12th July Committee

উত্তরবঙ্গ জুড়ে ব্যারিকেড ভেঙে বিক্ষোভ শিক্ষক-কর্মচারীদের

জেলা

12th July Committee


আদালত বলেছে ডিএ কর্মচারীদের অধিকার। তবু মেটায়নি তৃণমূল সরকার। উলটে বিধানসভায় বাজেট ভাষণের সময় নাটক করেছে। রাজনৈতিক অসততার মুখোশ খুলে দিয়ে রাজ্যজুড়ে শুক্রবার বিক্ষোভে নেমেছেন শিক্ষক-কর্মচারী-পেনশন প্রাপকরা। উত্তরবঙ্গের জেলায় জেলায় হয়েছে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ সমাবেশ। 


এদিন পুলিশের বাধা ভেঙেই মিছিল করতে হয়েছে সরকারেরই কর্মচারী, শিক্ষকদের। ধিক্কারের ভাষা তীব্র হয়েছে। ‘১২ই জুলাই কমিটি’র ডাকে কর্মচারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন শ্রমিকরা, সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষ। নেতৃবৃন্দ বলেছেন, কেন্দ্র আর রাজ্য সরকারের মনোভাবে কোনও ফারাক নেই। জনতার অর্জিত অধিকার কেড়ে নিচ্ছে দুই সরকারই। প্রতিরোধ চলবে।
কেবল বকেয়া ৩৫ শতাংশ মহার্ঘভাতাই নয়, কর্মচারী-শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারী সমস্ত শূন্যপদে‌ স্থায়ী নিয়োগের দাবিতেও সরব হয়েছেন। অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ীকরণ, বেসরকারিকরণ বন্ধের মতো ২৭ দফা দাবিতে স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচি নেওয়া হয়।  জেলা শাসকদের দপ্তরে রাজ্যপালের উদ্দেশ্যে জানানো দাবির স্মারকলিপি দেওয়া হয়।


 

শুক্রবার কাঞ্চনজঙ্ঘা ক্রীড়াঙ্গনের ছোট হলঘরের সামনে বেলা দুপুরে কয়েকশো সরকারি কর্মচারী শামিল হন বিক্ষোভে। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দাবি নিয়ে স্মারকলিপি দেন শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদে এডিআরএম'র হাতে। বক্তব্য রাখেন ‘১২ই জুলাই কমিটি’র যুগ্ম আহ্বায়ক পার্থপ্রতীম ভৌমিক সহ নেতৃবৃন্দ। লিটন পান্ডে বলেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে নীতিগত কোন ফারাক নেই। এই দুটি সরকারই শ্রমিক-কর্মচারী স্বার্থ বিরোধী নীতি নিয়ে চলেছে। জনতাকে কোণঠাসা করে দিচ্ছে। 
‘১২ই জুলাই’ মাল মহকুমা কমিটির তরফ থেকে মাল সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের অফিস প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ সংগঠিত হয়। বিরাট সংখ্যক কর্মচারী ও শিক্ষক শিক্ষার কার উপস্থিতিতে এই বিক্ষোভ এক নতুন মাত্রা পায়। মাল মহকুমার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা উপস্থিত হন। 


মাল পরিমল মিত্র স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ে ওয়েস্ট বেঙ্গল কলেজ ও ইউনিভার্সিটি টিচার্স, ইউনিয়নের কলেজ ইউনিটের তরফ থেকে বাজেটে মাত্র ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে সভা হয়। বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক শেষাদ্রি বসু ও অধ্যাপক স্বপন ভৌমিক। অবিলম্বে বকেয়া সহ ৩৮ শতাংশ ডিএ’র দাবি জানানো হয়।
জলপাইগুড়িতে জেলা শাসকের দপ্তরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ হয়। কর্মচারী ভবনের সামনে থেকে সুবিশাল মিছিল কোতয়ালি থানা মোড় হয়ে জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে পৌঁছায়। পুলিশ মিছিলকে আটকানোর চেষ্টা করে। কর্মচারীরা ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশি বাধা অতিক্রম করে জেলাশাসকের দপ্তরে যান। 


কোচবিহারেও বাধা দেয় পুলিশ। জেলা শাসকের দপ্তরে ডেপুটেশন দিতে পুলিশ বাধার প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন কর্মচারীরা। অবশেষে ১২ই জুলাই কমিটির প্রতিনিধি দলকে দপ্তরে ঢুকতে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ। বিক্ষোভ সভায় বক্তব্য রাখেন ১২ই জুলাই কমিটি কোচবিহার জেলা অন্যতম যুগ্ম আহ্বায়ক দেবাশিস রায়, শ্রমিক নেতা তারিণী রায় প্রমুখ। 
আলিপুরদুয়ারেও শ্রমিক, কর্মচারী, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী সহ পেনশনার্সরা মিছিল করেন। কর্মচারী ভবন একটি মিছিল বিএফ রোড ধরে জেলা শাসকের দপ্তর প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ দেখায়। অবস্থান বিক্ষোভে প্রস্তাব পেশ করেন ‘১২ জুলাই’ কমিটির আহ্বায়ক কমলাক্ষ চন্দ। স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয় মহকুমা শাসককে। 

 


মালদহ শহরে পুরাতন হাসপাতালের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ সভা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন শংকর সেনগুপ্ত। ২৭ দাবি সভায় পাঠ করেন কর্মচারী আন্দোলনের প্রবীণ নেতা দীপক পাল মজুমদার। প্রতিনিধি দল গিয়ে জেলা শাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন।
 

Comments :0

Login to leave a comment