রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের দুর্নীতির তদন্তে আদৌ আগ্রহী নয় দিল্লির বিজেপি সরকার। বাংলায় বামপন্থীদের আটকে রাখার চেষ্টায় বরং তৃণমূলের পাশে দাঁড়াতে চায়। যেমন ত্রিপুরায় ভোট ভাগ করে বিজেপি’কে সুবিধা দেওয়ার জন্য তৃণমূল ভূমিকা নেয়। বিরোধিতার নামে এ রাজ্যে নাটক করছে বিজেপি।
মঙ্গলবার জলপাইগুড়িতে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে এভাবেই সরব হয়েছেন সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘চিটফান্ডের মামলা বিজেপি করেনি,আমরাই করেছিলাম। কারও শাস্তি হয়নি কেন। সারদায় সবচেয়ে বড় বেনিফিশিয়ারির নাম মমতা ব্যানার্জি, কুনাল ঘোষই বলেছিলেন। নারদে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে সরাসরি। শাস্তি হয়নি কেন?’’
এই প্রসঙ্গে তৃণমূল থেকে বিজেপি’তে যোগ দেওয়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের উদাহরণও দেন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের নেতা বলেই এখন বিজেপি’র নেতা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধেও দুর্নীতির বহু অভিযোগ। বিজেপি’তে এমন অনেকেই রয়েছেন, কারও নাম শুভেন্দু অধিকারী, কারও নাম নিশীথ প্রামাণিক।’’
রাজ্যের সর্বত্র আবাস যোজনায় কারচুপির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে। তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকা লুট হয়েছে কেবল আবাস যোজনায়। যে কোনও ভাবে পছন্দের লোকেদের ঘর দেখিয়ে টাকা নেওয়া হয়েছে। জনরোষে এখন তৃণমূলকে পালাতে হচ্ছে, পদত্যাগ করতে হচ্ছে। প্রশ্ন হলো এই কারচুপির তালিকা তৈরি করেছে কে? কোন বিডিও, কোন পঞ্চায়েত প্রধান, জানাতে হবে। তাঁদের শাস্তি হবে না কেন?’’
তৃণমূলের দুর্নীতিরাজের কড়া সমালোচনায় চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘কোথায় দুর্নীতি হয়নি। আবাস থেকে একশো দিনের কাজ, স্কুলে নিয়োগ- সর্বত্র টাকার খেলা। এ রাজ্যে গত এগারো বছরে নিয়োগ প্রায় হয়নি। যেটুকু হয়েছে তার আশি ভাগ টাকার বিনিময়ে।’’ তিনি বলেছেন, ‘‘বামপন্থীদের সমালোচক এমন শিক্ষকদেরও বলতে শোনা যাচ্ছে যে তাঁরা বামফ্রন্টের সময়ে নিযুক্ত হয়েছেন। এভাবেই বোঝাতে হচ্ছে যে তাঁরা টাকা দিয়ে শিক্ষকের চাকরি পাননি।’’
তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের নির্দেশ প্রসঙ্গে চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘আসলে জেলেই থাকতে হবে অনুব্রত মন্ডলকে। তৃণমূল কংগ্রেস এবং দলের নেত্রীর বাঁচার বন্দোবস্ত করার জন্য পুলিশ দাসের মতো কাজ করেছে। বারো ঘন্টার মধ্যে অভিযোগ দায়ের হলো, আদালতে তুলে নিজেদের হেপাজতে অনুব্রতকে নিল পুলিশ। অথচ ঘটনাস্থলে গেল না, কোনও তদন্ত হলো না। পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়া দরকার। আসলে চেষ্টা হচ্ছে যাতে দিল্লিতে অনুব্রত গিয়ে বলে না দেন যে টাকার বখরা কোন নেতানেত্রীদের কাছে পৌঁছেছিল।’’
Comments :0