AMUL vs NANDINI

এক দুধ, এক ‘আমুল’, এক গুজরাট
ভোটের মুখে শোরগোল কর্ণাটকে

জাতীয়

AMUL vs NANDINI

পা রাখার সঙ্গেই কর্ণাটকে শোরগোল ফেলল ‘আমুল’। কর্ণাটকের নিজস্ব ‘নন্দিনী’-কে বিক্রি করা হচ্ছে গুজরাটের ‘আমুল’-র কাছে, এই মর্মে অভিযোগে সরব বিরোধী কংগ্রেস এবং জনতা দল (এস)। 

কর্ণাটক সরকারের দুগ্ধ সমবায়ের বিভিন্ন পণ্য বিক্রি হয় ‘নন্দিনী’ নামে। রাজ্যে এই ব্র্যান্ড যথেষ্ট জনপ্রিয়। গুজরাটের দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদকদের সমবায় ‘আমুল’, যার বিভিন্ন পণ্য বিক্রি হয় সারা দেশেই। কিন্তু এবার কেবল পণ্য বিক্রিই করবে না ‘আমুল’। সংস্থার বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে তেমনই ইঙ্গিত পেয়েছেন কর্ণাটকের দুধ ব্যবসায়ীরা। তাঁদের আশঙ্কা, সমবায় ব্যবস্থা হাতে তুলে নিতে চাইছে ‘আমুল’। রাজ্যের বিজেপি সরকার সেই ব্যবস্থাই করছে। 

১০ মে নির্বাচন কর্ণাটক বিধানসভার। তার আগে ‘নন্দিনী’ বনাম ‘আমুল’ বিতর্ক দানা বেঁধেছে। দুধ ব্যবসায়ী সমবায়ের প্রসার এবং জনপ্রিয়তার দরুন এই বিতর্ক ঘিরে জনমনে যথেষ্ট আগ্রহও রয়েছে। সোজাসুজি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করেছেন জনতা দল (এস) নেতা এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী। 

টুইটে কুমারস্বামী লিখেছেন, ‘‘এক দেশ, এক আমুল, এক দুধ এবং এক গুজরাটের নীতি প্রয়োগ করা হচ্ছে কর্ণাটকে। আসল উদ্দেশ্য কর্ণাটক মিল্ক ফেডারেশনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা।’’ রাজ্যের বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইকেও সরাসরি আক্রমণ করেছেন কুমারস্বামী। তাঁর অভিযোগ, ‘‘দিল্লিকে খুশি রাখতে রাজ্যের নিজস্ব সমবায়টিকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।’’ 

কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র এবং এআইসিসি’র পক্ষে কর্ণাটকের দায়িত্বপ্রাপ্ত রণদীপ সিং সুরযেওয়ালাও তীক্ষ্ণ আক্রমণ করেছেন কেন্দ্র এবং রাজ্যের দুই সরকারকে। তিনি লিখেছেন, ‘‘‘কর্ণাটকের নিজস্ব দুগ্ধ সমবায় বিক্রির লক্ষ্য একেবারে পরিষ্কার। অমিত শাহ নিজেই রাজ্যে এসে তা স্পষ্ট করেছিলেন। বোম্মাই নীরব দর্শকের মতে কেবল দেখে যাচ্ছেন। ‘নন্দিনী’ বাঁচান, বিজেপি’কে ভোটে হারান।’’ 

গত ডিসেম্বরে কর্ণাটক মিল্ক ফেডারেশনের ২৬০ কোটি টাকার দুধ প্রক্রিয়াকরণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। বলেছিলেন ‘নন্দিনী’-র উচিত ‘আমুল’-র সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করা। এই বক্তব্যই এখন ঘুরছে মুখে মুখে। 

গুজরাটের দখলদারি নিয়ে সন্দেহের আরেক কারণ খাদ্যের গুনমাণ নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান এফএসএসএআই’র সাম্প্রতিক নির্দেশিকা। ‘ফুড সেফটি অ্যান্ড স্টান্ডার্ড অথরিটি অব ইন্ডিয়া’, সংক্ষেপে এফএসএসএআই, সম্প্রতি নির্দেশিকা জারি করে যে দইয়ের প্যাকেটে স্থানীয় নাম লেখা যাবে না। থাকবে হিন্দি প্রতিশব্দ ‘দহি’। 

দুধ এবং দুধজাত উৎপাদক ও ব্যবসায়ীরা তীব্র আপত্তি তোলায় নির্দেশিকা বাতিল করতে হয়েছে কেন্দ্রীয় এই প্রতিষ্ঠানকে। তবে সুরযেওয়ালা বলেছেন, ‘‘ওই নির্দেশিকা আসলে কর্ণাটকের নিজস্ব সমবায়ের তৈরি পণ্য বিক্রির জন্যই জারি হয়েছিল। এখন সরাসরি আমুল-কে নিয়ে আসা হলো।’’ 

বিরোধীদের বক্তব্যে যদিও আপত্তি তুলেছেন বোম্মাই নিজে। তিনি বলেছেন, ‘‘কর্ণাটকের বাইরেও বিক্রি হচ্ছে ‘নন্দিনী’-র পণ্য। ‘আমুল’-কে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমরা কড়া লড়াই দিতে তৈরি।’’ 

তবে ‘বেচে দেওয়ার’ অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসেও থেমে যাচ্ছে না কর্ণাটকে।   

Comments :0

Login to leave a comment