে বাগান ম্যানেজারের কাছে জানতে চান  শ্রমিকরা কবে টাকা মিলবে। ম্যানেজার সদুত্তর দিতে না পারার পরেই কাজ বন্ধ করে শ্রমিকরা গেটে বসে থেকে বিকাল চারটায়  ঘরে ফিরে যান।
যদিও বাগানের এই সমস্যা নিয়ে বাগান কর্তৃপক্ষের তরফে কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা সংবাদমাধ্যমের সাথে কথা বলেননি। 

Comments :0

Login to leave a comment